শিরোনাম
শুক্রবার, ২০ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

চিংড়ি রপ্তানি কমেছে ৩২ শতাংশ

রাশেদ হোসাইন

চিংড়ি রপ্তানি কমেছে ৩২ শতাংশ

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে দেশের চিংড়ি রপ্তানি কমে গেছে। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে চিংড়ি রপ্তানির পরিমাণ প্রায় ৩২ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৮৩ দশমিক ২৩ মিলিয়ন ডলার। আগের অর্থবছর একই সময়ে রপ্তানি হয়েছিল ২৬৮ দশমিক ৯৫ মিলিয়ন ডলার। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর পরিসংখ্যান বলছে, গত কয়েক বছর ধারাবাহিকভাবে চিংড়ি রপ্তানি বাড়লেও চলতি অর্থবছর কমে গেছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে চিংড়ি রপ্তানি হয়েছিল ৪০৭ দশমিক ২৫ মিলিয়ন ডলারের। ২০২০-২১ অর্থবছরে রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৩২৮ দশমিক ৮৪ মিলিয়ন ডলার। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রথম ছয় মাসে ২৩৪ দশমিক ৪১ মিলিয়ন ডলারের চিংড়ি রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। তবে এ সময় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রপ্তানি কম হয়েছে ৫১ দশমিক ১৮ মিলিয়ন ডলার।

বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএফএফইএ) সূত্র জানায়, বাংলাদেশের হিমায়িত চিংড়ির ৮৫ শতাংশ রপ্তানি হয় ইউরোপে। এ ছাড়া বাকি ১৫ শতাংশ চিংড়ি আমেরিকা, জাপানসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশে যায়। দেশে করোনা প্রকোপ শুরু হলে চিংড়ি রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায়। ফলে আর্থিক মন্দার কবলে পড়ে দেশের রপ্তানি আয়ের অন্যতম এ খাত। করোনা প্রকোপ কমে আসার পর হিমায়িত চিংড়ি রপ্তানি ঘুরে দাঁড়ানোর আগেই শুরু হয় ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন। গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে দেশ দুটিতে চিংড়ি রপ্তানি বন্ধ হয়ে গেছে। ইউরোপের বাকি দেশগুলোতে যে চিংড়ি রপ্তানি হচ্ছে, তার পরিমাণও অনেক কম। ফলে চিংড়ি রপ্তানিকারকরা তীব্র হতাশায় পড়েছেন। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) তথ্য মতে, ২০২০-২১ অর্থবছরে চিংড়ি রপ্তানি হয় ৩২৮.৮৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০২১-২২ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৩৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। রপ্তানি হয় ৪০৭ দশমিক ২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা লক্ষ্যমাত্রা থেকেও প্রায় ৭৭ মিলিয়ন মর্কিন ডলার বেশি। ২০২২- ২৩ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসে অর্জন হয় মাত্র ১৮৩.২৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর আগের বছর ও জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত রপ্তানি হয় ২৬৮.৯৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। জানা যায়, ২০২১ সালে ২৫ হাজার ৫৪৪ মেট্রিক টন চিংড়ি রপ্তানি হয়। এর আগের বছর ২০২০ সালে ইউরোপে চিংড়ি রপ্তানি হয় ২২ হাজার ৯১ মেট্রিক টন। ২০২০-২১ অর্থবছরে হিমায়িত চিংড়ির সম্ভাবনাময় বাজার হিসেবে রাশিয়ায় ৭৩১ মেট্রিক টন ও ইউক্রেনে ১১৯ মেট্রিক টন রপ্তানি হয়। যেখান থেকে বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়েছিল ৬৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। ২০২১-২২ অর্থবছরে রপ্তানি থেকে আয় হয় ২৩ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকে এ দুটি দেশে চিংড়ি রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায়। বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএফইএ) সভাপতি মো. আমিন উল্লাহ বলেন, ২০২২-এর প্রথমার্ধ পর্যন্ত চিংড়ি রপ্তানি ভালো হয়েছে। জুন পর্যন্ত রপ্তানি হয় প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার চিংড়ি। যা আগের বছরের তুলনায় ১৫ শতাংশ বেশি। তবে জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত চিংড়ি রপ্তানি কমে গেছে। চিংড়ি হলো আন্তর্জাতিক পণ্য। আন্তর্জাতিকভাবে এ পণ্যের দাম নির্ধারণ হয়ে থাকে। যুদ্ধের কারণে ইউরোপের মানুষের এখন এনার্জি, বিদ্যুৎ প্রয়োজন। এ ছাড়া ইউরোপে ব্যাপক মুদ্রাস্ফীতি হওয়ায় চিংড়ির দাম কমে গেছে। তাই বাজারও কমে গেছে।

সর্বশেষ খবর