বুধবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

আত্মস্বীকৃত সেই ১০১ ইয়াবা কারবারির বিরুদ্ধে চার্জশিট

কক্সবাজার প্রতিনিধি

আত্মস্বীকৃত সেই ১০১ ইয়াবা কারবারির বিরুদ্ধে চার্জশিট

গত বছর ১৬ ফেব্রুয়ারি টেকনাফে আত্মসমর্পণকারী ১০১ আত্মস্বীকৃত ইয়াবা পাচারকারীর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দিয়েছে পুলিশ। সোমবার টেকনাফ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এ বি এম এস দোহা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (টেকনাফ) তামান্না ফারাহ্্র আদালতে দুটি অভিযোগপত্র দাখিল করেন। দুটি অভিযোগপত্রেই সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির চার ভাইসহ একাধিক নিকটাত্মীয় এবং টেকনাফের সাত জনপ্রতিনিধির নাম রয়েছে।

আত্মসমর্পণকারী ১০২ জনের মধ্যে এর আগে কক্সবাজার কারাগারে এক আসামি মৃত্যুবরণ করেন। গত বছর ৭ আগস্ট কক্সবাজার কারাগারে মারা যান আত্মসমর্পণকারী টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের মুন্ডারডেইল এলাকার মো. রাসেল (২৮)। মৃত্যুজনিত কারণে তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়ে ১০১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা।

কক্সবাজার কোর্টপুলিশের পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) প্রদীপ কুমার দাশ অভিযোগপত্র দাখিলের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেছেন, মামলা দুটি বিচারের জন্য অভিযোগপত্রসহ যাবতীয় নথি চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

এদিকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা টেকনাফ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এ বি  এম এস দোহা জানান, আত্মসমর্পণের সময় ১০২ ইয়াবা কারবারির কাছ থেকে সাড়ে ৩ লাখ ইয়াবা ও ৩০টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছিল। তিনি জানান, ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩৬/১(১০) ধারায় পরস্পর যোগসাজশ করে নিজ নিজ দায়িত্বে অবৈধভাবে ইয়াবা এবং অস্ত্র আইনে একইভাবে অস্ত্র রাখার অভিযোগ আনা হয়েছে আসামিদের বিরুদ্ধে।

উল্লেখ্য, গত বছর ১৬ ফেব্রুয়ারি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, স্থানীয় সংসদ সদস্য শাহীন আক্তার, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি) ড. জাবেদ আহমেদ পাটোয়ারীসহ বিপুলসংখ্যক জনপ্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের উপস্থিতিতে টেকনাফ পাইলট হাই স্কুল মাঠে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করেন তালিকাভুক্ত ১০২ জন ইয়াবা পাচারকারী। এ সময় ইয়াবা পাচারে নিজেদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করার পাশাপাশি বিপুলসংখ্যক ইয়াবা এবং অবৈধ অস্ত্রও জমা দেন তারা। আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানের পর হাজির করা হলে আদালত তাদের কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেয়। এর পর থেকে কারাগারে রয়েছেন তারা।

এদিকে ওই দিনই টেকনাফ থানার পরিদর্শক (অপারেশন) শরীফ ইবনে আলম বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় আত্মসমর্পণকারী ১০২ ইয়াবা পাচারকারীর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ও অস্ত্র আইনে পৃথক দুটি মামলা করেন। মামলা দুটির তদন্ত শেষে সোমবার আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর এ বি এম এস দোহা।

যাদের বিরুদ্ধে দুই মামলায় অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়েছে তারা হলেন, সাবেক এমপি আবদুর রহমান বদির চার ভাই আবদুস শুক্কুর, আমিনুর রহমান, মো. ফয়সাল রহমান ও শফিকুল ইসলাম। রয়েছেন বদির ভাগ্নে সাহেদ রহমান নিপু, ফুফাতো ভাই কামরুল হাসান রাসেল, খালাতো ভাই (বদির সৎমা একজন রাখাইন নারী সেই সূত্রে)  মংমং সেন এবং বেয়াই শাহেদ কামাল। জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে রয়েছেন টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য জামাল হোসেন এবং নুরুল হুদা, সাবরাং ইউপি সদস্য শামশুল আলম, মোয়াজ্জেম হোসেন দানু, রেজাউল করিম রেজু, টেকনাফ সদর ইউপি সদস্য এনামুল হক, টেকনাফ  পৌরসভার কাউন্সিলর নুরুল বশর প্রকাশ নুরশাদ। পাশাপাশি এই তালিকায় প্রভাবশালীদের মধ্যে টেকনাফ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জাফর আহমদের ছেলে দিদার মিয়াও রয়েছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর