মঙ্গলবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

কারখানা বন্ধের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ধর্মঘট শ্রমিকদের

গাজীপুর প্রতিনিধি

গাজীপুরে নিট এশিয়া গ্রুপের একটি পোশাক কারখানা বন্ধ ঘোষণার প্রতিবাদে ও খোলার দাবিতে শ্রমিকরা অবস্থান ধর্মঘট ও বিক্ষোভ করেছেন। গতকাল কালিয়াকৈর উপজেলার রতনপুর এলাকার নিট এশিয়া লিমিটেডের ৩ নম্বর ইউনিট কারখানার শ্রমিকরা কারখানার সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন।

পুলিশ ও আন্দোলনরত শ্রমিকরা জানান, কালিয়াকৈর উপজেলার রতনপুর এলাকায় অবস্থিত নিট এশিয়া লিমিটেডের ৩ নম্বর ইউনিট কারখানার শ্রমিকরা গত কয়েকদিন ধরে কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিদিন দুই ঘণ্টা করে ওভার টাইমসহ বিভিন্ন দাবি জানিয়ে আসছিলেন। কর্তৃপক্ষের আশ্বাস না পেয়ে তারা শনিবার (২৮ জানুয়ারি) কর্মবিরতি ও ভবনের চতুর্থ তলায় বিক্ষোভ-সমাবেশ শুরু করেন। এ সময় কারখানার এক সুপারভাইজারকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন মহাব্যবস্থাপক (উৎপাদন)। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে শ্রমিকদের মাঝে অসন্তোষ দেখা দেয় এবং তারা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। এতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। শ্রমিকরা ওই কর্মকর্তার শাস্তি ও তার অপসারণ দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। ওই দাবিতে রবিবার তারা কারখানায় কর্মবিরতি এবং বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেন। একপর্যায়ে শ্রমিক অসন্তোষের মুখে কারখানাটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেন কর্তৃপক্ষ। গাজীপুর শিল্প পুলিশের ইন্সপেক্টর নিতাই চন্দ্র সরকার ও স্থানীয়রা জানান, গতকাল সকালে শ্রমিকরা কারখানার গেটে টানানো অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধের নোটিশ দেখে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে তারা কারখানার গেটের সামনে অবস্থান নিয়ে কারখানার মহাব্যবস্থাপকসহ (উৎপাদন) কয়েক কর্মকর্তার অপসারণসহ বিভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন। শ্রমিকরা তাদের সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দেওয়ার জন্য একই প্রতিষ্ঠানের পার্শ্ববর্তী ২ নম্বর ইউনিটের কারখানায় গিয়ে শ্রমিকদের আহ্বান জানান। সহকর্মীদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ২ নম্বর ইউনিটের কিছু শ্রমিক আন্দোলনে অংশ নেন। খবর পেয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। শ্রমিক বিক্ষোভের খবর পেয়ে বিজিএমইএসহ স্থানীয় নেতারা আসেন। তারা মঙ্গলবার (আজ) বিজিএমইএর ঢাকার দফতরে বিজিএমইএ কর্মকর্তা ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে কারখানা মালিক পক্ষের আলোচনার আশ্বাস দিলে বিকালে আন্দোলনরতরা কর্মসূচি স্থগিত করে কারখানা এলাকা ত্যাগ করেন।

কারখানার সহ-মহাব্যবস্থাপক তরিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত নোটিশে জানানো হয়, গত ২৮ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টায় চতুর্থ তলায় কর্মরত কিছু উচ্ছৃঙ্খল শ্রমিক অহেতুক কাজ বন্ধ করে সমাবেশ করেন এবং এতে অন্যান্য ফ্লোরের শ্রমিকরাও অংশ নেন। এ সময় তারা নানা অযৌক্তিক দাবি জানাতে থাকেন। এতে কারখানার উৎপাদন কাজ বন্ধ হয়ে যায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে কর্তৃপক্ষ কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেন। কারখানার মালিক মতিন চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, শ্রমিকরা অযৌক্তিক ওভারটাইম দেওয়ার দাবি জানান। অর্ডার না থাকায় অতিরিক্ত কাজ করানো হয় না। আমাদের অর্ডার খুবই কম। আমরা প্রতিদিন গড়ে ছয় ঘণ্টা থেকে আট ঘণ্টা কাজ করাই। কিন্তু শ্রমিকরা অযৌক্তিকভাবে প্রতিদিন দুই ঘণ্টা করে ওভারটাইম দাবি করছেন। তাছাড়া কয়েকজন কর্মকর্তাকে অপসারণ দাবি জানিয়ে কারখানার কর্ম পরিবেশ নষ্ট করছেন। এ পরিস্থিতিতে আমরা কারখানা বন্ধ করেছি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে কারখানা খুলে দেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর