মানুষ এখনো প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের ভয়াবহতা বুঝতে পারছে না বলে মন্তব্য করেছেন অণুজীববিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. বিজন কুমার শীল। তিনি বলেন, স্বাস্থ্যবিধিতে পরিষ্কার বলা আছে, সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে। মাস্ক বাধ্যতামূলক পরতে হবে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলতে হবে। জরুরি কোনো প্রয়োজন ছাড়া বাসা থেকে বেরোনো যাবে না। চোখ-মুখে হাত লাগানো যাবে না। পিপিইটা খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। করোনোর ভয়বহতাটা সবাইকে বুঝতে হবে। ব্যক্তি পর্যায় থেকে সরকার- সবাইকে উপলব্ধি করতে হবে। প্রতিটি নাগরিককে সামাজিক সুরক্ষা মেনে চলতে হবে। নইলে করোনার বিস্তার রোধ ঠেকানো সম্ভব নয়। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে ফোনে আলাপচারিতায় এসব কথা বলেন গণবিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালের প্রধান বিজ্ঞানী ড. বিজন কুমার শীল। তিনি বলেন, প্রতিটি ভাইরাসের একটি ন্যাচারাল কোষ আছে। প্রথমে একটু বাড়বে, তারপর পিক লেভেলে যাবে। এরপর একটি নির্ধারিত স্থানে গিয়ে শেষ হয়ে যাবে। তবে বাংলাদেশে করোনার সংক্রমণের মাত্রা এখনো ঊর্ধŸমুখী। গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালের এই প্রধান বিজ্ঞানী বলেন, যখন বিদেশ থেকে লোকজন আসা শুরু করল, তখন যদি ১৪ দিন বা ২১ দিনের কোয়ারেন্টাইনে তাদের রাখতে পারত তাহলে এটা এক মাসের মধ্যেই শেষ হয়ে যেত। বিভিন্ন কারণে তা করা যায়নি। এরপর তারা দেশের বিভিন্ন স্থানে চলে গেল। করোনা বাড়তে শুরু করল। এরপর গার্মেন্ট খুলে দেওয়া হলো। এর পরপরই তা বন্ধ করা হলো। আবার ঈদ চলে এলো। এ জন্য করোনা বিস্তার লাভ করতে শুরু করল। যারা বিমানবন্দরে লোকজনকে থামিয়ে দিতে পেরেছে, তাদের দেশে করোনা তেমন একটা হয়নি। যেমন ভিয়েতনাম, কোরিয়া, তাইওয়ান। তাদের যদি আমরা ফলো করতে পারতাম, তাহলে করোনা দেশেই ঢুকতে পারত না। না পারারও অবশ্য কারণ ছিল। এত লোক কোথায় রাখবে, কোনো পরিকল্পনা ছিল না। ড. বিজন কুমার শীল বলেন, ‘আমি মনে করি টেস্টের পরিমাণ বাড়ানো উচিত। এতে ব্যক্তিকে নির্দিষ্ট করে তাকে আইসোলেশন বা কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো যাবে। এভাবে করতে পারলে করোনা বিস্তার লাভ করবে না। এ জন্য টেস্ট বাড়ানো উচিত।’ করোনা প্রতিরোধে ভ্যাকসিন বা টিকা প্রসঙ্গে বাংলাদেশি এই অণুজীববিজ্ঞানী বলেন, ‘যা শুনছি, ইংল্যান্ড, ব্রাজিল, চীন অনেকেই চেষ্টা করছে। সমস্যা হলো ভাইরাসটি স্থির লেভেলে নেই। ভাইরাসটির গতিপ্রকৃতি পরিবর্তন হচ্ছে। একটা ভাইরাস যদি থাকত, তাহলে তার বিপরীতে একটি ভ্যাকসিন বা টিকা বানানো সহজ হতো। এ নিয়ে বিজ্ঞানীরাও বিপদে আছেন। কিন্তু সবাই চেষ্টায় আছেন। তবে একটা ভালো লক্ষণ, যারা একবার আক্রমণের শিকার হচ্ছেন তারা অন্তত ছয় মাস করোনামুক্ত থাকতে পারবেন। এটা প্লাজমার কারণে হবে বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা।’ এলাকাভিত্তিক লকডাউনের পক্ষে নিজের অবস্থান ব্যক্ত করে গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালের প্রধান এই বিজ্ঞানী বলেন, যে জায়গাগুলোয় আক্রান্তের সংখ্যা বেশি, সেটি ধরেই কাজ করা হচ্ছে। যেমন উত্তরা, গুলশান, বনানী রেড জোন। এখানে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। তাই তাদের আইসোলেশন করে রাখতে পারলে তা আর বিস্তার ঘটাতে পারবে না। এটাই থিওরি। এটা ভালো উদ্যোগ। তবে পুরো দেশ লকডাউন দিলে নানা সমস্যার সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষ কীভাবে বাঁচবে। বাংলাদেশ তো আর কানাডা নয় যে, প্রত্যেকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে মাসে দুই হাজার ডলার সরকার পাঠিয়ে দেবে। ড. বিজন কুমার শীল বলেন, ‘এখনো ইউরোপ, আমেরিকার চেয়ে বাংলাদেশে আক্রমণের সংখ্যা কম। সরকার যা দেখাচ্ছে তার ১০ গুণ দেখানো হলেও তাদের চেয়ে কম হবে। আমি মনে করি, বাংলাদেশের মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি। আমাদের গ্রামের মানুষ যেভাবে কাজ করেন, ভিটামিন ডি গায়ে লাগান, এ জন্য তাদের কর্মক্ষমতা বেড়ে যায়। তবে আমাদের যারা মারা যাচ্ছেন, তাদের বড় অংশই বৃদ্ধ। এ ছাড়া যাদের কর্মক্ষমতা কম, মোটা, শ্বাসকষ্ট, ধূমপানে অভ্যস্ত বা ডায়াবেটিকে আক্রান্ত, তাদের ওপর এ রোগ বেশি বিস্তার লাভ করছে। আমাদের শহুরে জীবন ফার্মের মুরগির মতো। কেউ বের হচ্ছে না। বাসায়ও কাজ করছে না। কাজের বুয়া দিয়ে কাজ করাচ্ছে। যারা সচ্ছল তারা কাজ করছে না। এই অভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে। বাসা থেকে নেমেই রিকশা ডেকে চলে যাওয়া ঠিক নয়। এতে শুধু করোনা নয়, নানা রোগ শরীরে বাসা বাঁধে।
শিরোনাম
- গাজা নগরীতে দুই দিনে দেড় শতাধিক হামলা ইসরায়েলের
- গাজাবাসীকে ফের জোরপূর্বক উচ্ছেদের নিন্দায় পোপ
- স্বর্ণের দাম কমেছে
- ইসরায়েলের ওপর নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাব ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের
- ছাত্র সংসদ আর জাতীয় নির্বাচন এক নয় : টুকু
- যুক্তরাষ্ট্র থেকে অস্ত্র কেনা বন্ধ করলো কলম্বিয়া
- রেমিট্যান্স প্রবাহে ২৮.৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি
- বিশ্ব বাণিজ্যে রূপান্তর ঘটাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা : বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা
- আবারও রিজার্ভ ৩১ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল
- দুর্গাপূজা ঘিরে স্বৈরাচারের অপচেষ্টার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে : তারেক রহমান
- র্যাংকিংয়েও আফগানদের টপকে গেল টাইগাররা
- ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে পাঁচজনের মৃত্যু
- ‘পিআর ইস্যুতে আলোচনার টেবিল রেখে রাজপথে যাওয়া স্ববিরোধিতা’
- শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের কেউ ভোট দিতে পারবেন না
- ভাঙ্গা থানায় ভাঙচুরের ঘটনায় নিক্সন চৌধুরীসহ ২৯ জনের নামে মামলা
- ‘অপারেশন প্যাসিফিক এঞ্জেল ২৫-৩’ এ উড্ডয়ন প্রশিক্ষণ অনুশীলন
- ‘পিআর পদ্ধতির দাবি জনগণের প্রত্যাশার প্রতি মুনাফেকি’
- ফেব্রুয়ারিতেই স্বচ্ছ ও উৎসবমুখর নির্বাচন হবে : প্রধান উপদেষ্টা
- দুর্গাপূজায় কোনো ধরনের হুমকি নেই : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
- হাসিনার আরও দুটি লকার জব্দ