শুক্রবার, ১৩ মে, ২০২২ ০০:০০ টা
কৃষি

তরমুজ কাঁদাচ্ছে খুলনার কৃষকদের

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

তরমুজ কাঁদাচ্ছে খুলনার কৃষকদের

উপকূলীয় এলাকা খুলনার দাকোপ কয়রা বটিয়াঘাটায় এবার তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে সেই অনুযায়ী দাম পাচ্ছেন না চাষিরা। ক্রেতা না থাকায় বিঘার পর বিঘা তরমুজের খেত অবিক্রীত রয়ে গেছে। মৌসুমে বিঘা প্রতি তরমুজ খেত ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকায় বিক্রি হলেও এখন তা ২০ হাজার টাকায়ও কেউ কিনছে না।

কর্মকর্তারা বলছেন সময়মতো ফসল উৎপাদন না হওয়ায় এবার তরমুজের বাজার হারিয়েছে খুলনার চাষিরা। অনেক স্থানে ভেজাল বীজের কারণে ৬৫ দিনের বদলে তরমুজ পাকতে ৮৫/৮৬ দিন সময় লাগছে।

এছাড়া চারা লাগানোর সময় বৃষ্টি হয়ে খেত নষ্ট হওয়ায় দুই সপ্তাহ পিছিয়েছে। ফলে রমজান মাস ও প্রচ  গরমে তরমুজে ব্যাপক চাহিদা থাকলেও সে সময় পরিপক্ব তরমুজ বিক্রি করতে পারেনি খুলনার চাষিরা। এখন চাহিদা কমে যাওয়ায় ৮-১০ কেজি ওজনের পাকা তরমুজ খেতেই নষ্ট হচ্ছে। অনেকে ট্রাকে বোঝাই করে বিভিন্ন আড়তে তরমুজ নিয়ে গেলে তা’ বিক্রি করে গাড়ি ভাড়াও উঠছে না। বটিয়াঘাটা গঙ্গারামপুর বিলে তরমুজ চাষি অনুপ রায় বলেন, বীজের কারণে এবার ৬২ দিনের বদলে তরমুজ পাকতে ৮৫ দিন সময় নিয়েছে। যার কারণে আমরা দাম পাচ্ছি না, সবাই ক্ষতিগ্রস্ত।

গত বছর ঈদের আগে তরমুজ বিক্রি করে লাভবান ছিলাম। এবার এখনো তরমুজ বিক্রি করতে পারিনি। একই সঙ্গে বীজ সারের দাম বৃদ্ধি ও বিভিন্ন সিন্ডিকেটে আর্থিক ক্ষতির কথা বলছেন চাষিরা। দাকোপ কৃষি কর্মকর্তা মেহেদি হাসান জানান, দাকোপের ৭৬০৫ হেক্টরের মধ্যে ১৫০০ হেক্টর জমির তরমুজ এখনো অবিক্রীত রয়েছে। চাষিরা দুশ্চিন্তার মধ্যে আছেন। তিনি বলেন, কৃষক থেকে ভোক্তা পর্যায়ে যেতে পরিবহন সিন্ডিকেট, পাইকারদের সিন্ডিকেট, আড়তদার সিন্ডিকেট গড়ে উঠছে। ১০০ পিচ বড় তরমুজ এখানে ৫ হাজার টাকায় বিক্রি হলেও ঢাকার লোকজন ৪০-৪৫ টাকা কেজি দরে সেই তরমুজ কিনছেন। অনুন্নত যোগযোগ ব্যবস্থার কারণেও চাষির উৎপাদন খরচ বাড়ছে। কর্মকর্তারা বলছেন, গতবছর খুলনা থেকে উত্তরবঙ্গের ঠাকুরগাঁও, নীলফামারি, গাইবান্ধা এলাকায় তরমুজ বিক্রি হয়েছে। কিন্তু এবার সারা দেশে তরমুজে উৎপাদন ভালো হওয়ায় চাহিদা কমে গেছে।

এদিকে তরমুজের পাইকারি বিক্রেতারা বলছেন, কৃষকের কাছ থেকে স্থানীয় দালালরা তরমুজ খেত কিনে তা ব্যাপারীদের কাছে বেশি দামে বিক্রি করে। ফলে কৃষক ন্যায্য দাম পায় না। এরপর আড়ত থেকে কম দামে তরমুজ কিনে খুচরা ব্যবসায়ীরা ভোক্তা পর্যায়ে চড়া দামে বিক্রি করেন।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর