মঙ্গলবার, ৪ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

তিন খুনের নেপথ্যে টাকা চুরি

প্রতিদিন ডেস্ক

সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলায় মা ও দুই সন্তানকে হত্যার অভিযোগে পুলিশ এক যুবককে গ্রেফতার করেছে। তার ভাষ্য অনুযায়ী পুলিশ জানিয়েছে, টাকা চুরি করতে গিয়ে দেখে ফেলায় সে একে একে মা ও তার দুই সন্তানকে হত্যা করে। খবর : বিডিনিউজ।

সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) আরিফুর রহমান মন্ডল জানিয়েছেন, লাশ উদ্ধারের ২৪ ঘণ্টার মাথায় রবিবার রাতে আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে এ তথ্য দিয়েছে। গ্রেফতার তাঁত শ্রমিক আইয়ুব আলী ওরফে সাগর (২৮) পাশের উল্লাপাড়া উপজেলার নন্দিগাতি গ্রামের মৃত মোকছেদ আলীর ছেলে। তিনি হত্যাকান্ডের শিকার রওশন আরার (৩০) সৎ মামা হন। তার স্ত্রী ও তিন সন্তান রয়েছে।

গতকাল জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসপি আরিফুর রহমান মন্ডল তিন খুনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, তাঁত শ্রমিক আইয়ুব আলী ক্ষুদ্র ঋণ পরিচালনাকারী চারটি সংস্থা থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা ঋণ নেন। কিন্তু ঋণের কিস্তি তিনি দিতে পারছিলেন না। টাকা ধার চাইতে ২৬ সেপ্টেম্বর তিনি রওশন আরার বাড়িতে আসেন। কিন্তু আইয়ুব আলী ব্যর্থ হন। ওই সময় রওশনের ঘরে আইয়ুব আলী চারটি ট্রাঙ্ক দেখতে পান। তাতে তার ধারণা হয়, সেখানে টাকা আছে। এরপর ২৮ সেপ্টেম্বর আইয়ুব আলী আবার রওশনের বাড়ি যান। তখনো তিনি টাকা নিতে ব্যর্থ হন। পরে রাতে খাওয়া-দাওয়া  শেষে রওশনের বাড়িতেই থেকে যান। গভীর রাতে সবাই ঘুমানোর পর আইয়ুব আলী রওশনের শাড়ির আঁচল থেকে চাবি নিয়ে একে একে ট্রাঙ্ক খোলা শুরু করেন। শব্দে প্রথমে রওশন জেগে ওঠেন। তখন আইয়ুব আলী শিল দিয়ে রওশনের মাথা ও বুকে আঘাত করে হত্যা করেন। তল্লাশি চালানোর এক পর্যায়ে ছোট ছেলে মাহিন জেগে গেলে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। এরপর মেঝো ছেলে জিহাদ জেগে  গেলে তাকে হত্যা করেন আইয়ুব আলী। কিন্তু চারটি ট্রাঙ্ক থেকে তিনি টাকা ও স্বর্ণ কিছুই পাননি।

পুলিশ সুপার বলেন, টাকা ও মূল্যবান কিছু না পেয়ে হতাশ আইয়ুব রাতের বাকিটা সময় রওশনের ঘরেই কাটান। ভোরের দিকে বের হয়ে দরজায় শিকল দিয়ে বাড়ি চলে যান তিনি এবং স্বাভাবিকভাবেই সব কাজকর্ম করছিলেন। তার ধারণা ছিল, বিষয়টি কেউ টের পাবে না। তিনি আরও বলেন, আইয়ুব আলীর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রওশন আরার বাড়ি থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত শিলটি উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। উল্লেখ্য, উপজেলার মবুপুর গ্রামের বাড়ির শয়নকক্ষ থেকে গত শনিবার রওশন ও তার দুই ছেলে জিহাদ (১০) ও মাহিনের (৩) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। রওশন উল্লাপাড়া উপজেলার কয়রা গ্রামের মৎস্যজীবী সুলতান আলীর তৃতীয় স্ত্রী। এ ঘটনায় রওশনের ভাই নুরুজ্জামান ওরফে জামাল বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামির বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।

সর্বশেষ খবর