পাহাড় আর পাখি। এ দুই শব্দে অদ্ভুত মিল। যেন আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে একে অপরকে। পাখিরা যেমন পাহাড় ছাড়া থাকতে পারে না। তেমনি পাখিশূন্য পাহাড়ও থাকে না। তাই হয়তো পার্বত্যাঞ্চলে সব মৌসুমেই দেখা মেলে নানা প্রজাতির পাখি। তবে শীত এলেই দেশীয় প্রজাতির সঙ্গে যুক্ত হয় বিদেশি পাখিও। এ বছরও একই চিত্র। শীতের প্রকোপ যতই বাড়ছে, পাহাড়ে বিদেশি পাখির আগমন ততই বাড়ছে। সুদূর সাইবেরিয়াসহ বিভিন্ন শীতপ্রধান দেশগুলো থেকে প্রায় প্রতিদিন পাহাড়ে আসছে অতিথি পাখিল দল। এরই মধ্যে চোখে পড়েছে- ফ্লাইফেচার, জলকুট, পর্চাড, জলপিপি, পাতারী, গার্নিগি, পাস্তামুখী, নর্দানপিন্টেলসহ নানা প্রজাতির পাখি। এসব পাখিদের সঙ্গ দিতে যুক্ত হয়েছে- দেশীয় সরালি, ডাহুক, পানকৌরি, বক, বালিহাঁসসহ নাম না জানা হাজারো প্রজাতির পাখি। রাঙামাটি ঘুরে দেখা গেছে এমন দৃশ্য।
রাঙামাটি নদী পথে ৫টি উপজেলা বরকল, লংগদু, জুরাছড়ি, বিলাইছড়ি, বাঘাইছড়ি ঘরে দেখা গেছে হ্রদ পাহাড়ে পাখিদের কলতান। অতিথি পাখিদের কিচিরমিচির কলতানে মুখর রাঙামাটির হ্রদ-পাহাড়। রংবেরঙের নানা প্রজাতির পাখি আর মনোমুগ্ধকর প্রকৃতি একাকার হয়ে মিশে আছে। পাখিদের এমন সৌন্দর্য দেখে অনুভূতি প্রকাশ করলেন স্থানীয় মো. মাহামুদুল হাসান। তিনি বলেন, পাহাড়, বন আর স্বচ্ছ জলধারা অতিথি পাখিকে বেশি আকর্ষণ করে। ভোর হলে কুয়াশার বুক চিরে পাহাড়ি গাছের মগডালে বসে দেশি-বিদেশি পাখির মিলন হাট। সারা দিন চলে কাপ্তাই হ্রদের স্বচ্ছ জলে পাখিদের খুনসুটি। কখনো হ্রদের বুকে ডুব সাঁতার, কখনো আবার ঝাঁক বেঁধে আকাশের নীলে ওড়াউড়ি। দেখতে ভালোই লাগে। শহর এলাকায় অভূতপূর্ব এ সৌন্দর্য উপভোগ করা যায় শুধু ডিসি বাংলো এলাকায়।
অন্যদিকে পাহাড়ে পাখিদের নিরাপদ অভয়াশ্রম ঠিক রাখতে জনসচেতনা বৃদ্ধি করতে বনবিভাগ বলছেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। তিনি বলেন, শীত শেষে অতিথি পাখিরা যাতে অতিথির মতো তাদের নিজস্ব দেশে ফিরে যেতে পারে, সে বিষয়ে যথেষ্ট সচেতন বন বিভাগ।