বৃহস্পতিবার, ১২ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

যানজট ভোগান্তি নগরীতে

নিজস্ব প্রতিবেদক

যানজট ভোগান্তি নগরীতে

রাজধানীতে গতকাল যানজটের ভোগান্তিতে অনেকেই হেঁটে গন্তব্যে রওনা হন -জয়ীতা রায়

তীব্র যানজটে দিনভর ভোগান্তির শিকার হয়েছেন নগরবাসী। বিশেষ করে রাজধানীর মতিঝিল ও পল্টনমুখী সড়কে যানজট বেশি ছিল। এ ছাড়া বাড্ডা থেকে রামপুরার আবুল হোটেলের সামনের অংশ পর্যন্ত সড়কে যানবাহনের ব্যাপক চাপ ছিল। থেমে থেমে চলছিল যানবাহন। এজন্য নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে বিএনপির গণ অবস্থান কর্মসূচি ও এর প্রতিবাদে আওয়ামী লীগের সমাবেশকে দায়ী করছেন কেউ কেউ। ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকাল সকালে এ যানজট শুরু হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা আরও তীব্র হয়। বিশেষ করে ফার্মগেট হয়ে শাহবাগ এবং প্রেস ক্লাব পর্যন্ত তীব্র যানজটে পড়তে হয়েছে যাত্রীদের। ফার্মগেটের আনন্দ সিনেমা হলের সামনে বিএনপি-জামায়াতের গণ অবস্থান কর্মসূচির প্রতিবাদে সমাবেশ করে আওয়ামী লীগ। যানজটে রাস্তার এক পাশের সড়কে গাড়ি চলাচলের সুযোগ ছিল না। তবে বিপরীত পাশের সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক ছিল। দুপুরের পর গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করে। অনেকে যানবাহন থেকে নেমে হেঁটে গন্তব্যে ছুটেছেন।

ফার্মগেট থেকে প্রেস ক্লাবে তীব্র যানজট পেরিয়ে আসছিলেন গণমাধ্যমকর্মী বাবলু হাসান। তিনি বলেন, ‘আমি বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কারওয়ান বাজার থেকে শাহবাগ হয়ে প্রেস ক্লাবের দিকে আসছিলাম। পথে তীব্র যানজটে পড়ি। পুরো রাস্তা জট পেরিয়েই আসতে হয়েছে।’ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে প্রেস ক্লাবের সামনে যানজটে আটকে থাকা বাসচালক মনির হোসেন বলেন, ‘ফার্মগেট পার হওয়ার পর ৪০ মিনিটের মতো বাস যানজটে আটকে ছিল। পরে অনেকটা স্বাভাবিকভাবেই এসেছি।’

জানা গেছে, বিএনপির গণ অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিতে সকাল ৯টার পরই বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতা-কর্মীরা আসতে থাকেন। অনেকেই আসেন খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে। ফলে সড়কে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তায় এর প্রভাব পড়তে থাকে। ফলে কাকরাইল, পুরানা পল্টন, প্রেস ক্লাব, ফকিরাপুল, সেগুনবাগিচায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়।

যানজটের কারণে সময়মতো অফিসে পৌঁছাতে পারেননি মিরপুর থেকে মতিঝিলে আসা সাব্বির আহমেদ। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি খোলা মাঠে হওয়া উচিত। তা না হলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি কমবে না। ভিক্টর পরিবহনের যাত্রী আবদুল ওয়াহাব বলেন, সকাল ১০টার মধ্যে তার মতিঝিল পৌঁছানোর কথা। কিন্তু যানজটের যা পরিস্থিতি, তাতে পৌঁছাতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। যানজটে বিরক্তি প্রকাশ করে তিনি বলেন, সভা-সমাবেশ করে রাজনৈতিক দল, আর ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ।

স্বাভাবিক সময়ে মোটরসাইকেলে রামপুরা থেকে দিলকুশা যেতে আধঘণ্টার মতো লাগে। কিন্তু সকাল ১০টার দিকে এ পথ যেতে এক ঘণ্টার মতো লাগার কথা জানালেন এক ভুক্তভোগী। রাজধানীর অন্যান্য অংশের অবস্থাও একই রকম বলে কয়েকজন ভুক্তভোগী জানান। অবশ্য মোটরসাইকেল আরোহীদের চেয়ে বাসের যাত্রীদের ভোগান্তি বেশি ছিল।

শাহবাগ মোড়ে ওয়েলকাম পরিবহনের এক যাত্রী জানান, তিনি সাভার থেকে গুলিস্তান যাচ্ছিলেন। ফার্মগেটের আগ পর্যন্ত যানজট পরিস্থিতি স্বাভাবিক মনে হয়েছে। কিন্তু ফার্মগেট থেকে তীব্র যানজট পেয়েছেন। ফার্মগেট থেকে শাহবাগ পর্যন্ত আসতে প্রায় ৪৫ মিনিট লেগেছে। শিকড় পরিবহনের হেলপার সোহেল মিয়া বলেন, যানজট ঢাকা শহরে নিয়মিত ঘটনা। কিন্তু আজকের (গতকাল) অবস্থা অন্যদিনের চেয়ে খারাপ। জানা গেছে, রাজধানীর নয়াপল্টনসহ কয়েকটি স্থানে বিএনপিসহ সরকারবিরোধীরা গণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা পাল্টা কর্মসূচি পালন করেছেন। এ কারণে সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। এ বিষয়ে ডিএমপির ট্রাফিক রমনা বিভাগের এডিসি মো. সোহেল রানা বলেন, বিএনপির গণ অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে সকালে যানজটের সৃষ্টি হয়। তবে সেটি তেমন দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। গাড়ি চলাচলে তেমন কোনো সমস্যা হয়নি। ট্রাফিক রামপুরা জোনের এসি মো. তানভীর রহমান বলেন, সকালে অফিসের সময় কিছুটা যানজট থাকেই। অন্য দিনের তুলনায় বুধবার গাড়ির চাপ বেশি থাকে। এ ছাড়া ফকিরাপুলের দিকে রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে যানজট বেড়ে যায়। তবে যানজট বেশি সময় স্থায়ী হয়নি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর