বুধবার, ২৫ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

মাকে পাঁচ টুকরা করা ছেলেসহ ফাঁসি সাতজনের

নোয়াখালী প্রতিনিধি

সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় মাকে পাঁচ টুকরা করে হত্যা মামলায় ছেলেসহ সাত আসামিকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছেন আদালত। গতকাল দুপুরে নোয়াখালীর জেলা ও দায়রা জজ নিলুফার সুলতানা এ রায় ঘোষণা করেন। পাশাপাশি প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। দন্ডিতরা হলেন- নিহতের ছেলে হুমায়ুন কবির (২৯), নিরব (২৬), নুর ইসলাম (৩২), কালাম (৩০), সুমন (৩৩), হামিদ (২৮) ও ইসমাইল (৩০)। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) গুলজার আহমেদ জুয়েল জানান, ২০২০ সালের ৭ অক্টোবর বিকালে সুবর্ণচর উপজেলার জাহাজমারা গ্রামের একটি ধান খেত থেকে গৃহবধূ নুরজাহানের (৫৮) মাথাসহ দুই টুকরা উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন একই খেত থেকে লাশের আরও তিন টুকরা উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় প্রথমে নিহত নারীর ছেলে হুমায়ুন কবির বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা করেন। তদন্তে একপর্যায়ে সন্দেহভাজন হিসেবে মো. নিরব ও কসাই নুর ইসলাম নামের দুজনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে হত্যা মামলার বাদী নিজেই জড়িত বলে তথ্য বেরিয়ে আসে। এরপর পুলিশ হুমায়ুনকে অন্যতম আসামি করে অন্য একটি মামলা করে। মামলায় উল্লেখ করা হয়, নুরজাহানের প্রথম সংসারের ছেলে বেলাল হোসেন ঘটনার বছরখানেক আগে মারা যান। তার রেখে যাওয়া ঋণের টাকা পরিশোধ নিয়ে দ্বিতীয় সংসারের ছেলে হুমায়ুন কবিরের সঙ্গে মায়ের বিতন্ডা হয়। এর জেরেই মাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন হুমায়ুন। আর সেই হত্যাকান্ডে বন্ধু, প্রতিবেশী ও স্বজনের সহায়তা নেন তিনি।

পরিকল্পনা অনুযায়ী ৬ অক্টোবর রাতে ওই নারীকে প্রথমে বালিশচাপা দিয়ে হত্যা করা হয়। পরে লাশ পাঁচ টুকরা করে প্রতিবেশী পাওনাদারদের ধান খেতে রেখে আসে। হত্যায় ব্যবহৃত মাংস কাটার ধারালো অস্ত্র, বঁটি, কোদাল ও নারীর পরনের শাড়ি উদ্ধার করে পুলিশ। মামলার পাঁচ আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। ২৭ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে রায় ঘোষণা করেন বিচারক।

আসামি হুমায়ুন জবানবন্দিতে জানান, বেলালের স্ত্রীর জমি থেকে দুই শতাংশ হামিদকে ও বাকি আট শতাংশ ইসমাইলকে দেওয়ার মৌখিক সিদ্ধান্ত হয়। তারপর মায়ের জমি সমান পাঁচ ভাগ করে হুমায়ুন, নোমান, সুমন, কালাম ও কসাই নুর ইসলামকে দেওয়া হবে। এ প্রতিশ্রুতিতে তারা গত ৬ অক্টোবর রাতের কোনো একসময় ঘরের মধ্যে বালিশ চাপা দিয়ে তাকে হত্যা করে পাঁচ টুকরা করে পাওনাদারদের ধান খেতে তা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখে তারা। আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবদুর রহমান ন্যায়বিচার পাননি দাবি করে বলেন, আমরা এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করব।

 

সর্বশেষ খবর