রবিবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

দুই ফলে বদলে গেছে জীবন

রেজাউল করিম মানিক, লালমনিরহাট

দুই ফলে বদলে গেছে জীবন

উত্তরের জনপদের সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাটে এক সময় তামাক আর ভুট্টা চাষাবাদ হলেও এখন এই জেলায় চাষ হচ্ছে কমলা ও মাল্টা। অন্যান্য কৃষি ফসলের পাশাপাশি বাণিজ্যিকভাবে ফলের চাষ করে মঙ্গা জয়ের স্বপ্ন দেখছেন এ জেলার কৃষকরা। বারি মাল্টা, দার্জিলিং কমলা, চায়না কমলাসহ বিভিন্ন ফলের চাষে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে উত্তরের এই জনপদে। এতে শত শত মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ হওয়ার পাশাপাশি স্বল্পমূল্যে ভিটামিন সি এর অভাব পূরণ ও উচ্চাভিলাষী ভিনদেশি এসব ফল হাতের নাগালেই কিনতে পারছেন এখানকার মানুষ। লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী, হাতিবান্ধা, পাটগ্রাম, হাঁড়িভাঙা, মহেন্দ্রনগর এলাকায় গড়ে উঠেছে প্রায় অর্ধশতাধিক কমলা ও মাল্টার বাগান। চলতি মৌসুমে এ জেলায় এসব ফলের ভালো ফলন হওয়ায় কমছে আমদানিনির্ভরতা। ফলে এখানকার উৎপাদিত সুস্বাদু ফল স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রংপুর-বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় রপ্তানি করা হচ্ছে। আর এ মৌসুমে ভালো দাম পাওয়ায় খুশি কমলা ও মাল্টা বাগান মালিকরা।

বাগান মালিক একরামুল হক জানান, হাঁড়িভাঙা এলাকায় বিমানবাহিনীর ৪ একর জায়গা লিজ নিয়ে তিনি কমলা ও মাল্টার চাষ শুরু করেন। প্রথমে তার বাগানে আড়াই হাজার মাল্টা ও ১ হাজার কমলার গাছ লাগান। তিন বছর পরিচর্চা করার পর সেই বাগানের গাছে ফল আসতে শুরু করে। গত বছর বাগান থেকে প্রায় ৭০ লাখ টাকার ফল বিক্রি করেন তিনি। এ বছর কোটি টাকার ফল বিক্রি করার সম্ভাবনার কথা জানান বাগান মালিক একরামুল।

মাল্টা বাগান দেখতে আসা মনিরুজ্জামান জানান, আমাদের লালমনিরহাটে এত সুন্দর ফলের বাগান, সত্যি প্রশংসার দাবিদার। মনে হচ্ছে আমরা নেপাল কিংবা ভুটানে বেড়াতে এসেছি। এ অঞ্চলে আরও ফলের বাগান বাড়ানোর জন্য উদ্যোগ নেওয়া দরকার, এতে লাভের পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কর্মকর্তা আশরাফুল আলম বলেন, লালমনিরহাটের বেশকিছু এলাকায় বিভিন্ন প্রজাতির কমলা ও মাল্টা চাষ হয়েছে। বাজারে ফলের প্রচুর চাহিদাও রয়েছে। আমরা বাগান উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ ও সহযোগিতা করছি। এর ফলে এখানে ফলচাষি যেমন বাড়ছে তেমনি দিন দিন নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হচ্ছে। আমাদের পরামর্শ থাকবে ফল চাষে আগ্রহীরা বাগান করার আগে যেন কৃষি অফিসে যোগাযোগ করেন। এতে বাগানের জায়গাটি উপযোগী কি না সেটি যেমন জানা যাবে তেমনি কৃষি বিভাগ এবং চাষিদের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ার পাশাপাশি ঝুঁকিও কমবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর