সিলেটের লাক্কাতুড়া চা বাগানের একটি টিলা থেকে উদ্ধার হয়েছিল অজ্ঞাত এক নারীর লাশ। শনাক্তে ফিঙ্গারপ্রিন্ট নেওয়ার চেষ্টা করেছিল সিআইডি ও পিবিআই। কিন্তু পচন ধরায় সেটিও সম্ভব হয়নি। শেষ পর্যন্ত লাশের পাশে পাওয়া একটি মেমোরিকার্ডের সূত্র ধরে ওই নারীর পরিচয় ও ঘাতককে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। ঘাতক আর কেউ নন, ওই নারীর স্বামীই তার হন্তারক। গতকাল এমন তথ্য দিয়েছেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) অতিরিক্ত উপকমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। পুলিশ জানায়, ১৪ অক্টোবর এয়ারপোর্ট থানাধীন লাক্কাতুড়া চা বাগানের টিলার ঝোপের ভিতর থেকে আংশিক পচন ধরা এক নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়। তার পাশে পাওয়া যায় লেডিস ব্যাগ। ব্যাগে ছিল কিছু জামাকাপড় ও একটি মেমোরিকার্ড।
লাশটি উদ্ধারের পর পিবিআই ও সিআইডি আঙুলের ছাপের মাধ্যমে পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পরে মেমোরিকার্ডটি ব্যবহার করে এর মধ্যে কিছু কথোপকথনের অডিও পায়। এর সূত্র ধরে পুলিশ পরিচয় শনাক্ত করে। লাশটি ছিল সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারাবাজার থানার মওলারপাড় গ্রামের মৃত মাহতাব মিয়ার মেয়ে রাবেয়া বেগমের। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে পুলিশ রাবেয়ার স্বামী সুনামগঞ্জ সদর থানার রাঙ্গারচর গ্রামের আবদুল আজিজের ছেলে ওমানফেরত প্রবাসী ফারুক আহমেদকে আটক করে। প্রথমে ফারুক হত্যার বিষয়টি অস্বীকার করলেও তথ্য-উপাত্ত ও প্রমাণাদি উপস্থাপনের পর স্বীকার করে। তিনি জানান, আগের বিয়ে গোপন করা এবং পরকীয়ার কারণে স্ত্রীর সঙ্গে তার দীর্ঘদিন ধরে মনোমালিন্য চলছিল। ১৩ অক্টোবর তিনি স্ত্রীকে নিয়ে হযরত শাহজালাল (রহ.) এর মাজার জিয়ারত শেষে বেড়ানোর কথা বলে লাক্কাতুড়া চা বাগানের ওই টিলায় নিয়ে যান। সেখানে বিকাল ৪টায় ফুফাতো ভাই আল আমিনের সহায়তায় তিনি স্ত্রী রাবেয়া বেগমকে গলা টিপে হত্যা করেন। এসএমপির মিডিয়া অফিসার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, গত শনিবার ফারুক আহমেদকে আদালতে তোলা হলে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।