বৃহস্পতিবার, ২৮ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

জাদুঘরে আব্বাসউদ্দীন ও শিল্পকলায় লালন স্মরণ

সাংস্কৃতিক প্রতিবেদক

জাদুঘরে আব্বাসউদ্দীন ও শিল্পকলায় লালন স্মরণ

গতকাল ছিল মরমি শিল্পী আব্বাসউদ্দীনের ১২১তম জন্মদিন এবং লালন সাঁইয়ের ২৪৯তম জন্মদিন ও ১৩১তম মৃত্যুবার্ষিকী। এ দুই শিল্পীর স্মরণে অনুষ্ঠান হয়েছে জাদুঘর ও শিল্পকলায়।

এদিন ‘লোকসংগীত সম্রাট আব্বাসউদ্দীন আহমদ ও তাঁর শিল্পী জীবন’ শীর্ষক সেমিনার ও আলোচনার আয়োজন করে জাতীয় জাদুঘর। বিকালে কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনের এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নজরুলসংগীত শিল্পী বুলবুল মহলানবীশ। জাতীয় জাদুঘর বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভাপতি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে এতে আলোচক ছিলেন সংগীত শিল্পী ফেরদৌসী রহমান।

উল্লেখ্য, ১৯০১ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কুচবিহারে জন্মগ্রহণ করেন আব্বাসউদ্দীন। তিনি ছিলেন একজন বাঙালি লোকসংগীতশিল্পী, সংগীত পরিচালক ও সুরকার। সংগীতে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি মরণোত্তর প্রাইড অব পারফরম্যান্স (১৯৬০), শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৭৯) এবং স্বাধীনতা পুরস্কারে (১৯৮১) ভূষিত হন। তার বড় ছেলেন ড. মোস্তফা কামাল ছিলেন বিচারপতি, মেজো ছেলে মুস্তাফা জামান আব্বাসী ও একমাত্র মেয়ে ফেরদৌসী রহমান সংগীতশিল্পী। ১৯৫৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর ৫৮ বছর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। এদিকে লালন স্মরণে গতকাল সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির সংগীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে আয়োজন করা হয় মনোজ্ঞ অনুষ্ঠানের। দুই পর্বে বিভক্ত অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে ছিল ‘সাঁইজির গানে মানবতা’ শিরোনামের আলোচনা, আর দ্বিতীয় ও শেষ পর্বে ছিল সংগীতাসর। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন লোকসংগীতশিল্পী কিরণ চন্দ্র রায়। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন লোকসংগীত পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি শিল্পী অনিমা মুক্তি গমেজ। মুখ্য আলোচক ছিলেন লোক গবেষক ড. সাইমন যাকারিয়া। এতে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠনের সভাপতি দীপ্তি রাজবংশী। আলোচনা পরবর্তী সুরের আসরে সংগীত পরিবেশন করেন কিরণ চন্দ্র রায়, চন্দনা মজুমদার, সৃজনী তানিয়া, দীপ্তি রাজবংশী, মফিজুর রহমান বিরহী, অনিমা মুক্তি গমেজ, ড. আবুল কালাম আজাদ, অনঙ্গমোহন রাজবংশী, লুৎফুন নাহার মনিরা, শফিউল আলম প্রমুখ। এলাহি আলামিন গো, ও যার আপন খবর আপনার হয় না, ধন্য ধন্য বলি তারে, মানুষ ছেড়ে ক্ষ্যাপা, চাতক বাঁচে কেমনে, মিলন হবে কতদিনে, বাড়ির পাশে আরশিনগর, গুরু কার্য মাথায় লয়ে, যার খুলেছে মনের তালা, ভবে কেউ কারো নয় দুখের দুঃখী, শুনিলে প্রাণ চমকে ওঠে, কেহ জানতে পায় রসের খবর, দেখ দেখ মন রাই ইত্যাদি গানে গানে পুরো মিলনায়তনকে ভাবের সাগরে ডুবিয়ে দেন শিল্পীরা। কথা ও সুরের অপূর্ব সংমিশ্রণে মিলনায়তন জুড়ে মূর্ত হয়ে ওঠে লালন সাঁই। আর শ্রোতারাও তন্ময় হয়ে উপভোগ করেন ভাবসাগরের পুরো আয়োজন।

 

সর্বশেষ খবর