শুক্রবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
কথায় কথায় খুন

ডাকাতিতে বাধা দিলেই খুন, অবশেষে গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক

হবিগঞ্জ, নেত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জের ত্রাস আক্কাস বাহিনীর প্রধান আক্কাস মিয়াকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। বুধবার রাতে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থেকে র‌্যাব-৩ এর একটি দল তাকে গ্রেফতার করে। তার বাড়ি সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলায়। আক্কাস নেত্রকোনার খালীয়াজুড়ি থানায় খুন ও ডাকাতি মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি।

র‌্যাব জানায়, আক্কাস একজন পেশাদার খুনি ও ডাকাত। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১২টি মামলা রয়েছে। ২০১৬ সাল থেকে গ্রেফতার এড়াতে আত্মগোপনে চলে যান তিনি। তার স্ত্রী কেরানীগঞ্জের একটি ইটভাটায় কাজ করতেন। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে গতকাল আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন। তিনি বলেন, ২০১১ সালে নেত্রকোনার মনোরঞ্জন সরকারের বাড়িতে ডাকাতি করে আক্কাস ও তার দল। ডাকাতির সময় মনোরঞ্জনের ছেলে বাধা দেওয়ায় তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নেত্রকোনার খালীয়াজুড়ি থানায় আক্কাসকে প্রধান আসামি করে ওই বছরের ৩ সেপ্টেম্বর একটি মামলা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ১৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরে সেই মামলায় আক্কাসকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন আদালত। আক্কাসের বিরুদ্ধে ডাকাতি ও ডাকাতির মালামাল হেফাজতে রাখার চারটি মামলা, চুরি ও চোরাইকৃত মালামাল হেফাজতে রাখার তিনটি মামলা রয়েছে। এ ছাড়া ২০১৬ সালে আক্কাস সুনামগঞ্জের শাল্লায় ভাড়ায় মারামারি করতে গিয়ে দুই জনকে হত্যা করেন। এ ঘটনায় শাল্লা থানায় তার বিরুদ্ধে আরও তিনটি মামলা হয়। এর আগে ২০১৪ সালে সুনামগঞ্জের দিরাই এলাকায় ভাড়ায় মারামারি করতে গিয়ে ১০ জনকে মারাত্মক আহত করে আক্কাস ও তার বাহিনী। এ ঘটনায় দিরাই থানায় আরও একটি মামলা হয় তার বিরুদ্ধে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আক্কাসের বিরুদ্ধে ২০০৬ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত খুন, ডাকাতি, চুরি, মারামারি, লুটপাট, দাঙ্গা-হামলাসহ ১২টি মামলা রয়েছে। সুনামগঞ্জের শাল্লা থানায় একটি সাজা ওয়ারেন্টসহ ছয়টি ওয়ারেন্ট তামিলের অপেক্ষায় রয়েছে। মামলাগুলোতে আক্কাস একাধিকবার গ্রেফতার হন এবং জামিনে বের হয়ে পুনরায় একই অপরাধে লিপ্ত হন। ২০১৬ সালে আক্কাস সুনামগঞ্জ থেকে পালিয়ে রাজধানীতে এসে ছদ্মনামে বসবাস করতে শুরু করেন। কখনো রিকশা বা সিএনজি চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। একপর্যায়ে ঢাকায় একটি ডাকাত দল তৈরির চেষ্টা করেন। তার দলের অধিকাংশ সদস্য গ্রেফতার হলে তিনি ডাকাতি ছেড়ে মাছ বিক্রি শুরু করেন। ২০১৯ সালে নেত্রকোনায় খুনসহ ডাকাতি মামলায় তার যাবজ্জীবন সাজা হওয়ার পর তিনি কেরানীগঞ্জ এলাকায় ইটভাটায় স্ত্রীর কাছে আশ্রয় নেন। ঘুমানোর সময় সঙ্গে রাখতেন ধারালো ছুরি।

সর্বশেষ খবর