রাজধানী ঢাকায় কয়েক দিন ধরেই দেখা দিয়েছে তীব্র যানজট। গত কয়েক দিনের ধারাবাহিকতায় গতকাল সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে সাধারণ যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েন। সকালে বিমানবন্দর সড়কে তীব্র যানজট লেগে যায়। উত্তরা থেকে খিলক্ষেত, বনানী হয়ে যানজট ছড়িয়ে পড়ে কারওয়ান বাজার পর্যন্ত। উল্টোদিকে জাহাঙ্গীর গেট থেকে বনানী হয়ে মহাখালী-সাতরাস্তা পর্যন্ত ছিল প্রচ- যানজট। এ ছাড়া কুড়িল বিশ্বরোড-রামপুরা রোডে যাতায়াতকারীদেরও ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। এ সময় কিছুটা থেমে থেমে গাড়ি চলাচল করলেও সড়কে যাতায়াতকারীদের ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। যানজটের কারণে দিনের প্রথম প্রহরে অফিসগামী মানুষকে সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হয়। পাশাপাশি গরমেও অতিষ্ঠ ছিল জনজীবন। স্কুল খোলার কারণে যানজট তীব্র হয়েছে বলে জানায় ট্রাফিক পুলিশ। সকালে ফার্মগেট থেকে বিজয় সরণি সিগন্যাল পর্যন্ত পৌঁছতে সময় লাগে ৪৫ মিনিট। কিন্তু যানজট কমেনি। জাহাঙ্গীর গেট থেকে মহাখালী ফ্লাইওভারের নিচ পর্যন্ত রাস্তায় সারি করে অনেক গাড়ি পার্ক করে রাখতে দেখা যায়। এ ছাড়া অনেকটা রাস্তার ওপরই বাসগুলো যাত্রী ওঠানামা করানোর কারণে যানজট পার হতে আরও সময় লাগে। সকাল সোয়া ৮টায় গাজীপুর থেকে সাইনবোর্ডগামী একটি যাত্রীবাহী বাসে কথা হয় শিক্ষার্থী ফাজলে রাব্বির সঙ্গে। তিনি বলেন, টঙ্গী স্টেশন রোড থেকে খিলক্ষেত আসতে সময় লেগেছে ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট। অন্য দিন সময় লাগে ৪০ মিনিট। যাত্রাবাড়ী থেকে কুড়িল বিশ্বরোডে আসা আলমগীর হোসেন জানান, তার অফিস কুড়িলে। তিনি নিয়মিত বাইক নিয়ে যাত্রাবাড়ী থেকে অফিসে আসেন। সময় লাগে ৪৫ মিনিট থেকে সর্বোচ্চ এক ঘণ্টা। গতকাল সময় লেগেছে দুই ঘণ্টা। এ ছাড়া অতিরিক্ত গরমের কারণে তিনি ক্লান্ত হয়ে পড়েন। কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায় জহির নামে এক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী বলেন, ‘দুই দিন ধরেই অফিসে যেতে দেরি হচ্ছে। আজও (গতকাল) রাস্তায় প্রচ- যানজট। গাড়ি চলেই না। হেঁটেই অফিসের দিকে রওনা দিয়েছি।’ যানজটে অতিষ্ঠ নগরবাসীর অনেককে বাস থেকে নেমে হেঁটে চলাচল করতে দেখা গেছে। কেউ কেউ বলছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুরোদমে চালু হওয়ার কারণে সড়কে চাপ পড়েছে। প্রায় দুই বছর পর গতকাল থেকে সশরীরে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান শুরু হয়েছে। এ জন্য এদিন সকাল থেকেই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের নিয়ে যেতে দেখা যায় অভিভাবকদের। পাশাপাশি অফিসগামী ও সাধারণ মানুষসহ রাস্তায় যাতায়াতকারী যাত্রীর সংখ্যা অনেক বেড়ে যায়। আর বাড়তি মানুষের চলাচলের কারণে রাজধানীর সড়কের যানজট আরও বাড়তি মাত্রা যোগ করেছে। রাজধানীর উত্তরা, বিমানবন্দর, খিলক্ষেত, মহাখালী, সাতরাস্তা, বিজয় সরণি, বাংলামোটর, শাহবাগ, মতিঝিল, বাড্ডা, নতুন বাজার, কুড়িল বিশ্বরোডসহ বিভিন্ন স্থানে অন্যান্য দিনের চেয়ে যানজটের তীব্রতা দেখা গেছে। যানবাহন নিয়ন্ত্রণে সকাল থেকেই ট্রাফিক পুলিশকে ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা যায়। এসব এলাকায় বাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, প্রাইভেটকার, রিকশা থেমে থেমে ধীরগতিতে চলেছে। দীর্ঘ সময় পরপর সিগন্যাল ছাড়ছে, তবে সেই সঙ্গে গাড়ির লাইনও আরও দীর্ঘ হয়েছে। চালকদের আগে যাওয়ার প্রতিযোগিতা যানজটকে আরও তীব্র করছে। ফুটপাথ দিয়ে বাইকের দৌরাত্ম্য পথচারীদের ভোগান্তিতে বাড়তি মাত্রা যোগ করে। গতকাল থেকে খুলে দেওয়া হয়েছে খুদে শিক্ষার্থীদের ক্লাস। প্রাক-প্রাথমিকের প্লে, নার্সারি ও কেজির কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কলকাকলিতে মুখর হয় বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্কুলগুলো খুলে দেওয়ায় এদিন সকাল থেকে তীব্র যানজটের কবলে পড়েন রাজধানীবাসী। সকাল থেকেই বিভিন্ন সড়কে যান চলাচলে ধীরগতি দেখা দেয়। বিশেষ করে বিভিন্ন স্কুলের সামনে ছিল তীব্র যানজট। তবে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ ও নির্বিঘ্ন করতে ট্রাফিক পুলিশের তৎপরতা দেখা গেছে। কমলাপুর থেকে টঙ্গীগামী বিআরটিসির একটি বাস ছাড়ে সকাল সাড়ে ৭টায়। বেলা পৌনে ১১টার দিকে বাসটি ফার্মগেট ছাড়িয়ে বিজয় সরণির সিগন্যালে দাঁড়িয়ে ছিল। বাসচালকের সহকারী মো. নাসির বলেন, ‘অন্য দিন দেড় ঘণ্টার মধ্যে এখানে আসা যায়। আইজ (গতকাল) তিন ঘণ্টা পার হয়ে গেল। যানজট আইজ হিসাবছাড়া। আমাগো তো কষ্ট আছেই। সেটা বাদ দিলাম। যাত্রী গো কষ্টের কথা একবার ভাবেন!’ বিজয় সরণির সিগন্যালে মতিঝিল থেকে আবদুল্লাহপুরগামী একটি বাসের যাত্রী মো. তালহার সঙ্গে আছেন সত্তরোর্ধ্ব মা। মাকে নিয়ে ঘেমে ভিজেছেন এই যুবক। তালহা বলেন, ‘এমন জ্যাম দেখি নাই অনেক দিন। আম্মারে নিয়া পড়ছি মুশকিলে। কষ্ট পাইতেছে।’ এই বাসের চালকের সহকারী মো. সুমন বলেন, মতিঝিল থেকে তিন ঘণ্টা লাগল ফার্মগেট আসতে। অন্য সময় এক ঘণ্টার বেশি লাগে না। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান বলেন, ‘অনেক দিন পর কিন্ডারগার্টেন খুলেছে। অভিভাবকরা শিশুদের নিয়ে গাড়িতে স্কুলে গিয়েছেন। যত্রতত্র পার্ক করেছেন। এ কারণেই আজ (গতকাল) যানজট ছিল।’
শিরোনাম
- একনজরে আজকের বাংলাদেশ প্রতিদিন (১৯ জুলাই)
- বৈষম্য সংস্কৃতির শত্রু দারিদ্র্যও
- নিউজিল্যান্ডের কাছে পাত্তাই পেল না জিম্বাবুয়ে
- সেন্টমার্টিনে এক লাখ ৪০ ইয়াবাসহ গ্রেফতার ১৭
- এনসিপির ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ খতিয়ে দেখা দরকার : এ্যানি
- ১৩ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ বাটলারের
- মসজিদ ব্যবস্থাপনা নীতিমালা দ্রুত গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে : ধর্ম উপদেষ্টা
- উলভসের হল অব ফেমে জায়গা পেলেন জটা
- চূড়ান্ত সংগ্রামের ঘোষণা দিয়েছিলেন তারেক রহমান : রিজভী
- শ্রোতাদের জন্য হাবিবের নতুন গান ‘দিলানা’
- কোটি মানুষের একটাই দাবি—ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া : মঈন খান
- পঞ্চগড়ে বিএনপির মৌন মিছিল
- ইন্টারনেট শাটডাউন রোধে আসছে আইন : ফয়েজ আহমদ
- কাপ্তাই হ্রদের উন্নয়নে দুই উপদেষ্টার মতবিনিময়
- সরকারের কোলে একদল, কাঁধে আরেক দল : মির্জা আব্বাস
- চলতি মাসে জুলাই সনদ না হলে দায় সরকার আর ঐকমত্য কমিশনের : সালাহউদ্দিন
- সুনামগঞ্জে পানিতে ডুবে ৩ জনের মৃত্যু
- মার্কিন কূটনীতিকদের বিদেশি নির্বাচন নিয়ে মতামত না দিতে নির্দেশ
- বাফুফের ফুটসাল ট্রায়াল শুরু রবিবার
- গোপালগঞ্জে কারফিউয়ের সময় আরও বাড়ল