শুক্রবার, ১ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ১০২ বছরে

র‌্যাগ-ডে নয়, করা যাবে সমাপনী উৎসব

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

স্নাতক বা স্নাতকোত্তর শিক্ষা কার্যক্রম শেষে র‌্যাগ-ডে করা যাবে না। আট শর্ত মেনে করা যাবে ‘শিক্ষা সমাপনী উৎসব’।

বুধবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। শর্তগুলো হলো- অনুষ্ঠানের নাম হবে  ‘শিক্ষা সমাপনী উৎসব’। বিভাগীয় চেয়ারম্যান বা ইনস্টিটিউটের পরিচালক এবং ছাত্র উপদেষ্টা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সভা করে অনুষ্ঠানসূচি চূড়ান্ত করবে। স্ব স্ব বিভাগ বা ইনস্টিটিউটের ভবন চত্বরে উদ্বোধন অনুষ্ঠান করা যাবে। টিএসসিতে (ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে) পথচারীদের চলাচল স্বাভাবিক রেখে র‌্যালি করা যাবে। ক্লাস চলাকালীন উচ্চৈঃস্বরে বাদ্য-বাজনা পরিহার করতে হবে। বিভাগ বা ইনস্টিটিউটের সংশ্লিষ্টতায় দুপুরে অথবা রাতে আপ্যায়নের ব্যবস্থা করা যাবে। উৎসবে রাত ১০টার মধ্যে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষ করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় এমন কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। এর আগে, ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের এক সভায় ‘র‌্যাগ ডে’-কে ‘অমানবিক, নিষ্ঠুর ও নীতিবহির্ভূত উৎসব’ আখ্যা দিয়ে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। পরে বিষয়টি ভুলভাবে উপস্থাপিত হয়েছে উল্লেখ করে ‘র‌্যাগ-ডে নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে প্রশাসন। সে সময় এ বিষয়ে নীতিমালা প্রণয়নের জন্য উপ-উপাচার্যকে (প্রশাসন) প্রধান করে কমিটিও গঠন করা হয়। 

১০২- পা দিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় : ১০১ বছর পূর্ণ করল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। আজ ১ জুলাই ১০২তম বছরে পদার্পণ করছে এ প্রতিষ্ঠানটি। ১৯২১ সালের এদিন শিক্ষার্থীদের জন্য দরজা খুলে দেওয়া হয়েছিল দেশের তো বটেই, উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন এ বিদ্যাপীঠের। দিনটিকে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ বছর ‘গবেষণা ও উদ্ভাবন : ইন্ডাস্ট্রিজ-একাডেমিয়া সহযোগিতা’ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে দিবসটি উপলক্ষে বিস্তারিত কর্মসূচি নিয়েছেন তারা। আজ সকাল ১০টায় শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রের খেলার মাঠে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান এসব কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন। কর্মসূচি অনুযায়ী সকাল ১০টার আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হল ও হোস্টেল থেকে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা শোভাযাত্রাসহকারে শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রের খেলার মাঠে সমবেত হবেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জাতীয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় ও হলগুলোর পতাকা উত্তোলন, পায়রা ওড়ানো, কেক কাটা এবং সংগীত বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে থিম সং পরিবেশিত হবে। এ ছাড়া বেলা ১১টায় টিএসসি মিলনায়তনে একটি আলোচনা সভা হবে। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ। প্রতিষ্ঠার পর থেকে অসংখ্য জ্ঞানী-গুণী ও বোদ্ধা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠন-পাঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য ছিলেন স্যার পি জে হার্টগ। এ ছাড়া পণ্ডিত হরপ্রসাদ শাস্ত্রী, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্, রমেশচন্দ্র মজুমদার, স্যার এ এফ রহমান, সত্যেন্দ্রনাথ বসু, জ্ঞানচন্দ্র ঘোষের মতো প্রথিতযশা শিক্ষাবিদেরা এখানে শিক্ষকতা করেছেন। বাংলার রাজনৈতিক সংগ্রামেও অসামান্য অবদান রেখেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯৪৮ থেকে ’৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ’৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধ ও ’৯০-এর স্বেরাচারবিরোধী আন্দোলনেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল নেতৃত্বের আসনে। মুক্তিযুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯৪ জন আত্মোৎসর্গ করে গেছেন।

সর্বশেষ খবর