শিরোনাম
মঙ্গলবার, ৩০ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

ঋণ বিতরণে অনিয়ম রোধে নির্দেশনা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের

নিজস্ব প্রতিবেদক

আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের ঋণসংক্রান্ত অনিয়ম রোধে অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ও পরিপালন (আইসিসি) ব্যবস্থাপনা জোরদার এবং ড্যাশবোর্ড স্থাপন করতে বলেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গতকাল এ-সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করে দেশের সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক/ প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, কতিপয় আর্থিক প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণের হার অস্বাভাবিক বৃদ্ধি, বিতরণকৃত ঋণ যথাযথভাবে আদায় না হওয়ার ফলে তারল্যপ্রবাহ হ্রাস পেয়েছে। তারল্য সংকটের কারণ পর্যালোচনায় দেখা যায়, বিভিন্ন সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগের নির্দেশনা পরিপালন না করে জামানতবিহীন/পর্যাপ্ত সহায়ক জামানত গ্রহণ ছাড়াই ঋণ বিতরণ করা হচ্ছে। একক গ্রাহককে নির্ধারিত সীমার অতিরিক্ত ঋণসুবিধা দেওয়া হচ্ছে। ঋণ বিতরণের আগে যথাযথ ডকুমেন্টেশন করা হচ্ছে না। বিতরণকৃত ঋণের সদ্ব্যবহার নিশ্চিত না করার ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এতে অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ও পরিপালন (আইসিসি) ব্যবস্থাপনার ঘাটতি পরিলক্ষিত হচ্ছে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এ অবস্থা উত্তরণের লক্ষ্যে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ও পরিপালন ব্যবস্থাপনা কার্যকর ও শক্তিশালীকরণের মাধ্যমে ঋণ/লিজ/বিনিয়োগের তদারকি জোরদার ও ঋণশৃঙ্খলা নিশ্চিতকরণার্থে ১ কোটি টাকা ও তদূর্ধ্ব অঙ্কের যে কোনো প্রকার ঋণ/লিজ/বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ডিউ ডিলিজেন্স বিধিবিধান পরিপালন, ঋণ বিতরণের আগে ডকুমেন্টেশন যথাযথভাবে সম্পাদনসহ ঋণ নিয়মাচারসংশ্লিষ্ট সব কার্যক্রম যথাযথভাবে পরিপালনের বিষয়টি নিশ্চিতকরণার্থে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ইন্টারনাল কন্ট্রোল অ্যান্ড কমপ্লায়েন্সের মাধ্যমে ঋণ বিতরণের আগে প্রাকনিরীক্ষা কার্যক্রম সম্পাদন করতে হবে ও প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট নথিতে সংরক্ষণ করতে হবে। যে কোনো প্রকার ঋণ/লিজ/বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন, ১৯৯৩-এর বিধান অনুযায়ী পর্যাপ্ত সহায়ক জামানত গ্রহণ, একক গ্রহীতার ঋণসীমা অনুসরণ, ঋণের গুণগত মান ও সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং ঋণ নিয়মাচার পরিপালনের বিষয়াদি নিবিড়ভাবে তদারকির জন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোয় ড্যাশবোর্ড স্থাপন করতে হবে। আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী এবং অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ও পরিপালন বিভাগের প্রধান নিয়মিত ওই ড্যাশবোর্ড মনিটরিং করবেন। আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন, ১৯৯৩-এর বিধান অনুযায়ী সহায়ক জামানত গৃহীত হয়নি, একক গ্রাহকের অনুকূলে প্রদেয় সর্বোচ্চ ঋণের সীমা অতিক্রান্ত হয়েছে, ঋণের সদ্ব্যবহারসংক্রান্ত সার্কুলার পরিপালিত হয়নি এবং ঋণের নিয়মাচারসংক্রান্ত নীতিমালা পরিপালিত হয়নি এরূপ ঋণের তথ্য প্রতি মাস শেষ হওয়ার পরবর্তী মাসের প্রথম সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসের মধ্যে আবশ্যিকভাবে অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ও পরিপালন বিভাগের প্রধানের স্বাক্ষরে বিবরণী আকারে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগে প্রেরণ করতে হবে। প্রাকনিরীক্ষা সম্পাদনকালে বর্ণিত বিষয়ে যদি এমন কোনো গুরুতর অনিয়ম উদ্ঘাটিত হয় যা ঋণশৃঙ্খলাবিরোধী এবং ভবিষ্যতে ঋণ আদায় ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে এরূপ ক্ষেত্রে এ নির্দেশনায় বর্ণিত প্রতিবেদন দাখিলের সর্বশেষ তারিখ পর্যন্ত অপেক্ষা না করে তা তাৎক্ষণিকভাবে সরাসরি বাংলাদেশ ব্যাংককে অবহিত করতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রেরিত প্রতিবেদনের একটি কপি আইসিসি-প্রধান কর্তৃক সরাসরি অডিট কমিটির চেয়ারম্যান বরাবর পাঠাতে হবে এবং প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের পরবর্তী সভায় প্রাপ্ত ত্রুটিবিচ্যুতির সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করতে হবে।

সর্বশেষ খবর