মঙ্গলবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

আরও ৫ শতাধিক রোহিঙ্গা আনা হলো উখিয়া ক্যাম্পে

কক্সবাজার প্রতিনিধি

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তের শূন্যরেখা থেকে ষষ্ঠ ধাপে আরও ৫ শতাধিক রোহিঙ্গাকে কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালী ট্রানজিট কেন্দ্রে আনা হয়েছে। গতকাল সকাল সোয়া ১০টার দিকে স্থানান্তর কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বিকাল ৫টা পর্যন্ত ১০৩ পরিবারের ৫৯২ জন রোহিঙ্গাকে ট্রানজিট কেন্দ্রে সরিয়ে আনা হয়েছে। সেখানে আরও ২৬৭ পরিবারের ১ হাজার ২১৭ জন রোহিঙ্গা অবস্থান করছেন।

অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মুহাম্মদ সামসু-দ্দৌজা বলেন, কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তুমব্রু সীমান্ত থেকে যানবাহনে করে শূন্যরেখার রোহিঙ্গাদের ৪ কিলোমিটার দূরের উখিয়ার বালুখালীর ট্রানজিট কেন্দ্রে আনা হচ্ছে। কেন্দ্রে রোহিঙ্গাদের নিবন্ধন কার্ড যাচাই-বাছাই শেষে উখিয়ার বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে তাদের স্থানান্তর করা হচ্ছে। ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, রবিবার পঞ্চম ধাপে ১০১ পরিবারের ৫৪৩ রোহিঙ্গাকে তুমব্রু থেকে উখিয়ার ট্রানজিট কেন্দ্রে পাঠানো হয়। ষষ্ঠ ধাপে ১০৩ পরিবারের ৫৯২ রোহিঙ্গাকে ট্রানজিট কেন্দ্রে পাঠানোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আগের পাঁচ ধাপে তুমব্রু থেকে ২৯১ পরিবারের ১ হাজার ৭৫৩ রোহিঙ্গাকে স্থানান্তর করা হয়েছে।

ঘুমধুম ইউপি কার্যালয়ের তথ্যমতে, ৫ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া প্রথম ধাপে স্থানান্তর করা হয়েছিল ৩৬ পরিবারের ১৮৪ জনকে। ৬ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় ধাপে ৫৩ পরিবারের ২৭৩, ৮ ফেব্রুয়ারি তৃতীয় ধাপে ৫১ পরিবারে ২৭২, ৯ ফেব্রুয়ারি চতুর্থ ধাপে ৫০ পরিবারে ৪৮১ ও ১২ ফেব্রুয়ারি পঞ্চম ধাপে ১০১ পরিবারে ৫৪৩ রোহিঙ্গাকে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে তুমব্রুতে অবস্থান করছেন শূন্যরেখার আরও ২৬৭ পরিবারের ১ হাজার ২১৭ জন রোহিঙ্গা।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে প্রত্যাবাসন না হওয়া পর্যন্ত শূন্যরেখার এই রোহিঙ্গারা উখিয়ার বিভিন্ন আশ্রয় শিবিরে থাকবেন জানিয়ে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ধাপে ধাপে তুমব্রু সীমান্তে অবস্থানরত সব রোহিঙ্গাকে ট্রানজিট কেন্দ্রে সরিয়ে আনা হবে। তুমব্রুতে কোনো রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবির রাখা হবে না।

পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলেন, গত ১৮ জানুয়ারি শূন্যরেখা আশ্রয় শিবিরে মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মির (আরসা) সঙ্গে মিয়ানমারের আরেকটি সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) মধ্যে আধিপত্য বিস্তার কেন্দ্র করে সংঘর্ষ ও গোলাগুলি হয়েছে। এতে একজন রোহিঙ্গা নিহত ও দুই শিশু আহত হয়। এ ঘটনার পর শূন্যরেখার আশ্রয় শিবিরে ৬৩০টির বেশি ঘর আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এরপর ৪ হাজার ৩০০ রোহিঙ্গা গৃহহীন হয়ে বাংলাদেশ ভূখণ্ডে তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে আশ্রয় নেয়।

 

 

সর্বশেষ খবর