শিরোনাম
শুক্রবার, ১৭ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

ছাত্রীর শ্লীলতাহানির ঘটনায় তুলকালাম

কুমিল্লা প্রতিনিধি

কুমিল্লার দেবিদ্বারে প্রধান শিক্ষকের কাছে ছাত্রীর শ্লীলতাহানিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের পর গতকাল শিক্ষার্থীরা কেউ বিদ্যালয়ে আসেনি। বুধবার রাতে পুলিশি অভিযানে ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এতে পুরো এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। স্থানীয় মাশিকাড়া বাজারে খোলেনি অধিকাংশ দোকান। এদিকে পুলিশের খোয়া যাওয়া শর্টগানটি গতকাল ভোরে উদ্ধার করেছে পুলিশ। ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে দেবিদ্বার থানায় ওই প্রধান শিক্ষককে একমাত্র আসামি দিয়ে মামলা করেছেন। অপর দিকে পুলিশের ওপর হামলা, পুলিশের কর্তব্য কাজে বাধাদানের ঘটনায় দেবিদ্বার থানার উপপরিদর্শক মুক্তার আহমেদ মলি বাদী হয়ে এজহারভুক্ত ১০ জন ও অজ্ঞাতনামা ২০০ জনকে অভিযুক্ত করে থানায় মামলা করেছেন।

বৃহস্পতিবার মাশিকাড়া উচ্চবিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি হাজী মো. বাহালুল হক, সহকারী শিক্ষক-শিক্ষিকাসহ পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা বিদ্যালয়ে উপস্থিত রয়েছেন। তবে শিক্ষার্থীশূন্য বিদ্যালয়। পাশর্^বর্তী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক থাকলেও সেখানেও কয়েকজন মাত্র শিক্ষার্থী এসেছে। বিদ্যালয়ের বিভিন্ন কক্ষের দরজা-জানালা ভাঙচুরের চিহ্ন দেখা গেছে। ছড়িয়ে আছে ইট-পাটকেল। মাশিকাড়া উচ্চবিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি হাজী মো. বাহালুল হক জানান, বিদ্যালয় খোলা থাকলেও শিক্ষার্থীরা কেউই বিদ্যালয়ে আসেনি। দেবিদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ কমল কৃষ্ণ ধর জানান, শ্লীলতাহানির ঘটনায় ভিক্টিমের বাবা বাদী হয়ে মামলা করেছেন। পুলিশের কাজে বাধাদান এবং অস্ত্র ছিনতাইয়ের ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা হয়। উল্লেখ্য, বুধবার প্রধান শিক্ষক দুই দফায় ওই ছাত্রীর শ্লীতাহানি ঘটান। ওই ঘটনার পর ছাত্রীর সহপাঠীরা তার বাবার কাছে ঘটনার বর্ণনা দেন। ঘটনাটি জানাজানির পর বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী বুধবার দুপুর থেকে রাত অবধি প্রধান শিক্ষকের কার্যালয় ঘেরাও করে রাখেন। এ সময় প্রধান শিক্ষককে রক্ষায় তার পক্ষে বহিরাগত কিছু লোকজন এসে ছাত্রদের ওপর হামলা চালায়। এ হামলায় অন্তত ৮-১০ শিক্ষার্থী আহত হয়। এতে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালায়। এ সময় পুলিশও অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। রাতে স্কুল ক্যাম্পাসের বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পুলিশ লাঠিচার্জ, সাউন্ডগ্রেনেড নিক্ষেপ ও রাবার বুলেট ছুড়লে অন্তত ১০ জন গুলিবিদ্ধ হন। পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান ও দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডেজী চক্রবর্তী প্রধান শিক্ষকসহ পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করে আনার পথে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া করা হয়। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষে পুলিশের একটি শর্টগান খোয়া যায়। বিক্ষোভকারীরা ডিবি পুলিশসহ তিন পুলিশকে মারধর করে এবং এক পুলিশ সদস্যকে আটক করে রাখে। রাত সাড়ে ৯টায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ তাকে উদ্ধারে এলাকায় অভিযান চালায়। ওই সময় রাত ১০টা পর্যন্ত এলাকাবাসীর সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়।

সর্বশেষ খবর