বৃহস্পতিবার, ৩১ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা

ডায়রিয়া নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়ছে

প্রতিদিন ১২০০-এর বেশি রোগী ভর্তি হাসপাতালে

জয়শ্রী ভাদুড়ী

রাজধানীর হাসপাতালগুলোয় ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি বাড়ছে। আইসিডিডিআরবি হাসপাতালে প্রতিদিন ১ হাজার ২০০-এর বেশি রোগী ভর্তি হচ্ছেন। স্থানসংকুলান না হওয়ায় সাতটি অস্থায়ী তাঁবু টানিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। রাজধানীর অন্য হাসপাতালগুলোয়ও বাড়ছে ডায়রিয়া আক্রান্তের ভিড়। আইসিডিডিআরবি-সূত্রে জানা যায়, গতকাল বিকাল ৪টা পর্যন্ত ৮৪৫ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। ২৯ মার্চ রোগী ভর্তি  হন ১ হাজার ৩১৭ জন, ২৮ মার্চ ১ হাজার ৩৩৪ জন, ২৭ মার্চ ১ হাজার ২৩০ জন, ২৬ মার্চ ১ হাজার ২৪৫ জন। গত ১১ দিনে আইসিডিডিআরবিতে ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন ১৩ হাজার ৭৫০ জন। আইসিডিডিআরবি হাসপাতাল প্রধান ডা. বাহারুল আলম বলেন, ‘প্রতি বছরই শুষ্ক মৌসুমে ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দেয়। তবে এবার সময়ের কিছুটা আগেই রোগী আসতে শুরু করেছে। এ ক্ষেত্রে রোগের জীবাণুর ধরন পরিবর্তন হয়ে থাকতে পারে। তবে তা গবেষণা না করে বা নিশ্চিত না হয়ে বলা সম্ভব নয়। এবারের রোগীদের মধ্যে সিভিয়ার ডায়রিয়া ও কলেরা আক্রান্তও পাওয়া যাচ্ছে। কলেরায় আক্রান্তের সংখ্যা বিগত সময়ের তুলনায় অনেক বেশি, যা মোট আক্রান্তের ২৩ শতাংশ। ডায়রিয়া আক্রান্ত হলে সুস্থ হতে আইসিডিডিআরবি কিছু নির্দেশনা দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- প্যাকেট স্যালাইন আধা লিটার পানিতে গুলিয়ে খেতে হবে। বড়দের (১০ বছরের বেশি বয়সী) ডায়রিয়া হলে প্রতিবার পায়খানার পর ১ গ্লাস (২৫০ মিলি) খাবার স্যালাইন খেতে হবে। শিশুদের ডায়রিয়া হলে প্রতিবার পায়খানার পর শিশুর যত কেজি ওজন তত চা-চামচ বা যতটুকু পায়খানা হয়েছে আনুমানিক সে পরিমাণ খাবার স্যালাইন খাওয়াতে হবে। খাবার স্যালাইনের পাশাপাশি দুই বছরের নিচের শিশু অবশ্যই মায়ের বুকের দুধ খাবে ও শিশুকে কোনো অবস্থাতেই বুকের দুধ খাওয়ানো বন্ধ করা যাবে না। ছয় মাসের অধিক বয়সী রোগী খাবার স্যালাইনের পাশাপাশি সব ধরনের স্বাভাবিক খাবার খাবে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘যত দিন পানি, স্যানিটেশন ব্যবস্থা পর্যাপ্ত না হবে তত দিন পর্যন্ত আমরা ডায়রিয়া-কলেরার ঝুঁকিতে থাকব। ডায়রিয়া মোকাবিলায় আমরা পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রেখেছি। স্থানীয় সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলোর এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তারা ঢাকা শহরে পানি সরবরাহ করে, পয়ঃনিষ্কাশনে কাজ করে। সিটি করপোরেশন, ওয়াসার সঙ্গে মিটিং করে আমরা ডায়রিয়া নিয়ে সতর্কতার বিষয়ে জানিয়েছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘হাসপাতালে সার্বিক প্রস্তুতি রয়েছে, পর্যাপ্ত স্যালাইন রয়েছে। কলেরা শনাক্তে কিট পর্যাপ্ত রয়েছে। কিন্তু ঢাকার এ চিত্র যদি বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়ে তাহলে সামলানো মুশকিল হবে।’

সর্বশেষ খবর