রবিবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

মনোনয়ন পেয়েই প্রতিপক্ষের বাড়িতে আগুন

ইউপি নির্বাচনে সহিংসতা চলছেই

নিজস্ব প্রতিবেদক

ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন-পরবর্তী সংঘাত-সহিংসতা কমছে না। মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার লক্ষ্মীপুরে ইউপি ভোটে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের ১০টি বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। মনোনয়ন পেয়ে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নে প্রতিপক্ষের বাড়িতে আগুন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে নৌকার প্রার্থীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে। আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর : মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের ১০টি বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। ভুক্তভোগীরা বলেন, বিজয়ী চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকরা এ হামলা চালান। এ হামলায় আহত হন অন্তত ১০ জন। শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের মৃধারমোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। থানা-পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, দ্বিতীয় ধাপের লক্ষ্মীপুর ইউপিতে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন সাবেক চেয়ারম্যান ফজলুল হকের স্ত্রী মৌসুমী সুলতানা। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী তোফাজ্জেল হোসেন। এ নির্বাচনে বিজয়ী হন মৌসুমী সুলতানা। এরপর থেকে দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা চলছে। বিরোধের জের ধরে মৌসুমী সুলতানার কর্মী-সমর্থকরা দেশি অস্ত্র নিয়ে শুক্রবার রাতে প্রতিপক্ষের বসতঘরে হামলা চালান। শুক্রবার বিকাল ৪টা। হঠাৎ করেই বাড়ির মধ্যে বিকট শব্দে পড়ল পটকা। পর পর তিনটি পটকা ফুটল বাড়ির মধ্যে। পটকার শব্দে ঘর থেকে বাইরে বের হন বাড়ির মালিক জিল্লুর রহমান এবং তার স্ত্রী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসিনা বেগম। ঘর থেকে বের হতেই দেখতে পান কয়েকজন ব্যক্তি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে চিৎকার দিয়ে লোকজন ডাকতে বাড়ির বাইর বের হওয়ার চেষ্টা করেন জিল্লুর রহমান। এ সময় স্থানীয় চেয়ারম্যান এবং আবারও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া মকবুল মৃধার লোকজন তাদের বাড়ির প্রধান ফটকে তালা দেওয়ার চেষ্টা করে। এক রকম জোর করেই বাড়ির বাইরে হন তারা। লোকজন আগুন নেভাতে এলে তারা পালিয়ে যান। ঘটনাটি ঘটেছে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের গোয়ালকান্দা গ্রামে। চেয়ারম্যান মকবুল মৃধা শ্রীপুরে নৌকার মনোনয়ন পাওয়ার পরই প্রতিপক্ষের বাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। লালমনিরহাটে নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতার ঘটনা বেড়েই চলেছে। প্রতিদিনই জেলার ৩টি উপজেলার সদ্য শেষ হওয়া নিবার্চনকে ঘিরে সহিংসতার উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ছে। গত ২৮ নভেম্বর জেলার সদর ও কালিগঞ্জ উপজেলায় শেষ হওয়া নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতায় গতকাল পর্যন্ত শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছে। পৃথক পৃথক মামলায় প্রায় ২০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সদর থানার ওসি শাহ আলম জানান, সদরের ৮টি ইউনিয়নে নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতার ঘটনায় ৫টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় এখন পর্যন্ত ২০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জামালপুরে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সরিষাবাড়ী উপজেলার ভাটারা ইউনিয়নে ইউপি সদস্য পদে মনোনয়নের বৈধতা পেয়েছেন হত্যা মামলায় দন্ডিত এক আসামি। তৃতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বগুড়া সদরের নুনগোলা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী আলীম উদ্দিনের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। একই ধাপে জেলায় আরও ৪৩ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভোট না পাওয়ায় তারা জামানত ফিরে পাবেন না। গত ২৮ নভেম্বর জেলার ২৭টি ইউনিয়নে ভোট গ্রহণ করা হয়। নৌকা মার্কার বাইরে গিয়ে নির্বাচন করলে পেটানোর হুঁশিয়ারি দিলেন সদ্য নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল হাই। এ ছাড়াও ‘এক কেন্দ্রে যতগুলো ভোট আছে ততগুলো নৌকায় সিল পড়বে। অন্য কোনো আবোল-তাবোল মার্কায় ভোট হবে না। নৌকায় প্রকাশ্যে টেবিলের ওপর সিল মারতে হবে’ বলে জানিয়েছেন তিনি। শুক্রবার রাতে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান আবদুল মতিন সরকারের নির্বাচনী প্রচারণা সভায় কালিহাতী উপজেলার গোহালিয়াবাড়ী ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আবদুল হাই আকন্দ এসব কথা বলেন।

সর্বশেষ খবর