২০২৩ সালের তুলনায় দেশে বেকারের সংখ্যা বেড়েছে ১ লাখ ৬০ হাজার। গতকাল বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ত্রৈমাসিক শ্রমশক্তি জরিপ-২০২৪ এর চতুর্থ কোয়ার্টারের গুরুত্বপূর্ণ সূচকগুলোর সাময়িক ফলাফল প্রকাশ করেছে। সেই প্রতিবেদনে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
বিবিএস জানায়, দেশে বর্তমানে ২৬ লাখ ২০ হাজার বেকার জনগোষ্ঠী রয়েছে। যা ২০২৩ সালে ছিল ২৪ লাখ ৬০ হাজার। বর্তমানে পুরুষ বেকার রয়েছে ১৮ লাখ, যা ২০২৩ সালে ছিল ১৬ লাখ ৪০ হাজার। এ ছাড়া বর্তমানে মহিলা বেকারের সংখ্যা ৮ লাখ ২০ হাজার, যা ২০২৩ সালেও ছিল ৮ লাখ ২০ হাজার। অর্থাৎ মহিলা বেকারের সংখ্যা না বাড়লেও বেড়েছে পুরুষ বেকারের সংখ্যা।
বিবিএস জানায়, যারা বিগত সাত দিনে কমপক্ষে ১ ঘণ্টাও কোনো কাজ করেননি কিন্তু কাজ করার জন্য গত সাত দিন ও আগামী দুই সপ্তাহের জন্য প্রস্তুত ছিলেন এবং গত ৩০ দিনে বেতন/মজুরি বা মুনাফার বিনিময়ে কোনো না কোনো কাজ খুঁজেছেন, তাদেরই বেকার জনগোষ্ঠী হিসেবে ধরা হয়েছে।
বিবিএসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে কর্মে নিয়োজিত বা শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণকারী মানুষের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। ফলে বেড়েছে বেকার মানুষের সংখ্যা। বছরের শুরুতে বেকারের সংখ্যা কম থাকলেও বছর শেষে ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে। এতে বছরের ব্যবধানে দেশে বেকারের সংখ্যা বেড়েছে ১ লাখ ৬০ হাজার। এ সময়ে কৃষি, সেবা এবং শিল্প, সব খাতেই কমেছে কর্মে নিয়োজিত জনগোষ্ঠী। নারীর চেয়ে উল্লেখযোগ্য হারে পুরুষ বেকারের সংখ্যা বেড়েছে বেশি।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা কমে ৭ কোটি ১৭ লাখ ৩০ হাজার অন্যদিকে ২০২৩ সালে যা ছিল ৭ কোটি ৩৪ লাখ ৫০ হাজার। ফলে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা কমেছে ১৭ লাখ ২০ হাজার জন। পুরুষ ও নারী শ্রমশক্তি কমেছে। দেশে সব থেকে বেশি মানুষ কাজ করে কৃষি খাতে। এর পরই রয়েছে সেবা ও শিল্প খাত। দেশে যুব শ্রম শক্তি ২ কোটি ২৬ লাখ, ২০২৩ সালে যা ছিল ২ কোটি ৬৭ লাখ। ফলে এক বছরে দেশে যুব শ্রম শক্তিও কমেছে। বিবিএস জানায়, শ্রমশক্তি জরিপে ১৫ বছর ও তদুর্ধ্ব বয়সী পুরুষ-নারী এবং শহর-পল্লি অঞ্চল অনুযায়ী জাতীয় পর্যায়ে শ্রমবাজারের সূচকগুলো ত্রৈমাসিকভিত্তিতে প্রাক্কলন করা হয়। দেশব্যাপী ১ হাজার ২৮৪টি নির্বাচিত নমুনা এলাকায় দৈবচয়নের ভিত্তিতে ২৪টি করে সর্বমোট ৩০ হাজার ৮১৬টি খানা (একত্রিতভাবে বসবাসরত গোষ্ঠী বা পরিবার) থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। দেশের ৬৪টি জেলায় ১০৭ জন (নারী ৫৭ এবং পুরুষ ৫০) প্রশিক্ষিত তথ্য সংগ্রহকারীদের মাধ্যমে মাঠপর্যায়ে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এ জরিপের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য হতে শ্রমশক্তি, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সূচকগুলোর অগ্রগতি, অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার অগ্রগতি নির্ণয়ক সূচক এবং সর্বোপরি জাতীয় শ্রমশক্তির সুষ্ঠু ব্যবহার ও কর্মসংস্থান এবং বেকারত্ব নিরসনে পরিকল্পনা প্রণয়ন সম্ভব হবে। এ জরিপের মাধ্যমে লিঙ্গভিত্তিক কর্মসংস্থান, বেকারত্ব, শ্রম অভিবাসন ব্যয়, খাত এবং পেশাভেদে শ্রমশক্তি, প্রাতিষ্ঠানিক এবং অ-প্রাতিষ্ঠানিক কর্মসংস্থান, কর্মঘণ্টা এবং মজুরিসংক্রান্ত পরিসংখ্যান প্রস্তুত করা হয়। এ জরিপের মাধ্যমে শ্রমবাজারের মৌসুমভিত্তিক তারতম্য সংশ্লিষ্ট তথ্যাদিও পাওয়া যায়।