লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় এক কলেজছাত্রীকে (১৯) প্রেমের ফাঁদে ফেলে অপহরণ করে ভারতে পাচারের অভিযোগ উঠেছে। গত বুধবার সন্ধ্যায় এ-সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ৪ মিনিট ৩৩ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, ওই কলেজছাত্রী নিজের পরিচয় দিয়ে বলেন, আমি প্রতারণার শিকার। আমাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে মুসলিম পরিচয়ে বিয়ে করে ভারতে পাচার করা হয়েছে। একটি বাসায় আটকে রেখে নির্যাতন করেছে মুসলিম পরিচয়ে বিয়ে করা যুবক তিলক রায় শুভ (২৩)। নিজেকে উদ্ধারে তিনি প্রধানমন্ত্রী ও স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছে আর্তি জানান।
ভারতের শিলিগুড়ির ঘোড়ার মোড়ে এক বাসায় বন্দি অবস্থায় নিজেকে উদ্ধারের আর্তি জানিয়ে ওই কলেজছাত্রীর ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে আলোড়ন সৃষ্টি হয়।
জানা গেছে, তিলক রায় শুভ উপজেলার টংভাঙ্গা ইউনিয়নের গেন্দুকড়ি গ্রামের ধনঞ্জয় রায়ের ছেলে। ভুক্তভোগীর বড় ভাই কামরুজ্জামান লুলু বলেন, আমার বোনের সঙ্গে তিলক রায় শুভর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। নানা প্রলোভন দেখিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারিতে বোনকে নিয়ে ঢাকায় পালিয়ে যায় শুভ। সেখানে তারা বিয়ে করে। বিয়ের পর আমার বোন জানতে পারে তিলক হিন্দু। এরপর আর তাদের দেখা পাওয়া যায়নি। বোনকে না পেয়ে তাকে উদ্ধারে গত ৬ জানুয়ারি তিলক, তার বাবা ধনঞ্জয়, মামা গোপাল ও দুই বন্ধুসহ পাঁচজনের নামে হাতীবান্ধা থানায় এজাহার দায়ের করি। তারপরও তাদের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরে ভুক্তভোগী কলেজছাত্রী বড় ভাইয়ের মোবাইল ফোনে নির্যাতনের কিছু ভিডিও ফুটেজ পাঠায়। যা দেখে তার ভাই আরেকজনকে সঙ্গে নিয়ে ৪ আগস্ট ভারতের শিলিগুড়ির ঘোড়ার মোড়ে এক বাসা থেকে ভুক্তভোগীকে উদ্ধার ও তিলককে আটক করে এনজেপি থানায় নিয়ে যায়। বর্তমানে তারা শিলিগুড়ি থানা পুলিশের হেফাজতে আছেন। হাতীবান্ধা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ শাহ আলম বলেন, এ ঘটনায় থানায় অপহরণ মামলা হয়। তিনজনের নামে আদালতে চার্জশিটও দাখিল করা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে ওই মেয়ে ও ছেলেকে ভারত থেকে আনার প্রক্রিয়া চলছে।
