পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, বাংলাদেশ শুধু সস্তা শ্রমনির্ভর রেডিমেড পোশাক উৎপাদনকারী দেশ নয়, বিভিন্ন সেক্টরে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে ব্যাপক সাফল্য দেখিয়েছে। এ সাফল্যের গল্পগুলো বিদেশে আগ্রহী ব্যক্তিদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে আমরা বিশেষায়িত ত্রৈমাসিক প্রকাশনা ‘বাংলাদেশ রাইজিং’ শুরু করেছি।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদের ২১তম অধিবেশনে আজ টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তর পর্বে এমপি শহীদুজ্জামান সরকারের লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
এ কে আবদুল মোমেন বলেন, বর্তমান সরকার জনকূটনীতি শুরু করেছে। এর অন্যতম উদ্দেশ্য হলো বাংলাদেশকে ‘সম্ভাবনার দেশ, সুযোগের দেশ’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা। এ লক্ষ্যে আমরা নানা কর্মকান্ড গ্রহণ করেছি। বিভিন্ন প্রকাশনা, সংক্ষিপ্ত তথ্যচিত্র প্রস্তুত ও প্রচার এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অধিকতর সরব উপস্থিতির মাধ্যমে বাংলাদেশকে আধুনিক, সুবিধাজনক এবং সম্ভাবনাময় দেশ হিসেবে তুলে ধরার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তিনি বলেন, জনমত তৈরি করতে পারে, এমন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিয়ে সেমিনার ও ওয়ার্কসশপ আয়োজনের জন্য মিশনগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অবৈধ কর্মীদের বৈধ করার কূটনৈতিক তৎপরতা: সরকারি দলের এমপি দিদারুল আলমের লিখিত প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন জানান, যেসব দেশে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশি অবৈধভাবে বসবাস করছেন, দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন কাজে যুক্ত রয়েছেন, সেসব দেশে আমাদের কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত।
তিনি বলেন, করোনাকালীন বৈধ-অবৈধ প্রায় ৫ হাজার বাংলাদেশি কর্মী স্থায়ীভাবে বাহরাইন থেকে বাংলাদেশে ফেরত আসেন। সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আগে বাহরাইনে অবৈধ কর্মীর সংখ্যা ছিল প্রায় ৫৮ হাজার। ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সাধারণ ক্ষমার আওতায় প্রায় ৩৫ হাজার বাংলাদেশি কর্মী বাহরাইনে বৈধ হওয়ার সুযোগ পায়। ২০১৩ সালে সৌদি আরব ও মালয়েশিয়ায় বসবাসরত বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশিকে বৈধ করতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অবদান রেখেছে। কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফলে সৌদি সরকার অবৈধ বাংলাদেশি শ্রমিকদের ইকামা পরিবর্তন করে বৈধ করার প্রক্রিয়ায় ৫ লাখ বাংলাদেশিকে বৈধ করা সম্ভব হয়েছে। তাছাড়া মালয়েশিয়া একবারে প্রায় ২ লাখ ৬৮ হাজার অবৈধ বাংলাদেশি শ্রমিককে বৈধ হওয়ার সুযোগ দিয়েছে। ইউরোপ ও অন্যান্য দেশে যখনই বৈধকরণের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে, কান্ট্রি অব অরিজিন থেকে বাংলাদেশের যে ধরনের কাগজপত্র সংশোধন বা ইস্যু করা এবং সত্যায়ন প্রয়োজন হচ্ছে, আমাদের দূতাবাস তা দিয়ে আসছে। ২০১৮ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই সরকার আমাদের সরকারের ক‚টনৈতিক প্রচেষ্টায় শ্রমিকদের বৈধ করার জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আমাদের দূতাবাস অনিয়মিত শ্রমিকদের জন্য পাসপোর্ট নবায়ন, জন্ম নিবন্ধন সার্টিফিকেট, বিভিন্ন সত্যায়ন প্রভৃতি সেবা দ্রুততম সময়ের মধ্যে দেয়। ফলে নির্দিষ্ট স্বল্প সময়ের মধ্যে ৫০ হাজার শ্রমিককে বৈধ করা সম্ভব হয়।
বিডি প্রতিদিন/এএ