রবিবার, ২৬ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

ভোট উত্তাপে কাউন্সিলর প্রার্থীরা

অভিযোগের শেষ নেই, ১০৩টির অধিকাংশই কাউন্সিলর প্রার্থীর বিরুদ্ধে

গোলাম রাব্বানী

ভোট উত্তাপে কাউন্সিলর প্রার্থীরা

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে উত্তাপ ছাড়াচ্ছেন কাউন্সিলর প্রার্থীরা। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থীরা দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারাও এ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। উভয় সিটি করপোরেশনে প্রতিদ্বন্দ্বী কাউন্সিলর প্রার্থীদের ১০৩টি অভিযোগ পেয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা। পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা, প্রচারে বাধা, অতিরিক্ত নির্বাচনী ক্যাম্প স্থাপন, মাইক ভাঙচুর ও হামলার ঘটনায় এসব অভিযোগ এসেছে। তবে মেয়র প্রার্থীদের অভিযোগ এসেছে শুধু বিএনপি প্রার্থীর পক্ষ থেকে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ প্রার্থীর কোনো অভিযোগ নেই। তবে উত্তর-দক্ষিণে তাদের বিরুদ্ধে একডজন অভিযোগ পড়েছে। অনেকগুলো ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির একাধিক প্রার্থী থাকায় তারা ভোটের প্রচারে বাড়তি উত্তেজনা এনেছেন। এ ছাড়া যেসব ওয়ার্ডে প্রার্থী বেশি, তাদের নিয়ে ইসি বেশি সতর্ক। এবার ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সাধারণ ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর মিলিয়ে ১৬৯টি পদের জন্য লড়ছেন ৭৪৫ জন, যাদের মধ্যে দুই দলের বিদ্রোহী ছাড়াও অন্যান্য দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা রয়েছেন। জানা গেছে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের অন্তত ২২টি ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ এবং ১৭টি ওয়ার্ডে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন। আর ঢাকা দক্ষিণে ৩৫টি ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের এবং ১৩টি ওয়ার্ডে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন। মূলত এসব প্রার্থী পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করছেন একে অপরের বিরুদ্ধে। ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, এবার দুই সিটি করপোরেশনের ৫৯টি ওয়ার্ডে পাঁচ থেকে ১০ জন পর্যন্ত প্রার্থী কাউন্সিলর পদে ভোট করছেন। এদের মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের যেমন বিদ্রোহী আছেন, তেমনি বিএনপিরও বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন। ঢাকা উত্তর সিটির ৫৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৯টিতে পাঁচ থেকে নয়জন করে প্রার্থী ভোট করছেন। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৭৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৩০টিতে পাঁচ থেকে ১০ জন পর্যন্ত প্রার্থী রয়েছেন। নির্বাচন কর্মকর্তারা বলছেন, আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ এলে নির্বাহী হাকিম ঘটনাস্থলেই ব্যবস্থা নিচ্ছেন। কোনো কোনো অভিযোগ খতিয়ে দেখে সতর্ক করা হচ্ছে। তবে ফৌজদারি অপরাধ থাকলে তা আমলে নেওয়া যায় না। সে ক্ষেত্রে পুলিশের কাছে অভিযোগগুলো পাঠানো হয়। ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হবে।

উত্তরে ৩৩টি অভিযোগ : ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কাউন্সিলর ও মেয়র প্রার্থীদের বিরুদ্ধে মাত্র ৩৩টি অভিযোগ জমা পড়েছে। এ বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা ইসির যুগ্মসচিব আবুল কাসেম জানান, যখনই কোনো অভিযোগ লিখিতভাবে আসছে তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পরিবেশ ‘ভালো’ থাকায় উল্লেখযোগ্য তেমন আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ আসছে না। তিনি বলেন, প্রচারণা শুরুর আগেই আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়ে কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়েছিল। প্রচার শুরুর পরের দুটি অভিযোগ এলেও  তা খতিয়ে দেখে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি। সর্বশেষ বিএনপি প্রার্থীর প্রচারে হামলার বিষয়ে অভিযোগ পেলেও তা তদন্তে পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেটকে বলা হয়েছে। তাদের প্রতিবেদন কমিশনে পাঠানো হবে। রিটার্নিং কর্মকর্তার স্টাফ অফিসার নির্বাচন কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান জানান, এখন পর্যন্ত ৩৩টি অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে দুজনকে সতর্ক করা হয়েছে; একজনকে জরিমানা করা হয়েছে। তিনি জানান, মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে শুধু তাবিথ আউয়ালের পক্ষে কয়েকটি অভিযোগ এসেছে। অধিকাংশই কাউন্সিলর প্রার্থীদের অভিযোগ। সব অভিযোগ নিষ্পত্তি করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।

দক্ষিণে অন্তত ৭০টি অভিযোগ : ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে এ পর্যন্ত ৭০টি অভিযোগ জমা পড়েছে।  এর মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ আসেনি। কাউন্সিলরদের পক্ষ থেকে এসেছে বেশি। বিএনপি মেয়র প্রার্থীর পক্ষ থেকে অন্তত সাতটি অভিযোগ এসেছে। আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ পেলেই সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করা হচ্ছে বলে জানান রিটার্নিং কর্মকর্তা আবদুল বাতেন। তবে দায়িত্বশীল নির্বাহী হাকিমদের তৎপরতা দেখানোর বিষয়ে বরাবরই জোর দিয়ে আসছেন তিনি। রিটার্নিং কর্মকর্তার স্টাফ অফিসার নির্বাচন কর্মকর্তা মাসুদুল হক জানান, শুক্রবার পর্যন্ত ৭০টি অভিযোগ জমা  পড়েছে। সবগুলো অভিযোগ নিষ্পত্তি করেছেন রিটার্নিং অফিসার।

সর্বশেষ খবর