শিরোনাম
সোমবার, ২৯ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা
বাজেট ভাবনা - ড. মো. সেলিম উদ্দিন

অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি অর্জনে জোর দিতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি অর্জনে জোর দিতে হবে

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. মো. সেলিম উদ্দিন বলেছেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে শিক্ষা, কৃষি ও ব্যবসায় সহায়ক নীতির পাশাপাশি নির্বাচনমুখী ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক’ সামাজিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে জোর দিতে হবে। একই সঙ্গে উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ব্লু ইকোনমির খাতগুলোকে কাজে লাগিয়ে সুনীল অর্থনীতি ‘ব্লু গ্রোথ’ অর্জনে রূপরেখা সামনে আনতে হবে।

অধ্যাপক সেলিম বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন ও ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্বে রয়েছেন। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘শিক্ষা, কৃষি, ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্পবান্ধব বাজেটের মাধ্যমে আমাদের উন্নয়নগুলোকে টেকসই করে তুলতে গ্রিন প্রবৃদ্ধির দিকে নজর দিতে হবে।’ বাজেটে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির দীর্ঘসূত্রতা কমাতে ‘পরিবীক্ষণ ও নিরীক্ষা’ বিভাগের সক্ষমতা বাড়ানো ও পেশাজীবীদের যুক্ত দরকার বলে মনে করেন তিনি।

মো. সেলিম উদ্দিন বলেন, বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশে মুদ্রাস্ফীতি তুলনামূলক কম বৃদ্ধি পেলেও নিম্ন আয়ের মানুষ জীবনযাত্রার ব্যয় নির্বাহে হিমশিম খাচ্ছে। তাই আগামী অর্থবছরের বাজেটে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে দিকনির্দেশনা থাকা উচিত। তিনি বলেন, নিম্ন আয়ের মানুষকে অস্থির সময়ে স্বস্তি দেওয়ার জন্য টিসিবির মাধ্যমে স্বল্পমূল্যে পণ্য বিক্রি অব্যাহত রাখতে হবে। একই সঙ্গে টিসিবির পণ্য বিক্রিতে ডিলারের সংখ্যা বাড়াতে হবে। এ ছাড়া সামাজিক নিরাপত্তার উপকারভোগীরা যাতে হয়রানিমুক্তভাবে ভাতার টাকা নিজের ব্যাংক বা এমএফএসে পেতে পারেন, সেটি নিশ্চিত করা দরকার। সেলিম উদ্দিন বলেন, গ্রামীণ অর্থনীতি আরও বেশি চাঙা রাখতে ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি আকারের ব্যবসায় পুনঃ অর্থায়ন, স্বল্প সুদে ঋণসহ প্রণোদনা কর্মসূচিগুলো চলমান রাখা উচিত। কারণ সহায়তা চলমান থাকলে কর্মসংস্থান ও দারিদ্র্য দূরীকরণে এসব উদ্যোগ উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে কর-জিডিপির অনুপাত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে কম। সুতরাং রাজস্ব আয় বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। এ জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ঢেলে সাজাতে হবে। যেমন করনীতি, কর ধার্যকরণ, কর আদায়, কর জরিপ ইত্যাদি বিভাগকে স্বাধীন সত্তার মধ্যে আনা উচিত। এই অধ্যাপক বলেন, অর্থের অপচয় রোধে আগামী বাজেটে বরাদ্দ দিতে সরকারকে সতর্ক হতে হবে। দারিদ্র্য দূরীকরণে সহায়তা, পরিবেশ রক্ষায় সচেষ্ট হওয়া এবং জনকল্যাণ ও জনমুখী ব্যবসা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে গুরুত্ব দিতে হবে।

তিনি বলেন, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ দুই ধরনের নীতিকৌশল প্রয়োগের মাধ্যমে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জনে সক্ষম হতে পারে বাংলাদেশ। যদিও সরকার রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে বৈশ্বিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতি থেকে অর্থনীতিকে ঝুঁকিমুক্ত করতে অনেক কৌশল ও নীতি বাস্তবায়ন করছে এবং উদ্যোগ নিয়েছে।

মো. সেলিম উদ্দিন বলেন, সামষ্টিক অর্থনীতির অধিকাংশ সূচক করোনার আগের অবস্থায় নেই। সূচকগুলো স্থিতিশীল করতে অপ্রয়োজনীয় আমদানি বন্ধ, করকাঠামোর গতিশীল পরিবর্তন আনার মাধ্যমে জীবনযাত্রার ব্যয় হ্রাস করতে হবে। একই সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য তথা শিল্পের উৎপাদন উৎসাহিত হয় সেদিকে নজর দিতে হবে। এ ছাড়া কর্মসংস্থান সৃষ্টি সহায়ক প্রকল্প সময়মতো বাস্তবায়ন করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।

সর্বশেষ খবর