রবিবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

আইসিইউতে সর্বোচ্চ রোগী দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কা

২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু ৩৫ শনাক্ত ১৮৮৮

শামীম আহমেদ

আইসিইউতে সর্বোচ্চ রোগী দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কা

শীত পড়তেই দাপট বেড়েছে করোনাভাইরাসের। ফের সংকটাপন্ন  রোগীতে পূর্ণ হয়ে যাচ্ছে দেশের কভিড-১৯ ডেডিকেটেড হাসপাতালগুলোর নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ)। বেড়েছে মৃত্যু। অধিকাংশ মৃত্যু হচ্ছে ষাটোর্ধ্ব মানুষের। গতকাল ৩৪২ জন সংকটাপন্ন করোনা রোগী আইসিইউ শয্যায় ভর্তি ছিলেন, যা গত ২১ আগস্টের পর সর্বোচ্চ। ওই দিনও একই সংখ্যক রোগী আইসিইউতে ভর্তি ছিলেন। রাজধানীর অধিকাংশ হাসপাতালে আইসিইউ সংকট দেখা দিয়েছে। দু-একটি বাদে অধিকাংশ সরকারি হাসপাতালের আইসিইউ শয্যাগুলো পূরণ হয়ে গেছে। শেষের পথে  বেসরকারি হাসপাতালগুলোর আইসিইউ।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যানুযায়ী, সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে রাজধানীর ১৯টি কভিড-১৯ ডেডিকেটেড হাসপাতালের ১৭টিতে রয়েছে আইসিইউ সুবিধা। এসব হাসপাতালের ৩১৬টি আইসিইউ শয্যার মধ্যে গতকাল খালি ছিল মাত্র ৭৯টি, যার অধিকাংশই বেসরকারি হাসপাতালে। কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে কোনো আইসিইউ শয্যা গতকাল খালি ছিল না। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বার্ন ইউনিটের ২৪টি আইসিইউর মধ্যে খালি ছিল দুটি। সর্বাধিক ৩২টি আইসিইউ খালি ছিল বেসরকারি ইমপালস হাসপাতালে। রাজধানীর অন্য হাসপাতালগুলোর আইসিইউ শয্যা খালি ছিল এক থেকে সর্বোচ্চ আটটি।

এদিকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যানুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা সংক্রমণে মৃত্যু হয়েছে আরও ৩৫ জনের। এর মধ্যে ২৪ জনই ছিলেন ষাটোর্ধ্ব। এ ছাড়া নয়জন পঞ্চাশোর্ধ্ব, একজন চল্লিশোর্ধ্ব ও একজনের বয়স ছিল ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। মৃতদের মধ্যে ২৩ জন ছিলেন পুরুষ ও ১২ জন নারী। ঢাকা বিভাগেই মৃত্যু হয়েছে ২৩ জনের। দুজন করে মারা গেছেন ময়মনসিংহ, রংপুর, বরিশাল, খুলনা ও রাজশাহী বিভাগে। একজন করে মারা গেছেন চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে। ৩৪ জন হাসপাতালে ও একজন বাড়িতে মারা গেছেন। এ নিয়ে গতকাল পর্যন্ত করোনা সংক্রমণে দেশে মৃত্যু হয়েছে ৬ হাজার ৮০৭ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ৮৮৮ জনের দেহে। ১৩ হাজার ৫৪০টি নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার ছিল ১৩ দশমিক ৯৪ শতাংশ। দেশে এখন পর্যন্ত মোট করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে ৪ লাখ ৭৫ হাজার ৮৭৯ জন। গত এক দিনে ২ হাজার ৪৫৭ জন করোনা রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এ নিয়ে মোট সুস্থ হলেন ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৪০৮ জন।

সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে সংক্রমণ কমে আসায় দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে করোনা রোগীর জন্য আইসিইউ শয্যা কমিয়ে আনা হয়। নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ফের বাড়তে শুরু করে সংক্রমণ ও মৃত্যু। গত সেপ্টেম্বর মাসে সর্বোচ্চ ৩১৮টি আইসিইউ শয্যা পূর্ণ ছিল ৫ তারিখ। অক্টোবরের কোনো দিনই ৩০০টি আইসিইউ পূর্ণ হয়নি। নভেম্বরে সর্বোচ্চ ৩১৮টি আইসিইউ পূর্ণ হয় ৩০ তারিখ। ডিসেম্বরের প্রথম পাঁচ দিনই যথাক্রমে ৩২৮, ৩২১, ৩৩৪, ৩১৭ ও ৩৪২টি আইসিইউ শয্যা পূর্ণ ছিল সংকটাপন্ন রোগীতে। দুই মাস সংক্রমণ ও মৃত্যু কমায় গত ২৩ নভেম্বর আইসিইউ শয্যা কমিয়ে ৫৫৫টিতে নামিয়ে আনা হয়। তবে সংকটাপন্ন রোগী বেড়ে যাওয়ায় বর্তমানে আইসিইউ সংখ্যা ফের বাড়িয়ে ৫৭৮টি করা হয়েছে।

 

সর্বশেষ খবর