নওগাঁর মহাদেবপুরের আত্রাই নদীর মধুবন এলাকায় আসা অতিথি পাখি রক্ষায় প্রতি বছরের মতো কাজ শুরু করেছে স্থানীয় প্রাণ ও প্রকৃতি সংগঠন। অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত আত্রাই নদী। তবে সমস্যা হলো, আত্রাইয়ের লিজ না দেওয়া ওই অংশে ড্রেজার মেশিনের বিকট শব্দে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় পাখি থাকতে পারছে না। স্থানীয়দের দাবিতে প্রশাসন মধুবন এলাকায় সরকার ঘোষিত মৎস্য অভয়াশ্রম ও পাখি কলোনি বালুমহাল লিজ বন্ধ রাখে। তার পরও প্রশাসনের নাকের ডগায় একটি প্রভাবশালী চক্র ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে অবৈধভাবে দিনরাত বালু উত্তোলন করছে।
জানা গেছে, ১০ বছর থেকে সাইবেরিয়া, মঙ্গোলিয়াসহ শীতপ্রধান দেশ থেকে নওগাঁর মহাদেবপুরের আত্রাই নদীর মধুবন, কুঞ্জবনসহ কয়েকটি এলাকার প্রায় ৩ কিলোমিটার জুড়ে সাড়ালি, পানকৌড়ি, ডুবুরিসহ বিভিন্ন প্রজাতির হাজার হাজার অতিথি পাখি বিচরণ করে। এসব পাখি রক্ষায় প্রাণ ও প্রকৃতি সংগঠনসহ স্থানীয়রা কাজ করছে। পাখির অভয়াশ্রমের জন্য প্রশাসনের কাছে ওই এলাকার বালুমহাল লিজ বন্ধের দাবি জানিয়েছেন সংগঠনের নেতারা। এ দাবির অংশ হিসেবে চলতি বছর প্রশাসন লিজ না দিলেও একটি প্রভাবশালী মহল ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছিল।
প্রাণ ও প্রকৃতি সংগঠনের সভাপতি কাজি নাজমুল হক জানান, মধুবন এলাকায় সরকারিভাবে লিজ না দিলেও মোয়াজ্জেম হাজী ভয়ভীতি দেখিয়ে বালু উত্তোলন করছেন। স্থানীয় মিজানুর রহমান জানান, পাখিদের ঢিল ছুড়ে তাড়িয়ে দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে উপজেলা প্রশাসন ও থানাসংলগ্ন এ পাখি কলোনি থেকে বালুদস্যুরা অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে। প্রতি বছর আত্রাইয়ের ওই এলাকায় অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করায় জমিগুলো নদীর মধ্যে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে পাখির বিচরণে অসুবিধা হচ্ছে। পাখি তাড়িয়ে দিয়ে বালু উত্তোলনকারীরা প্রশাসন ও রাজনৈতিক মহলের ছত্রচ্ছায়ায় অবৈধভাবে দীর্ঘদিন থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করছেন। অভিযুক্ত মোয়াজ্জেম হাজী সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, দীর্ঘদিন ওই অংশ থেকে বালু উত্তোলন করে আসছি। কিন্তু হঠাৎ শত্রুতাবশত পাখি কলোনি ঘোষণা করা হয়েছে।মহাদেবপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আসমা খাতুন জানান, কয়েক দিন আগে সেখানে উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়েছিল এবং লিজবহির্ভূত ওই অংশ থেকে বালু উত্তোলন না করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আবার যদি বালু উত্তোলন করা হয় তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্র্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, ওই এলাকায় বালু উত্তোলনের সুযোগ নেই। তার পরও ওই এলাকা থেকে বালু উত্তোলনের কেউ অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।