রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

শামীম-খালেদসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট চূড়ান্ত

মানি লন্ডারিং মামলা

আনিস রহমান

আলোচিত ক্যাসিনোকান্ডের পর গ্রেফতার হওয়া ঠিকাদার জি কে শামীম, যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং মামলায় চার্জশিট চূড়ান্ত করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি। দুই-একদিনের মধ্যে সিআইডি তা আদালতে জমা দেবে বলে সংস্থাটির একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

চার্জশিটভুক্ত অন্য আসামিরা হলেন- ক্যাসিনো হোতা সূত্রাপুরের দুই ভাই এনামুল হক ওরফে এনু ভূঁইয়া ও রূপন ভূঁইয়া, অনলাইন ক্যাসিনো ব্যবসায়ী সেলিম প্রধান, মোহাম্মদপুরের সাবেক কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান মিজান ওরফে পাগলা মিজানসহ আরও দুজন।

সিআইডির উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) ইমতিয়াজ আহমেদ জানান, চূড়ান্ত চার্জশিট আদালতে জমা দেওয়ার আগে এখন যাচাই-বাছাই চলছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে চার্জশিট আদালতে জমা দেওয়া হবে। একই সঙ্গে এই মামলাগুলো তদন্ত করতে গিয়ে মানি লন্ডারিং মামলার আরও যে তথ্য-উপাত্ত সিআইডির হাতে এসেছে প্রয়োজনে সেগুলো নিয়ে নতুন মামলা রুজুর প্রস্তুতিও সিআইডির রয়েছে।

তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মানি লন্ডারিং মামলার আসামি খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে গ্রেফতারের সময় জব্দ করা সম্পদের মধ্যে ছিল সাড়ে ১০ লাখ টাকা, সাত লাখ ৬৪ হাজার  টাকা মূল্যের বৈদেশিক মুদ্রা। মামলার পর সিআইডি তদন্ত করে তার নামে বিভিন্ন ব্যাংকে ৫২টি হিসাবে ৪১০ কোটি ৩৯ লাখ ৭১ হাজার টাকা লেনদেনের হদিস পায়। ব্যাংকে স্থিতি রয়েছে ৩৫ কোটি টাকা। একইভাবে জি কে শামীম গ্রেফতারের সময় তার কাছ থেকে জব্দ করা হয় এক কোটি ৮১ লাখ টাকা, ৯ হাজার মার্কিন ডলার, সিঙ্গাপুরের ৭৫০ ডলার ও ১৬৫ কোটি টাকার এফডিআর। পরে সিআইডির তদন্তে তার নামে এফডিআর ও ১৯৪টি অ্যাকাউন্টে ৩২৫ কোটি টাকা জমা থাকার সন্ধান পাওয়া যায়। এখন তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির চূড়ান্ত যাচাই-বাছাই চলছে। ক্যাসিনো হোতা দুই ভাই এনামুল হক এনু ও রূপন ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার দীর্ঘদিন পর সিআইডি দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থেকে তাদের গ্রেফতার করে। এ সময় তাদের দখল থেকে ৭৫০ ভরি সোনা ও নগদ পাঁচ কোটি টাকারও বেশি জব্দ করে। পরে মামলা তদন্ত করতে গিয়ে সিআইডি ১৭টি স্থাপনায় ১২১টি ফ্ল্যাট, পাঁচটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, ৭২ কাঠা জমির ওপর ১২টি প্লটের সন্ধান পায়। অনলাইন ক্যাসিনো ব্যবসায়ী সেলিম প্রধান গ্রেফতারের সময় ২৯ লাখ টাকা মূল্যের ২২টি দেশের মুদ্রা পাওয়া যায়। পরে তদন্তে সিআইডি জানতে পারে সেলিমের নামে থাইল্যান্ডে বিলাসবহুল বাগানবাড়ি, ঢাকায় পাঁচটি অনলাইন জুয়ার প্রতিষ্ঠানসহ স্পা হাউস, ফ্যাশন হাউস, ল’ ফার্মস, ম্যানেজমেন্ট ফার্ম, ফিশিং কোম্পানি, জাপান-বাংলাদেশ সিকিউরিটি প্রিন্টিং অ্যান্ড পেপারস নামে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। ক্যাসিনোকান্ডে  গ্রেফতার হওয়া মোহাম্মদপুর এলাকার সাবেক কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান ওরফে পাগলা মিজানকে গ্রেফতারের সময় সাতটি চেক বই ও ছয়টি এফডিআরের তথ্য পায়। পরে তদন্তে বেরিয়ে আসে মোহাম্মদপুরের বসিলা রোডে একটি মার্কেট, মোহাম্মদপুরে স্বপ্নপুরী হাউজিংয়ে চারটি ফ্ল্যাট, পুরান পল্টনে ৫ তলা বাড়ি, আওরঙ্গজেব রোডে ফ্ল্যাট রয়েছে তার। সূত্র জানায়, ক্যাসিনোকান্ডের পর এখন পর্যন্ত ১৩ জনের অবৈধ সম্পদের হিসাব খুঁজছে সিআইডি। এর মধ্যে ৯ জনের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে মামলা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর