১২ জুন অনুষ্ঠেয় বরিশাল সিটি নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দ (২৬ মে) পাওয়ার আগে প্রার্থীদের প্রচারণা নিষিদ্ধ। তবে থেমে নেই প্রধান তিন দলের প্রার্থীদের অনানুষ্ঠানিক প্রচারণা। ১৫ এপ্রিল মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকে নির্বাচনকেন্দ্রিক প্রচারণায় অন্য দুই প্রার্থীর চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন আওয়ামী লীগের আবুল খায়ের খোকন সেরনিয়াবাত। ২৭ এপ্রিল মনোনয়ন ঘোষণার পর গতকাল প্রথম বিশাল শোডাউন করে বরিশালে এসেছেন ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম। অন্যদিকে সাংগঠনিক মিশনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস টানা তিন দিন ঢাকায় অবস্থান করলেও তার দলের নেতারা চালিয়ে যাচ্ছেন নির্বাচনী কার্যক্রম। তবে প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণার বিষয়ে কোনো অভিযোগ নেই বলে জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।
আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ার পর কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে গত ২০ এপ্রিল বরিশাল আসেন আবুল খায়ের খোকন সেরনিয়াবাত। ওই দিন দলীয় কার্যালয়ের সামনে অংশ নেন এক নাগরিক সংবর্ধনায়। মূলত ওই দিন থেকেই নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হয় আওয়ামী লীগ প্রার্থীর। প্রতিদিনই বিভিন্ন সভা-সমাবেশে অংশ নিয়ে নৌকায় ভোট চাইছেন তিনি। পেশাজীবী-সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ের মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচারণায় এগিয়ে থাকছেন তিনি। নিজ দল আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের সঙ্গেও সভা করেন একাধিক। গতকাল বিকালেও নগরীর রূপাতলীতে শ্রমিক লীগের এক সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নৌকার প্রার্থী খোকন সেরনিয়াবাত। আওয়ামী লীগ প্রার্থী কর্মিসভা ও শুভেচ্ছা বিনিময়কালে বরিশাল নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর পরিকল্পনা বাস্তবায়নে নৌকাকে বিজয়ী করতে জনগণের কাছে আহ্বান জানাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন প্রার্থীর নির্বাচন সমন্বয়কারী ও মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি আফজালুল করিম। সরকারদলীয় প্রার্থীর প্রচারণায় বিধি ভঙ্গের বিষয়ে গত সপ্তাহে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মৌখিক অভিযোগ করে জাপার একটি প্রতিনিধি দল।
এদিকে গত ২৭ এপ্রিল মনোনয়ন পাওয়ার পর প্রথমবার গতকাল বিশাল মোটর শোভাযাত্রা নিয়ে বরিশালে আসেন ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম। নগরীর প্রবেশদ্বার গড়িয়ারপার থেকে কয়েক শ নেতা-কর্মী মোটর শোভাযাত্রা সহকারে ফয়জুল করীমকে আমতলা এলাকায় নিয়ে যান। সেখানে উপস্থিত সমর্থকদের উদ্দেশে বরিশালবাসীর নিরাপত্তা এবং উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হাতপাখাকে বিজয়ী করার আহ্বান জানান তিনি। ফয়জুল করীম গতকাল বরিশালে এলেও তার দল সাংগঠনিক সভা-সমাবেশের মাধ্যমে নির্বাচনী তৎপরতা শুরু করে অনেক আগেই। এদিকে টানা তিন দিন ঢাকায় অবস্থান করে অঘোষিত নির্বাচনী প্রচারণায় পিছিয়ে আছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপসও। প্রতীক বরাদ্দের আগে কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে বরিশালে একটি বড় শোডাউন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি। তিনি উপস্থিত না থাকলেও তার দল জাপার মহানগর এবং জেলা নেতারা নির্বাচনকেন্দ্রিক সাংগঠনিক কার্যক্রমে তৎপর। গতকালও নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডে ধারাবাহিক সভা এবং লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মহানগর জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক অধ্যাপক মহসিন-উল ইসলাম হাবুল।
তবে এসব বিষয়ে কোনো অভিযোগ নেই রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে। এ পর্যন্ত নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের কোনো অভিযোগ আছে কি না জানতে চাইলে গতকাল বিকালে রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির বলেন, না। গতকাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও জাকের পার্টির চারজন প্রার্থী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে মনোনয়ন নিয়েছেন। স্বতন্ত্র মেয়র পদে আরও চারজন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১১৯ জন এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৩৬ জন মনোনয়নপত্র নিয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে।