শনিবার, ২৫ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

বিলুপ্ত মদনটাক উদ্ধার

রিয়াজুল ইসলাম, দিনাজপুর

বিলুপ্ত মদনটাক উদ্ধার

একটি মদনটাক অসুস্থ অবস্থায় বীরগঞ্জে উদ্ধার করা হয়েছে। মদনটাক আজ বিলুপ্তির পথে। অথচ মদনটাক পরিবেশের জন্য উপকারী একটি পাখি। খাদ্যাভাব ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে এ পাখি এ অঞ্চলে এখন দেখা যায় না। উদ্ধারকৃত পাখিটি চিকিৎসাসেবা শেষে বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করেছে বীরগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ দফতর ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল। পাখিটিকে রামসাগর জাতীয় উদ্যানের নিরাপদ হেফাজতে রাখার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। বীরগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ দফতর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের লাইভস্টক প্রোভাইডার মো. মনতাজুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার বিকালে বীরগঞ্জের শতগ্রাম ইউপির প্রসাদপাড়া গ্রামের চৌরাস্তাসংলগ্ন এলাকায় বাঁশবাগানে একটি বড় পাখি এসে পড়ে। পাখিটি খুব দুর্বল হওয়ার কারণে উড়তে পারছে না এবং এলাকার লোকজন ধরার জন্য চেষ্টা করছে এমন সংবাদে ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। পাখিটিকে উদ্ধার করে উপজেলা প্রাণিসম্পদ দফতরে নিয়ে আসা হয়। পরে পাখিটিকে চিকিৎসা দিয়ে বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. ওসমান গনি জানান, লোকালয়ে পাখিটির অবস্থানের সংবাদ পেয়ে দ্রুত উদ্ধার করে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসা প্রদান করেছি। পাখিটির ওজন ২ কেজি ৮০০ গ্রাম। পাখি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. ওসমান গনি, উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জন ডা. শামিমা বেগম, বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিরঞ্জন রায় এবং স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী। বীরগঞ্জ বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিরঞ্জন রায় জানান, উদ্ধারকৃত পাখিটি মদনটাক। এটি সাধারণত বাংলাদেশে বিলুপ্তির পথে। দেশের আনাচে-কানাচে কিছু পাখি দেখা গেলেও বড় গাছ না থাকায় এবং মানুষের অস্বাভাবিক আচরণে তারা খাদ্য আহরণ ও বসবাসের স্বাভাবিক পরিবেশ হারিয়ে ফেলেছে। দিনাজপুর অঞ্চলে মদনটাক পাখি এখন আর দেখা যায় না। এটি জলচর পাখি হিসেবেও পরিচিত। প্রাপ্তবয়স্ক মদনটাকের পিঠ উজ্জ্বল কালো। শরীর সাদা বর্ণের। ডানার গোড়ায় কালো রং থাকে। পালকহীন মুখের চামড়া ও ঘাড় লালচে। গলা হলদে বা লালচে। চোখ সাদা কিংবা ধূসর। পা লম্বা। পায়ের পাতা, নখ ও পা সবুজে ধূসর থেকে কালো। স্ত্রী ও পুরুষ পাখি দেখতে একই রকম। অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখির মাথা ও ঘাড়ে বিক্ষিপ্ত ঘন পালক থাকে। মদনটাক পানির ধারে, ঘাসযুক্ত এলাকা অথবা নরম কাদায় খাবার খুঁজে খায়। প্রধান খাদ্য মাছ। এ ছাড়া ব্যাঙ, সরীসৃপ, কাঁকড়া ও বিভিন্ন জলজপ্রাণী খায়। স্ত্রী মদনটাক তিন থেকে চারটি ডিম দেয়। ২৮ থেকে ৩০ দিন পরই ডিম থেকে বাচ্চা হয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর