কিছু মানুষের জলেই জন্ম, আবার জলেই মৃত্যু। বেঁচে থাকাকালে জলেই তাদের বসবাস। বেদে সম্প্রদায়ের পরিচয় এমনই। শত শত বছর ধরে প্রচলিত সমাজ ও সভ্যতার প্রতি এক ধরনের উদাসীনতা কাজ করে বেদে সম্প্রদায়ের। বেঁচে থাকা ছাড়া যেন আর কোনো চাহিদাই নেই তাদের। নদীর স্রোত কিংবা বহমান বাতাসের মতো তাদের জীবন-জীবিকা চলে। দেশের অতিপরিচিত প্রান্তিক যাযাবর গোষ্ঠী হচ্ছে বেদে সমাজ। একসময় শুধু জলে বসবাস থাকলেও বর্তমানে ডাঙায়ও তাদের দেখা মেলে। বই-পুস্তক ছাড়াও বেদেদের দেশজুড়ে রয়েছে অনেক নাম। কেউ কেউ বলেন বাদিয়া, বাইদ্যা বা বাইদ্যানী। অনেকে জলের জিপসিও বলে থাকেন এ সম্প্রদায়ের মানুষদের। নদীর বুকে বাহারি ঢঙের ছোট ছোট নৌকায় এলোমেলো ঘোরাফেরা বেদে সমাজের। এমন দৃশ্য চোখে পড়ে ঢাকার উপকণ্ঠের সাভারে বুক চিরে বয়ে যাওয়া বংশী নদীর দুই কূলে। এ নদী তীরের সৌন্দর্যের মাঝেও লুকিয়ে আছে বেদে সমাজের দুর্ভোগের জীবন। অনেকে বলেন বেদেদের জীবন বাহারি ঘটনায় পরিপূর্ণ। এই মানুষগুলোর একটাই পরিচয় কখনো তারা তাবিজ-কবজ বিক্রি করেন, আবার কখনো নাটক ও গান গেয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। কখনো বা সাপের খেলা দেখান। বেদেদের একমাত্র উপার্জনের পথ বলতে তাবিজ-কড়ি বিক্রি ও সাপের খেলা দেখানো। খুবই সামান্য ওদের জীবন-জীবিকা। বেদে পল্লী দেখলে অনেকেই হয়তো বিস্ময় প্রকাশ করবেন। জাদুর শহর ঢাকাতেও এভাবে মানুষ থাকে! সাভারের রেডিও কলোনির কাছেই এই বেদে পল্লী। মূলত এ উপজেলার অমরপুর, পোড়াবাড়ী, কাঞ্চনপুর ও বক্তারপুর এলাকা নিয়ে গঠিত বেদে পল্লী। এই জনগোষ্ঠীর মেয়েরাই সংসারের চালিকাশক্তি। আর সন্তান লালন-পালন করে অলস সময় কাটান অনেক পুরুষ। বর্তমানে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অনেকে পেশা পাল্টাচ্ছেন। হাট-বাজার, গ্রাম-গঞ্জে সাপ খেলা, সাপ ধরা, ঝাড়ফুঁক দেওয়ার মাধ্যমে তারা জীবিকা নির্বাহ করতে শুরু করেন। ঢাকার সাভার ছাড়াও বরিশাল, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, ঝিনাইদহ, ছাতকসহ দেশের অনেক জেলাতে নদীর ঘাটে নৌকায় অথবা পতিত জায়গায় তাঁবু টাঙিয়ে বসবাস করতে দেখা যায় তাদের। সাভার বেদে পল্লীর নেওয়াজ আলী বলেন, আমাদের সমাজের জন্ম-মৃত্যু-বিয়ে এ তিন কাজ জলের ওপর হচ্ছে। একেক দলে ২৫/৩০টি সারিবদ্ধ নৌকায় পরিবার নিয়ে একেক স্থানে ১০-১২ দিন অবস্থান করতাম। এক একটা নৌকায় ৫-৬ জন করে থাকতাম। রান্না-বান্না, খাওয়া-দাওয়া থেকে শুরু করে সব নৌকাতেই হতো। কিন্তু এখন বেশির ভাগ বেদে জল ছেড়ে স্থলে ঠাঁই নিয়েছে। গৃহস্থের কাছ থেকে জমি ক্রয় করে স্থায়ী বসবাস শুরু করেছেন বেদে সম্প্রায়ের লোকজন। এ ছাড়া তাদের ছেলেমেয়েরা লেখাপড়ায় অনেকদূর এগিয়ে গেছে। আমরা জন্মসূত্রে সাপখেলা দেখানোর পেশায় আছি। তবে ২০০০ সালের পর থেকে অন্যান্য পেশার প্রতিও আমাদের সম্প্রদায়ের লোকরা ঝুঁকতে শুরু করেছেন। বেদে পল্লীতে সকাল-সন্ধ্যা সাপের হাট বসে। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত সারি সারি বাক্স নিয়ে বিক্রেতারা সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে সাপ বিক্রি করতেন। উত্তরাঞ্চলের সাঁওতাল ও সাপুড়েরা এখানে পাইকারি মূল্যে সাপ বিক্রি করতে আসতেন। কিন্তু বনবিভাগের নিষেধাজ্ঞার কারণে গত তিন বছর ধরে বিক্রি হচ্ছে লুকিয়ে। এসব সাপের আকার আর জাত হিসেবে দাম নির্ধারণ হয়।
শিরোনাম
- বগুড়ায় ট্রেনে কাটা পড়ে অজ্ঞাত ব্যক্তির মৃত্যু
- জাতীয় নার্সিং কমিশন গঠনের দাবিতে সমাবেশ, সড়ক অবরোধ
- ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে জিততেই হবে : আমীর খসরু
- নাইজেরিয়ায় ক্যাথলিক স্কুলে হামলা, ২১৫ শিক্ষার্থীসহ ২২৭ জনকে অপহরণ
- শান্তি প্রস্তাব মেনে নিতে ইউক্রেনকে সময় বেঁধে দিলেন ট্রাম্প
- মামদানিকে ট্রাম্পের অভিনন্দন, বৈঠককে বললেন ‘দারুণ ও ফলপ্রসূ’
- ফাইনালে পাকিস্তানকে পেল বাংলাদেশ
- ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩০
- বিএনপির রাজনীতিতে সব ধর্মের প্রতি সম্মান আছে : এ্যানী
- আমরা কোন রাজনীতির কথা ভাবছি
- রাজধানীতে বায়তুল মোকাররম মসজিদের সামনে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে আগুন, পুড়ল দোকান
- ঢাকায় ভূমিকম্পে জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্রের সমবেদনা
- ভূমিকম্পে ঢাকায় ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের তালিকা প্রকাশ
- নারায়ণগঞ্জ জেলায় ভূমিকম্পে শিশুর মৃত্যু, আহত ২৪
- যাত্রাবাড়ীতে নবীউল্লাহ নবীর গণসংযোগ
- রাজধানীতে পরিবার পরিকল্পনা কর্মীদের অবস্থান কর্মসূচি
- ‘তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে হাসিনার বিচার হয়েছে, তবে আপিলের সুযোগ আছে’
- পোস্টাল ভোটিং: দুই দিনে সাড়ে ৬ হাজার নিবন্ধন
- একসঙ্গে সহকারী অধ্যাপক হলেন ১৮৭০ শিক্ষক
- হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের জন্য নতুন সতর্কবার্তা