গাইবান্ধায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের ‘জনতার বাজারে’ যোগ হয়েছে গরুর মাংস। গতকাল দিনব্যাপী শহরের পুরাতন জেলখানা মোড়ের এই বাজারে সবজির পাশাপাশি গরুর মাংস বিক্রি শুরু করেছে তারা। প্রতি কেজি মাংসের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৬২০ টাকা, যা স্থানীয় বাজারমূল্যের তুলনায় ৬০ থেকে ৮০ টাকা কম। জনতার বাজারে গিয়ে দেখা যায়, মাংস কেনার জন্য ক্রেতারা সারিবদ্ধভাবে টোকেন নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন।
আয়োজকরা জানান, বিশৃঙ্খলা এড়াতে আগেই টোকেনব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। ক্রেতাদের সুবিধার জন্য সর্বনিম্ন ২০০ গ্রাম এবং সর্বোচ্চ দুই কেজি পর্যন্ত মাংস দেওয়া হচ্ছে।
শহরের মাস্টারপাড়ার বাসিন্দা ফিরোজ কবীর বলেন, ‘জনতার বাজারে সবকিছুরই দাম বাজারের থেকে অনেক কম। এখানে বাজারের তুলনায় ৬০ টাকা কমে মাংস বিক্রি হচ্ছে। এক কেজি মাংস নেব। এজন্য টোকেন নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়েছি।’ আরেক ক্রেতা প্রফেসর কলোনি এলাকার অটোরিকশাচালক জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘হামরা গরিব মানুষ, আয় রোজগার খুবই কম। অনেক দিন মাংস খাই না। ২০০ গ্রাম মাংস কিনব। এই মাংস বউ-বাচ্চা নিয়ে খামো।’ শহরের খাঁ-পাড়া এলাকার গৃহবধূ আমেনা বেগম (৫০) বলেন, ‘এক কেজি, আধা কেজি মাংস কেনার সামর্থ্য আমাদের মতো মানুষের নাই, তাই এখানে ২০০ গ্রাম মাংস কিনতে আসছি।’ ছাত্রপ্রতিনিধি অতনু সাহা বলেন, ‘জনতার বাজারে গরুর মাংস যোগ করার জন্য ফেসবুকে পোস্ট দেওয়া হয়েছিল। সহযোগিতার জন্য স্থানীয় এক যুবক ব্যবসায়ী এগিয়ে আসেন। তাঁর কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকা ধার নিয়ে আরও কিছু টাকা যোগ করে ১ লাখ ২০ হাজার টাকায় একটি গরু কেনা হয়েছে। তবে মাংসের পরিমাণ সীমিত থাকায় চাহিদা পূরণ করা যাচ্ছে না।’ তিনি বলেন, স্থানীয়দের সহযোগিতায় প্রতি সপ্তাহে মাংস বিক্রির আয়োজন চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক চৌধুরী মোয়াজ্জম আহমদ বলেন, ছাত্রদের উদ্যোগে ন্যায্যমূল্যের জনতার বাজারে সবজি বিক্রি শুরুর জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এক লাখ টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছিল। জনতার বাজারে মাংস বিক্রি হচ্ছে এটা আনন্দের বিষয়। ভবিষ্যতে এ ধরনের কার্যক্রমে আরও সহযোগিতা করা হবে জানান তিনি।