দেশে প্রায় ৬৪ ভাগ নারী অনলাইনে হয়রানি ও সহিংসতার শিকার। সর্বোচ্চ (৪৭.৬০ শতাংশ) হয়রানির শিকার হচ্ছেন ফেসবুকে। এ ছাড়া মেসেঞ্জারে (৩৫.৩৭%), ইনস্টাগ্রামে (৬.১১%), ইমোতে (৩.০৬%), হোয়াটসঅ্যাপে (১.৭৫%) এবং ইউটিউবে (১.৩১%) অনলাইন সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। ভিডিও কল, মোবাইল ফোন এবং এসএমএসের মাধ্যমেও হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন ৪.৮০ ভাগ নারী। চলতি বছরে অ্যাকশন এইড বাংলাদেশ পরিচালিত এক সমীক্ষায় এ তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল ব্র্যাক সেন্টার ইন-এ আয়োজিত ‘অনলাইনে নারীর প্রতি সহিংসতা : বাধা এবং উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় সমীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
এতে বলা হয় ৬৩.৫১ ভাগ নারী উত্তরদাতারা বলেছেন তারা অনলাইন সহিংসতার শিকার হয়েছেন, গত বছরে যা ছিল ৫০.১৯ ভাগ।
সাতক্ষীরা, সুনামগঞ্জ, পটুয়াখালী, বান্দরবান, কুড়িগ্রাম এবং লালমনিরহাট জেলার ১৫ থেকে ৩৫ বছর বয়সী ৩৫৯ জন নারীর ওপর সমীক্ষাটি পরিচালনা করা হয়। এতে দেখা গেছে, ৮০.৩৫ ভাগ নারী অনলাইন সহিংসতার মধ্যে ঘৃণ্য এবং আপত্তিকর যৌনতাপূর্ণ মন্তব্য, ৫৩.২৮ ভাগ নারী ইনবক্সে যৌনতাপূর্ণ ছবি গ্রহণ এবং যৌন সম্পর্ক স্থাপনের প্রস্তাব, ১৯.১৭ ভাগ নারী বৈষম্যমূলক মন্তব্যের শিকার হয়েছেন। ১৭.৪৭ ভাগ উত্তরদাতা বলেছেন যে, তাদের নামে অন্য কেউ অনলাইনে নকল আইডি তৈরির ফলে হয়রানির শিকার হয়েছেন। ১১.৭৯ ভাগ বলেছেন তাদের ব্যক্তিগত ছবি অনুমতি ছাড়াই সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা হয়েছে এবং ১১.৭৯ ভাগ নারী যৌন নিপীড়নের হুমকি পেয়েছেন। এ ছাড়া যৌন নিপীড়ন করার সময় ছবি বা ভিডিও রেকর্ড করে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট, অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি পোস্ট করে পরে ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশের হুমকি দিয়ে অর্থের জন্য ব্ল্যাকমেইল, ছবি সম্পাদনা করে পর্নোগ্রাফি সাইটে প্রকাশের মতো ঘটনাও জানিয়েছেন অনেক উত্তরদাতা। সমীক্ষায় বলা হয়, ১৪.৯১ ভাগ নারী অনলাইন সহিংসতার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জমা দিয়েছেন। ৮৫ ভাগের বেশি ভুক্তভোগী কোনো অভিযোগ জমা করেননি। এসব হয়রানির কারণে মানসিক ক্ষতির দিকটিও তুলে ধরা হয় সমীক্ষায়।