কালোমুখ প্যারাপাখি বা সুন্দরী হাঁস বিশ্বের একটি বিরল ও বিপন্ন পাখি। ধারণা করা হয়, গোটা পৃথিবীতে এই পাখির সংখ্যা মাত্র ১ হাজারটি। এর বড় অংশেরই বসবাস সুন্দরবনে। এ ছাড়া রয়েছে মদনটাক, কাদাখোঁচা, পানকৌড়ি, কানি বক, সোনা চিল, মাছরাঙা বা কালো ফিঙে পাখি। শীত এলে আশ্রয়ের খোঁজে পরিযায়ী পাখি আসে বাংলাদেশে। সুন্দরবনে সারা বছরই নানা প্রজাতির পাখির দেখা মেলে। তবে শীতে বসে পাখিদের মিলনমেলা।
জানা যায়, সুন্দরবনে ৩৫০ প্রজাতির পাখির বাস। এখানে আছে সর্বাধিক ৯ প্রজাতির মাছরাঙা। ছোট মাছরাঙা, নীল কান মাছরাঙা, খয়েরি মাছরাঙা, কালোটুপি মাছরাঙা, সাদা বুক মাছরাঙা, কণ্ঠি মাছরাঙা, লাল মাছরাঙা, গরিয়াল মাছরাঙা, ফটকা মাছরাঙা। যা পৃথিবীর অন্য কোথাও নেই। মহাবিপন্নের তালিকায় থাকা কালোমুখ প্যারাপাখি বা সুন্দরী হাঁসপাখি গোটা পৃথিবীতে মাত্র ১ হাজারটি। যার বড় অংশটির বসবাস সুন্দরবনে। বিপন্ন প্রায় বাংলার শকুন, পলাশীকুড়া ঈগল, প্যারাবন সুনচা, চামচ ঠুঁটোরও বসবাস সুন্দরবনে। একসময় সুন্দরবনে বউ-কথা-কও, খয়েরি হাঁড়িচাচা, বড় কানাকুয়া, ভিমরাজ, কেশরাজ, সিঁদুরে সহেলী, বসন্ত বাউরী, নোনা বন শিসমার, কালোমাথা বেনেবউ, টিয়া, কমলা-বুক হরিয়াল, কণ্ঠি ঘুঘু, তালচড়াই, খয়েরিমাথা সুইচোরা, সোনা-কপালী হরবোলা, কমলা-পেট ফুলঝুরি, ধূসরমাথা মেছোচিল, সিন্ধু ঈগলসহ হরেক রকমের পাখি চোখে পড়ত। এর মধ্যে উল্লেখ সংখ্যক পাখিই বিপন্ন হতে চলেছে। পাখি শিকার করে পাচার, খাদ্য সংকট ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলো এর অন্যতম কারণ। খুলনা বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেন, সুুন্দরবন যেহেতু জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ এলাকা এবং এখানে অনেক বিরল বিপন্ন প্রাণী আছে কাজেই পর্যটকদের রাতে থাকার জন্য বনের অভ্যন্তরে কটেজ নির্মাণ করা যৌক্তিক নয়। তিনি বলেন, সার্বিকভাবে ইকো ট্যুরিজম পর্যটকবান্ধব অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। ভবিষ্যতে আরও কয়েকটি করার পরিকল্পনা রয়েছে।