সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪১তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯৮১ সালের ৩০ মে ভোরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে কিছু সেনাসদস্যের হাতে নির্মমভাবে নিহত হন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। দলের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ১০ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে দলটি। মূল কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ, ফাতিহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাত, আলোচনা সভা, সেমিনার এবং আলোকচিত্র প্রদর্শনী। জিয়াউর রহমানের স্মরণে গতকাল ২৯ মে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে স্মরণসভার মাধ্যমে শুরু হওয়া ১০ দিনব্যাপী এ কর্মসূচি চলবে আগামী ৭ জুন পর্যন্ত। প্রত্যেকটি অঙ্গসংগঠন আলাদা আলাদা কর্মসূচি পালন করবে। প্রতিটি অঙ্গসংগঠন গঠনে জিয়াউর রহমানের কী ভূমিকা ছিল, তাদের উন্নয়নে তিনি কী কী কাজ করেছেন, তাঁর দর্শনটা কী ছিল, সেগুলোকে ফোকাস করে আলোচনা সভা করবে অঙ্গসংগঠনগুলো। একইভাবে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মুক্তিযোদ্ধা দল, শ্রমিক দল, তাঁতী দল, মৎস্যজীবী দল, কৃষক দল ও ছাত্রদলসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠন তাদের স্ব স্ব কর্মসূচি পালন করবে। দিবসটি উপলক্ষে আজ ঢাকা মহানগর এবং একইভাবে সারা দেশে জেলা পর্যায়ে ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচি থাকবে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- আজ ভোরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সব মহানগর ও জেলা কার্যালয়ে দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ, কালো পতাকা উত্তোলন ও নেতা-কর্মীদের কালো ব্যাজ ধারণ। বেলা ১১টায় জিয়াউর রহমানের কবরে দলের পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও জিয়ারতসহ শ্রদ্ধা নিবেদন। দিনভর ঢাকা মহানগরীর ৮০টি স্থানে মহানগর বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে অসহায়-দুস্থদের মাঝে খাদ্য ও বস্ত্র বিতরণ করা হবে। এতে বিএনপি মহাসচিব ও সিনিয়র নেতৃবৃন্দ অংশ নেবেন। মূল দলের পাশাপাশি নগরীর বিভিন্ন স্থানে দুস্থ ও ছিন্নমূল মানুষের মাঝে খাদ্য বিতরণ করবে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন (জেডআরএফ)।
দিনটি উপলক্ষে এক বাণীতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, জিয়ার প্রবর্তিত কালজয়ী দর্শন ‘বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ’ ও তাঁর আদর্শ এ দেশের মানুষকে উদ্দীপ্ত করে। সেটি আমাদের জাতীয় স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা এবং বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের অঙ্গীকার।
জাতির সব ক্রান্তিকালে জিয়াউর রহমান দেশের মানুষের পক্ষে নেতৃত্ব দিয়েছেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের ময়দানে বীরোচিত ভূমিকা এবং একটি নতুন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণে তাঁর অনবদ্য অবদানের কথা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। তিনি ফিরিয়ে দেন বহুদলীয় গণতন্ত্র এবং সংবাদপত্র ও নাগরিক স্বাধীনতা। এই মহান জাতীয়তাবাদী নেতার জনপ্রিয়তা দেশি-বিদেশি চক্রান্তকারীরা কখনই মেনে নিতে পারেনি। এই চক্রান্তকারীরা ১৯৮১ সালের ৩০ মে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে হত্যা করে। এই মর্মান্তিক ঘটনার মধ্য দিয়ে একজন মহান দেশপ্রেমিককে দেশবাসী হারায়। জাতীয় জীবনের চলমান সংকটে জিয়ার প্রদর্শিত পথ ও আদর্শ বুকে ধারণ করেই আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে এবং জাতীয় স্বার্থ, বহুমাত্রিক গণতন্ত্র এবং জনগণের অধিকার সুরক্ষায় গণঐক্য গড়ে তুলতে হবে।
ইউট্যাবের বিবৃতি : সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব) নেতৃবৃন্দ এক বিবৃতিতে তাঁর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। ইউট্যাবের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম ও মহাসচিব অধ্যাপক ড. মো. মোর্শেদ হাসান খান বিবৃতিতে স্বাধীনতা যুদ্ধের ময়দানে জিয়াউর রহমানের বীরোচিত ভূমিকা এবং একটি নতুন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণে অনবদ্য অবদানের কথা গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন।