রবিবার, ১২ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

পারভেজ মোশাররফের মৃত্যু নিয়ে ধূম্রজাল

প্রতিদিন ডেস্ক

পারভেজ মোশাররফের মৃত্যু নিয়ে ধূম্রজাল

পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফের বেঁচে আছেন না মারা গেছেন- তা নিয়ে ধূম্রজাল তৈরি হয়েছে। তিনি অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন বলে সর্বশেষ খবরে জানা গেছে। তবে গত শুক্রবার পাকিস্তানি এবং ভারতীয় কিছু সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, তিনি দুবাইয়ের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। অবশ্য পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ গতকাল পর্যন্তও এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিকভাবে মুখ খোলেনি। সূত্র : রয়টার্স।

খবরে বলা হয়, পাকিস্তানের কোনো সুপরিচিত গণমাধ্যমে পারভেজ মোশাররফের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। জিও টিভি এক প্রতিবেদনে সাবেক সেনাপ্রধানকে ভেন্টিলেটরে রাখার খবর জানিয়েছিল। কিন্তু সেই প্রতিবেদনও পরে মুছে ফেলা হয়েছে। ২০১৬ সাল থেকেই সংযুক্ত আরব আমিরাতে অবস্থান করছিলেন ৭৮ বছর বয়সী এ নেতা। সেখানকার কোনো সংবাদমাধ্যমেও এ পর্যন্ত তার মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। ফলে খবরটি নিয়ে ধূম্রজাল তৈরি হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০০৭ সালে প্রেসিডেন্ট থাকার সময় বেআইনিভাবে সংবিধান বাতিল ও জরুরি অবস্থা জারির দায়ে ২০১৩ সালে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হয়। ২০১৪ সালের ৩১ মার্চ মোশাররফকে অভিযুক্ত করা হয়। ওই বছরের সেপ্টেম্বরে বিশেষ আদালতের কাছে বিচারের জন্য সব তথ্যপ্রমাণ পেশ করা হয়। তবে আপিল ফোরামে মামলাটি তোলার পর বিচারকাজ দীর্ঘায়িত হয়ে পড়ে এবং মোশাররফ ২০১৬ সালের মার্চ মাসে পাকিস্তান ছেড়ে চলে যান। চিকিৎসার জন্য তাকে দেশত্যাগের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। তবে দুবাইয়ে যাওয়ার পর থেকে তিনি আর স্বদেশে ফেরেননি। এর কয়েক মাস পরেই পাকিস্তানের একটি বিশেষ আদালত তাকে অপরাধী ঘোষণা করেন। বারবার আদালতে হাজির না হওয়ায় পাকিস্তানে থাকা তার সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেন আদালত। বাতিল হয় তার পাসপোর্ট এবং পরিচয়পত্রও। রাষ্ট্রদোহের ওই মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে ২০১৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর ইসলামাবাদের বিশেষ আদালত পারভেজ মোশাররফের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয়। পাকিস্তানের ইতিহাসে এ ধরনের রায়ের ঘটনা ছিল এটিই প্রথম। তবে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে পাকিস্তানের এই সাবেক সামরিক শাসকের মৃত্যুদণ্ড বাতিল করে দেন দেশটির একটি আদালত। যে প্রক্রিয়ায় পারভেজ মোশাররফের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছিল, তাকে অসাংবিধানিক উল্লেখ করে আদালত মৃত্যুদণ্ডাদেশের সিদ্ধান্ত বাতিল করেন।

আরও উল্লেখ্য, নওয়াজ শরিফকে হটিয়ে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ১৯৯৯ সালে ক্ষমতা দখল করেন পারভেজ মোশাররফ। ২০০১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত দেশটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন তিনি। ২০০৭ সালের নভেম্বরে তিনি পাকিস্তানের সংবিধান বাতিল করে জরুরি অবস্থা জারি করেন। এর বিরুদ্ধে ওই সময় ব্যাপক বিক্ষোভ হয়। অভিশংসনের ঝুঁকি এড়াতে তিনি ২০০৮ সালে পদত্যাগ করেন।

সর্বশেষ খবর