রবিবার, ১৯ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

ফিল্মি স্টাইলে অপহরণ পাহাড়ে : পুলিশ

কক্সবাজার প্রতিনিধি

কক্সবাজারের টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের পাহাড় থেকে বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) ৯ জনকে অপহরণ করা হয়। দুজনকে ছেড়ে দিয়ে সাতজনকে জিম্মি করে আদায় করা হয় মুক্তিপণ। এই সাতজনের মধ্যে তিনজন অপহরণের ঘটনার সঙ্গে জড়িত।

তাদের উদ্ধারের পর গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। এ ছাড়া ওই চক্রের ৬ সদস্যকে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। এর মধ্যে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, টেকনাফের পাহাড়ে অপহরণ যেন সিনেমার গল্প। অধিকতর তদন্তের জন্য গ্রেফতার হওয়া পাঁচজনকে জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রাখা হয়েছে। গতকাল দুপুরে কক্সবাজার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মাহফুজুল ইসলাম।

তিনি জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের জাহাজপুরা পাহাড়ি এলাকা থেকে ৯ জনকে অপহরণ করা হয়। পরে মোহাম্মদ আমির (১১) ও রিফাত উল্লাহ (১২) নামে দুই কিশোরকে ছেড়ে দেওয়া হয়। জিম্মি রাখা হয় সাতজনকে। জিম্মিদের শুক্রবার সন্ধ্যায় পুলিশ উদ্ধার করে। এরা হলেন- জাহাজপুরা গ্রামের গিয়াস উদ্দিন (১৭), ফজল করিম (৩৮), জাবেরুল ইসলাম (৩৫), আরিফ উল্লাহ (২২), মোহাম্মদ রশিদ (২৮), মোহাম্মদ জাফর (৩৮), মোহাম্মদ জায়নুল ইসলাম (৪৫)।

এদের মধ্যে অপহরণের ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন গিয়াস উদ্দিন, জায়নুল ইসলাম ও আরিফ উল্লাহ। অপহরণ চক্রের চিহ্নিত সদস্যরা হলেন- স্থানীয় চৌকিদার মোহাম্মদ ইছাক, সেলিম, আইয়ুব, মুসা, কালু ও নুরুল। এর মধ্যে ইছাক ও সেলিমকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এসপি জানান, বৃহস্পতিবার বাহারছড়া পাহাড়ি এলাকায় পানের বরজে কাজ করতে যান অপহৃতরা। দুপুরে সেখান থেকে তাদের ধরে নিয়ে যান ছয়জন লোক। দুজনকে ছেড়ে দিলেও শুক্রবার সকাল ১০টা পর্যন্ত সাতজন জিম্মি ছিলেন। সবাই মিলে ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিয়ে তারা ছাড়া পান। কিন্তু রহস্যজনক কারণে আরও ৮ ঘণ্টা পাহাড়ে ছিলেন তারা। সন্ধ্যায় কৌশলে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে। এই সাতজনের মধ্যে গিয়াস উদ্দিন, জায়নুল ইসলাম ও আরিফ উল্লাহ অপহরণ চক্রের সঙ্গে জড়িত। তাদের কাছে মোবাইল ছিল। মুক্তিপণের জন্য তারা নিজের পরিবারসহ বাকি চারজনের পরিবারে দফায় দফায় ফোন করেন। জিম্মি থাকা অবস্থায় এই তিনজন ছাড়া বাকি চারজন মারধরের শিকার হন। প্রসঙ্গত, গত ছয় মাসে টেকনাফে পাহাড়কেন্দ্রিক ৪১ জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। এদের ১৭ জন রোহিঙ্গা, ২৪ জন স্থানীয় বাসিন্দা। এর মধ্যে মুক্তিপণ দিয়ে ফিরে আসার তথ্য জানিয়েছিল ২২ জন।

সর্বশেষ খবর