বুধবার, ৩০ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

৬৭ বছর বয়সে এসএসসি পাস

শেরপুর প্রতিনিধি

শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার আবুল কালাম আজাদ ওরফে ‘কবি কালাম’ ৬৭ বছর বয়সে এসএসসি পাস করেন। সোমবার প্রকাশিত এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে তিনি জিপিএ ২.৯৫ পেয়ে পাস করেন। তিনি উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন বকশীগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রাবাজ

রশিদা বেগম হাইস্কুল থেকে এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। তার বাড়ি শ্রীবরদী উপজেলার খড়িয়াকাজীরচর ইউনিয়নের লঙ্গরপাড়া গ্রামে। তিনি নিয়মিত কবিতা লিখেন বলে এলাকার মানুষ তাকে ‘কবি কালাম’ বলে ডাকেন। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তার জন্ম ১৯৫৫ সালের ১ মার্চ। সেই হিসাবে কালামের বয়স ৬৭। ১৯৭৬ সালে তিনি দশম শ্রেণির ছাত্র ছিলেন। ওই বছর তাঁদের বাড়িতে আগুন লেগে বই-খাতাসহ পরিবারের সবকিছু ছাই হয়ে যায়। পরিবার আর্থিক সংকটে পড়ে। পড়াশোনা আর হয়নি। জীবিকার তাগিদে একপর্যায়ে কালাম ঢাকায় চাকরি নেন একটি ডকইয়ার্ডে। ১৯৯৫ সালে চাকরি নিয়ে সৌদি আরবে যান। ২০১৩ সালে ফিরে আসেন বাড়িতে। তিনি প্রায় ৮ হাজার গান, কবিতা, ছড়া ও উপন্যাস লিখেছেন। এসব লেখা সংরক্ষণের জন্য ১৭টি বই আকারে বাঁধাই করে রেখেছেন তিনি।

 আর প্রকাশিত হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে লেখা ‘দেশরত্ন’ নামে একটি বই। তার বড় ছেলে সামসুদ্দিন মৌলিভীবাজারে একটি কামিল মাদরাসার প্রভাষক। মেজো ছেলে আরিফুল ইসলাম ইসলামিক ফাউন্ডেশনে চাকরি করেন এবং ছোট ছেলে আনিসুর রহমান গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করেছেন। কালামের লেখাপড়ার সনদ নেই। এটা তার দুঃখ। এই দুঃখ কাটাতে এই বয়সে পরীক্ষা হলে বসেন। এলাকাবাসী বলছেন শিক্ষার যে কোনো বয়স নেই তা সবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন কবি কালাম।

এ বয়সে পরীক্ষায় পাসের অনুভূতি জানতে চাইলে কালাম বলেন, খুব ভালো লাগছে। মনে হয় যুদ্ধ জয় করে বিজয়ী হলাম। পাস করাটা ছিল আমার চ্যালেঞ্জ। তিনি উচ্চমাধ্যমিক ও ডিগ্রি পর্যন্ত পড়বেন বলে জানিয়েছেন।

খড়িয়াকাজীরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. দুলাল মিয়া বলেছেন, স্বশিক্ষিত কালাম বৃদ্ধ বয়সে এই কৃতিত্বের জন্য পরিষদের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে। কালামের বিষয়টি সবার জন্য দৃষ্টান্ত হতে পারে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর