বৃহস্পতিবার, ১৮ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা
চকবাজারে আগুন

দায় অস্বীকারের চেষ্টা হোটেল মালিকের

নিজস্ব প্রতিবেদক

দায় অস্বীকারের চেষ্টা হোটেল মালিকের

পুরান ঢাকার চকবাজারে অগ্নিকাণ্ডে নিহত ছয়জনের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ২টার দিকে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মর্গ থেকে এসব লাশ হস্তান্তর করা হয়। এদিকে এক দিনের রিমান্ডে থাকা হোটেল মালিক ফখরউদ্দিনকে গতকাল জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তিনি সব দায় অস্বীকার করার চেষ্টা করেছেন। এ ছাড়া চলতি বছরের মধ্যেই পুরান ঢাকার কারখানা ও গুদাম স্থানান্তরের ঘোষণা দিয়েছেন ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। লাশ হস্তান্তরের বিষয়ে গতকাল ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) লালবাগ বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) জাফর হোসেন জানান, স্বজনরা পোড়া অবস্থাতে প্রিয়জনের লাশ শনাক্ত করে তা পেতে তাদের কাছে আবেদন করেন। এরপর তারা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে লাশগুলো হস্তান্তরের ব্যবস্থা করেন। যেহেতু স্বজনরা কোনো না কোনো চিহ্ন দেখে লাশ শনাক্ত করেই ফেলেছেন তাই তারা ডিএনএ টেস্ট করার আর প্রয়োজনবোধ করেননি। আর জেলা প্রশাসন থেকেও লাশের স্বজনদের অনুদান দেওয়া হয়। এদিকে গতকাল এক দিনের রিমান্ডে থাকা হোটেল মালিক ফখরউদ্দিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে চকবাজার থানা পুলিশ। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, হোটেলে চুলার কাছে একাধিক সিলিন্ডার রাখা এবং অবৈধভাবে গ্যাস লাইন নেওয়ার বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তিনি অস্বীকার করার চেষ্টা করেছেন। তবে আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে তা বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। গতকাল সকালে চকবাজারের অগ্নিকাণ্ডের স্থল ‘বরিশাল হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট’ পরিদর্শন করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকা অবৈধ কারখানা ও গুদাম দিয়ে ভরিয়ে ফেলা হয়েছে। কিন্তু এসব ব্যবসায়ীকে কোনোভাবেই নিবৃত্ত করা যাচ্ছে না। আমরা কারখানায় স্থানান্তরের প্রক্রিয়া দ্রুত করার জন্য সরকারকে অনুরোধ করব। পাশাপাশি আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে চকবাজার থেকে ৫০০ কারখানা-গুদাম স্থানান্তর করা হবে। ২০১৮ সাল থেকে এই এলাকায় নতুন ভবনের অনুমোদন দেওয়া বন্ধ রয়েছে। চিরুনি অভিযান পরিচালনা করে এখানে অবৈধ ২ হাজার ৪০০-এর বেশি ভবন শনাক্ত করেছি। পর্যায়ক্রমে এগুলো এখান থেকে সরানো হবে। আগুনে পুড়ে যাওয়া ভবনটিও অবৈধ। এটি মূলত ওয়াকফ এস্টেটের সম্পত্তি। এই ভবনের নিচতলায় হোটেলটির ব্যবসায়ীরা কোনো ধরনের ট্রেড লাইসেন্স ছাড়াই ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন। যারা এখানে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির সংযোগ দিয়েছেন, তাদেরও বিষয়টি খতিয়ে দেখা প্রয়োজন ছিল। হোটেলের পাশের কারখানাটিও অবৈধভাবে স্থাপন করা হয়েছিল এবং সেটিরও কোনো ট্রেড লাইসেন্স ছাড়াই চলছিল। সোমবার চকবাজারের কামালবাগের দেবীদাস লেনে বরিশাল হোটেলে বিস্ফোরণ থেকে অগ্নিকাণ্ড ঘটে। পরে সেখান থেকে ছয়জনের লাশ উদ্ধার করা হয়।

নিহতরা হলেন- বরিশালের মুলাদীর বিল্লাল সরদার (৩৫), হবিগঞ্জের লাখাইয়ের স্বপন সরকার (১৮), শরীয়তপুরের গোসাইরহাটের ওসমান দেওয়ান (২৫), মাদারীপুর কালকিনির রুবেল (২৭), বরিশাল হিজলার মোতালেব (১৬) ও কুমিল্লা চান্দিনার শরিফ (১৬)।

 

সর্বশেষ খবর