শনিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা
কৃষি

নওগাঁয় করলা চাষে বিপ্লব

বাবুল আখতার রানা, নওগাঁ

নওগাঁয় করলা চাষে বিপ্লব

নওগাঁর সাপাহারে আম চাষিরা এ বছর আম চাষে যেমন বিপ্লব ঘটিয়েছেন, ঠিক তেমনি করলা চাষ করে অনেক কৃষক স্বাবলম্বী হচ্ছেন। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ হওয়ায় লাভের মুখ দেখছেন করলা চাষিরা। করলা বিক্রি করে অনেকেই এখন সচ্ছল জীবন-যাপন করছেন। বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই এ উপজেলার চাষিরা করলা সবজি চাষে উৎসাহিত হয়ে তাদের হাইব্রিড আম বাগানে গাছের ফাঁকে ফাঁকে সাথী ফসল হিসেবে করলা চাষ করে স্থানীয় বিভিন্ন হাটবাজারে বিক্রি করে সংসারের খরচ মিটিয়ে কিছু টাকা লাভ করত। পরবর্তীতে করলা চাষের খবর বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কাঁচা তরিতরকারির ব্যবসায়ীরা ছুটে আসেন সাপাহারে। পরবর্তীতে এরই ধারাবাহিকতায় উপজেলার করলা চাষিদের কেন্দ্র হিসেবে সাপাহার-তিলনা পাকা সড়কের বাহাপুর মোড়ে গড়ে ওঠে প্রতিদিনের জন্য ৩-৪ ঘণ্টার এক অস্থায়ী বাজার। ভোর হলেই বিভিন্ন এলাকার করলা চাষিরা তাদের উৎপাদিত করলা নিয়ে চলে আসে এই বাজারে এবং ক্রেতারা তাদের কাছে বিভিন্ন দামে কিনে মিনি ট্রাকযোগে সকাল ১০টার মধ্যেই রওনা হয়ে যায় নিজ নিজ গন্তব্যে। প্রতি মণ করলা ৯০০ টাকা থেকে ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। করলার অস্থায়ী এই বাজারে এসে ঢাকার কারওয়ান বাজারের আনোয়ার হোসেন নামে এক সবজি ব্যবসায়ী জানান, সাপাহারের করলা সবজির গুণগতমান ভালো ও এখান থেকে করলা কিনে লাভ ভালো হওয়ায় তিনি বেশ কয়েক বছর ধরে এখানকার করলা রাজধানী ঢাকার কারওয়ান বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করছেন। এলাকার স্থানীয় করলা চাষি নজরুল ইসলাম, ছয়ফুল ইসলাম ও আবদুল মমিনসহ বেশ কয়েকজন কৃষক জানান, অস্থায়ীভাবে উপজেলা সদরের বাইরে এ স্থানে করলার বাজার গড়ে না উঠলে এখানকার চাষিরা এই হারে করলা চাষাবাদ করতেন না। বর্তমানে তারাসহ অনেকেই এখন করলা চাষ করে সফলতার মুখ দেখছেন। এই বাজারের ক্রেতা-বিক্রেতারা জানান, প্রতিদিন এই বাজার থেকে প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ টন করলা দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ হয়ে থাকে। উপজেলা কৃষি অফিসার মজিবুর রহমান জানান, কয়েক বছর ধরে করলা চাষ এ উপজেলার চাষিদের মাঝে এক নীরব বিপ্লব ঘটিয়েছে। কৃষি অফিসের পরামর্শে উপজেলার অনেকেই এখন দেশি, হাইব্রিড, সোনামুখীসহ বিভিন্ন জাতের করলা চাষাবাদ করে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন। এ বছর উপজেলায় ১৫০ থেকে ২০০ বিঘা জমিতে করলা চাষাবাদ হয়েছে। করলা ক্ষণস্থায়ী ফসল হলেও এবারে এর ব্যাপক ফলন হয়েছে, দামও রয়েছে কৃষকের আকাক্সক্ষা মতো। আবহাওয়া আর কিছুদিন চাষিদের অনুকূলে থাকলে করলা চাষের মেয়াদ বৃদ্ধি পাবে। উপজেলার আম চাষিরা এ বছর আম চাষে যেমন এক বিপ্লব ঘটিয়েছেন ঠিক তেমনটাই করলা চাষেও বিপ্লব ঘটাবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর