ভারতীয় শিল্পগোষ্ঠী আদানি পাওয়ার বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেকে নামিয়ে আনার পর বাংলাদেশ তাদের পাওনা পরিশোধ বাড়াচ্ছে। আদানি পাওয়ারের কাছে বাংলাদেশের মোট ৮০০ মিলিয়ন ডলার বিদ্যুৎ বিল বকেয়া পড়েছে বলে জানা গেছে। গত ৪ নভেম্বর বিবিসিতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমনটি জানানো হয়।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আদানির বকেয়া দ্রুত পরিশোধ করতে ব্যবস্থা নিচ্ছে বাংলাদেশ। এমন তথ্য বিবিসিকে জানিয়েছেন দুজন ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা। এই সরকারি কর্মকর্তারা বিবিসিকে বলেছেন, ইতোমধ্যেই আদানি পাওয়ারকে আংশিক পেমেন্ট করা শুরু হয়েছে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশের মোট বিদ্যুতের ১০ শতাংশ সরবরাহ করে আদানি। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) একজন কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেন, ‘আমরা পেমেন্ট সমস্যার সমাধান করেছি। ইতোমধ্যে আদানি গ্রুপের অনুকূলে ১৭০ মিলিয়ন ডলারের লেটার অব ক্রেডিট (এলসি বা ঋণপত্র) ইস্যু করেছি।’ বাংলাদেশের কর্মকর্তারা বিবিসিকে জানান, ৭ নভেম্বরের মধ্যে বকেয়া পাওনা পরিশোধ না করলে বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে আদানি। তবে বিপিডিবির একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়ার মতো পরিস্থিতি আসবে বলে আমরা মনে করি না। আমরা ধীরে ধীরে এবং নিয়মিত পাওনা পরিশোধ করব। বকেয়া পাওনা পরিশোধের এই সমস্যার সমাধানে আমরা আত্মবিশ্বাসী। অন্তর্বর্তী সরকারের জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান এই সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘পেমেন্ট বাড়ানোর পরও সরবরাহ কমানো হয়েছে। এ ঘটনায় আমরা হতবাক ও বিস্মিত হয়েছি। আমরা পাওনা পরিশোধ করতে প্রস্তুত এবং বিকল্প ব্যবস্থা নেব, কিন্তু কোনো বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীকে আমাদের জিম্মি করে ব্ল্যাকমেল করার সুযোগ দেব না।’ তিনি জানান, আদানিকে বাংলাদেশ জুলাই মাসে ৩৫ মিলিয়ন ডলার, সেপ্টেম্বরে ৬৮ মিলিয়ন ডলার ও অক্টোবরে ৯৭ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেছে। আদানি পাওয়ারের পাশাপাশি এনটিপিসি লিমিটেড ও পিটিসি ইন্ডিয়া লিমিটেডসহ ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোও বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে। বিপিডিবির কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন, অন্যান্য ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের পাওনাও আংশিকভাবে পরিশোধ করা হচ্ছে।