শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

ই-কমার্সের প্রবৃদ্ধির জন্য চাই নীতি সহায়তা

শমী কায়সার

ই-কমার্সের প্রবৃদ্ধির জন্য চাই নীতি সহায়তা

২০২১-২২ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে অনলাইনে কেনাকাটা বা ই-কমার্স খাতে আরও প্রবৃদ্ধির জন্য কিছু নীতিসহায়তা চান ই-ক্যাব সভাপতি শমী কায়সার। ই-কমার্স উদ্যোক্তাদের সংগঠনটির এই নেতা বলেন, যেসব অনলাইন উদ্যোক্তা বার্ষিক ১ কোটি টাকার কম বিক্রি করে থাকেন তাদের জন্য ভ্যাট অব্যাহিত সুবিধা চাই। কারণ সরবরাহকারীদের ক্ষেত্রে ন্যূনতম সীমা রয়েছে। তাই ক্ষুদ্র ও মাঝারি অনলাইন উদ্যোক্তাদেরও এ কর সুবিধা প্রদান যৌক্তিক হবে।   গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন ই-ক্যাব সভাপতি শমী কায়সার। তিনি ই-কমার্স খাতের প্রবৃদ্ধির তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরে বলেন, মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে ই-কমার্স খাতে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। অথচ করোনার আগে এ প্রবৃদ্ধি ছিল ২৫ শতাংশ। ই-কমার্সে ৯৫ শতাংশ পণ্য ক্যাশ অন ডেলিভারিতে বিক্রি হচ্ছে। বাকি ৫ শতাংশ অর্থ অনলাইনে লেনদেন হয়। তার মতে, ই-কমার্সের বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান ক্ষুদ্র ও মাঝারি ধরনের। আবার এখন অ্যামাজনের মতো প্রতিষ্ঠান তৈরি হয়নি। দারাজ বিদেশি কোম্পানি। আবার পাঠাও ও চালডালের মতো প্রতিষ্ঠানও হয়েছে। ই-কমার্স এখনো মার্কেট প্লেসভিত্তিক হয়ে আছে। এ খাতে গত আট মাসে ১৬ হাজার কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। বাস্তবে হয়তো এ লেনদেন আরও বেশি। এর মধ্যে অনলাইনে ৩ হাজার কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। এটা বড় মার্কেট। চ্যালেঞ্জটা হলো, কিছুটা প্রতারণা হচ্ছে। ইভ্যালি নিয়ে কিছু অভিযোগ আছে। সময়মতো ও সঠিক পণ্য ক্রেতারা পাচ্ছেন না। ইভ্যালি খারাপ কি ভালো তা বলব না। তবে এ খাতের জন্য আমরা একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর বা এসওপি তৈরি করছি। এতে এ খাতের মান বজায় থাকবে বলে আশা করছি।

অভিনেত্রী থেকে ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃত্বে আসা শমী কায়সার ই-ক্যাবের বাজেট প্রস্তাব তুলে ধরে বলেন, ই-লার্নিং ও ই-বুক সেবাকে ভ্যাট আইনের প্রযুক্তিনির্ভর সেবা ও আয়কর অধ্যাদেশে যুক্ত করা হয়েছে। এ সেবা দুটি পুরোপুরি প্রযুক্তিনির্ভর হওয়ায় অনলাইনে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা খরচ অনেকাংশে কমে যাবে। এ খাতের বিকাশ হবে। পাশাপাশি দেশ যখন নিম্ন আয়ের থেকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হচ্ছে, এমন পরিস্থিতিতে মানসম্মত শিক্ষাব্যবস্থা এবং সব ধরনের দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। এটা না করতে পারলে অপূরণীয় ক্ষতি হবে। আবার দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় ভালো মানের শিক্ষক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ইনস্টিটিউট রাজধানী এবং শহরকেন্দ্রিক। অথচ ইন্টারনেট সেবা ও তথ্যপ্রযুক্তি একদম গ্রাম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। ইন্টারনেট ও তথ্যপ্রযুক্তি সেবা সঠিকভাবে ব্যবহার করে খুব সহজেই অনলাইন শিক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমে শহরের পাশাপাশি গ্রামের শিক্ষার্থীদেরও শিক্ষা ও কর্মমুখী প্রশিক্ষণ প্রদান অব্যাহত রেখে দক্ষতা উন্নয়ন করা প্রয়োজন।

ই-ক্যাব সভাপতি বলেন, ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের ডেলিভারি চার্জের ক্ষেত্রে ভ্যাট অব্যাহতি প্রদান করা হোক। একই সঙ্গে ডেলিভারি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের চার্জে ন্যূনতম ভ্যাট নির্ধারণ করতে হবে। কারণ যেসব প্রতিষ্ঠান নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পণ্য ডেলিভারি করে, অন্য কাউকে ডেলিভারি সেবা দেয় না তাদের সব লজিস্টিক বা পণ্য ডেলিভারি সেবার ওপর ভ্যাট মওকুফ করা হোক। পাশাপাশি ডেলিভারি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের চার্জে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ হারে ভ্যাট আরোপের প্রস্তাব করছি। কারণ ই-কমার্সভিত্তিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের পণ্য ডেলিভারি থাকে, যার বেশির ভাগ ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা। এ ক্ষেত্রে ভ্যাটের পরিমাণ বেশি হলে তা পণ্যমূল্যের ওপর প্রভাব ফেলে।

শমী কায়সার বলেন, ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের অফিস ভাড়া ও ফুলফিলমেন্ট সেন্টারের ভাড়ার ওপর ভ্যাট অব্যাহতি চাই। এ খরচ পণ্যের মূল্য নির্ধারণে প্রভাব ফেলছে। পাশাপাশি ডিজিটাল পেমেন্টের ক্ষেত্রে ভ্যাট ও কর অব্যাহতি দিতে হবে। কারণ ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠন এবং ক্যাশলেস সোসাইটি এগিয়ে নিতে প্রয়োজন ডিজিটাল লেনদেন। এ সিদ্ধান্ত ডিজিটাল অর্থনীতির গতিশীলতা আনতে ভূমিকা রাখবে।

সর্বশেষ খবর