আজ তৃতীয় জাতীয় চা দিবস। ২০২০ সাল থেকে সরকার এ দিবসটি পালন করছে। ১৯৫৭ সালের এই দিনে বঙ্গবন্ধু চা বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। এ বছর চা দিবসের সংকল্প শ্রমিকবান্ধব চা শিল্প। চা দিবস সামনে রেখে আমাদের শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি দীপংকর ভট্টাচার্য লিটন ও পঞ্চগড় প্রতিনিধি সরকার হায়দারের প্রতিবেদন-
শ্রীমঙ্গল : যাদের শ্রমঘামে এগিয়ে যাচ্ছে চা শিল্প, সেই চা শ্রমিকদের নিয়ে এবার চা দিবস পালনের আয়োজন করেছে চা শ্রমিক অধ্যুষিত মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল চা গবেষণা কেন্দ্র (বিটিআরআই)। চা বোর্ড কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বর্তমানে দেশ চায়ের দিক থেকে সমৃদ্ধ। অভ্যন্তরীণ চাহিদার পুরোটাই পূরণ হচ্ছে দেশে উৎপাদিত চায়ে। তবে এ উৎপাদন বাড়িয়ে রপ্তানির হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে কাজ করে যাচ্ছে চা বোর্ড। কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী প্রতি বছর চায়ের আবাদ সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। উৎসাহিত করা হচ্ছে ক্ষুদ্রায়তন চা চাষে। নেওয়া হয়েছে পরিবেশ ভারসাম্য প্রকল্প। শক্তিশালী করা হয়েছে চা গবেষণা কেন্দ্র ও প্রকল্প উন্নয়ন ইউনিট। গতিশীল করা হয়েছে শ্রমকল্যাণ কেন্দ্র। চা বাগানের অবকাঠামোগত উন্নয়নও করা হচ্ছে। চা কারখানা সময়োপযোগী ও আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। রয়েছে সেচ প্রকল্প। আর এগুলো বাস্তবায়ন করা হচ্ছে স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনায়। ৯৬৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৫ বছর মেয়াদি এ পথনকশায় চায়ের উৎপাদন ১৩২ মিলিয়ন কেজিতে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী পুরো কর্মকৌশল বাস্তবায়ন করা হলে অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে বছরে ২৫ হাজার মিলিয়ন কেজি চা বিদেশে রপ্তানি করা যাবে।
পঞ্চগড় : উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি জেলার সমতলভূমিতে বেড়েই চলেছে চা চাষ। ক্ষুদ্র চা চাষিরা বাড়ির আনাচে কানাচে গড়ে তুলছেন চা বাগান। প্রতি বছর চায়ের উৎপাদনও বাড়ছে। নানা স্বাদের চা উৎপাদন করে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করা হচ্ছে সমতলের চা। তবে কাঁচা চা পাতার দাম নিয়ে হতাশ ক্ষুদ্র চাষিরা। তারা বলছেন, উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় চা চাষে বর্তমানে লোকসান গুনতে হচ্ছে। সব প্রস্তুতি শেষ হলেও এখনো চা নিলাম কেন্দ্র চালু হয়নি। নিলাম কেন্দ্রটি চালু হলে সংকট কেটে যাবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। সুরমা ও পূর্ণিমা চা কারখানার মালিক শেখ ফরিদ জানান, চট্টগ্রাম চা নিলাম কেন্দ্রে চায়ের চাহিদা কম। ৫-৬ পাতার কাঁচা চা সরবরাহ করেন চাষিরা। চায়ের মান খারাপ। তাই দাম কম। সরকার পঞ্চগড়ে তৃতীয় চা নিলাম কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার কথা ঘোষণা করলেও এখনো কার্যক্রম শুরু হয়নি। চা নিলাম কেন্দ্রকে কেন্দ্র করে ওয়্যারহাউস, ব্রোকার হাউস গড়ে উঠেছে। জেকে ওয়্যারহাউসের চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ জানান, চা নিলাম কেন্দ্রটি চালু হলে চা নিয়ে সৃষ্ট সংকট কেটে যাবে। বাংলাদেশ চা বোর্ডের পঞ্চগড় আঞ্চলিক কার্যালয়ের উন্নয়ন কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমির হোসেন বলেন, ভালো মানের চা উত্তোলন করার জন্য চা চাষিদের নানা রকম সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ চা বোর্ডের পঞ্চগড় আঞ্চলিক কার্যালয়। কারখানা কর্তৃপক্ষকেও একই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।