মালয়েশিয়ায় শ্রমবাজারে আবারও সিন্ডিকেট করতে অপচেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন রিক্রুটিং এজেন্সি মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিজের (বায়রা) সদস্যরা। অনিয়মকে প্রশ্রয় না দিয়ে নিয়মতান্ত্রিকভাবে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার চালুর দাবি জানিয়েছেন তারা। গতকাল রাজধানীর ইস্কাটনের প্রবাসীকল্যাণ ভবনের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে তারা এ দাবি জানান। এর আগে একই দাবিতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
মানববন্ধনে বায়রার সাবেক জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি রিয়াজুল ইসলাম বলেন, পূর্ববর্তী সরকারের সময় মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার সিন্ডিকেট করে হাজার কোটি টাকা লোপাট করা হয়েছে। তৎকালীন মন্ত্রী, এমপি ও প্রভাবশালীদের প্রশ্রয়ে পলাতক রুহুল আমিন স্বপনের নেতৃত্বে ওই সিন্ডিকেট গড়ে ওঠে। বর্তমানে বিদেশে বসেই তারা ওই সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। এ সিন্ডিকেট রুখে দিতে বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া সমঝোতা চুক্তিতে পরিবর্তন এনে পুনরায় শ্রমবাজার উন্মুক্ত করতে হবে। এ ছাড়া সিন্ডিকেট হোতাদের দ্রুত বিচারের আওতায় এনে তাদের বিচার কার্যকর করতে হবে। এর আগে সকাল ১০টায় রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে স্মারকলিপি দেন বায়রা সদস্যরা। স্মারকলিপিতে বলা হয়, সিন্ডিকেটের মূল হোতা বাংলাদেশি বংশো™ূ¢ত মালয়েশিয়ার নাগরিক আমিন নূর, পলাতক রুহুল আমিন ওরফে স্বপন ও তাদের আওয়ামী সহযোগীরা বর্তমানে প্রভাবশালী কয়েকজন রাজনৈতিক নেতাকে নিয়ে সিন্ডিকেট তৈরিতে তৎপর। সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে তারা এ তৎপরতা চালাচ্ছে। এ সরকারের সময়ে কোনোভাবেই আওয়ামী লীগের তৈরি সিন্ডিকেট পুনর্গঠিত হতে পারে না। এতে আরও বলা হয়, মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগের বিতর্কিত অনলাইন সফটওয়্যার বাতিলের জন্য মালয়েশিয়া সরকারের কাছে দাবি জানাতে হবে। পাশাপাশি সিন্ডিকেটের মূল হোতাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। এতে আরও বলা হয়, কম খরচে কর্মী পাঠাতে সরকারিভাবে জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোকে (বিএমইটি) আগ্রহী কর্মীদের ডেটাবেজ তৈরি করতে হবে। সেই ডেটাবেজ থেকে রিক্রুটিং এজেন্সি কর্মী সংগ্রহ করবে। সরকার-নির্ধারিত খরচ ব্যাংকের মাধ্যমে জমা দেবে কর্মী। পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া তত্ত্বাবধান করবে বিএমইটি। স্মারকলিপিতে বায়রা সদস্যরা বলেন, সিন্ডিকেটকে গতবার কর্মীপ্রতি ১ লাখ ৫২ হাজার টাকা করে দিতে হয়েছে। ৫ কোটি টাকা করে চাঁদা নিয়ে এজেন্সিকে সিন্ডিকেটের সদস্য করা হয়। এবার ১৪ কোটি টাকা করে আদায় করা হচ্ছে। মালয়েশিয়া ১৪টি দেশ থেকে কর্মী নিলেও কোনো দেশের জন্য নির্দিষ্ট এজেন্সিকে বাছাই করে দেয় না। গত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও সুপরিকল্পিতভাবে দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষর হওয়া সমঝোতা স্মারকে বাংলাদেশের রিক্রুটিং এজেন্সি মালয়েশিয়া সরকারকে বাছাই করার দায়িত্ব দেওয়ার মধ্য দিয়ে সিন্ডিকেটের বীজ বপন করা হয়। স্মারকলিপিতে স্বাক্ষর করেন- বায়রার সাবেক জ্যেষ্ঠ ভাইস প্রেসিডেন্ট রিয়াজুল ইসলাম, ভাইস প্রেসিডেন্ট নোমান চৌধুরী, বিএনপির ঢাকা জেলা সভাপতি ও বায়রার সদস্য খন্দকার আবু আশফাক, সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম ও আকবর হোসেন, সাবেক সহসভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন, নির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য মোস্তফা মাহমুদ।