বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেছেন, ক্ষমতার লোভে কেউ যদি ৫ মিনিটের জন্য আওয়ামী লীগ করে থাকে, তবে তার জন্য বিএনপি হারাম। এমনকি শয়তানের সাথে কম্প্রোমাইজ হতে পারে, কিন্তু আওয়ামী লীগের সাথে কোনো কম্প্রোমাইজ হবে না।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে বিএনপির নবায়ন ফরমের শুভ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন টুকু।
ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, ৫ আগস্টের পরিবর্তনের পর বাংলাদেশে এক নতুন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট শুরু হয়েছে। যেই প্রেক্ষাপটে বিএনপি হচ্ছে সবচেয়ে জনগণের নন্দিত দল। যে দল সৃষ্টি করেছিল শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, যাকে আজ পর্যন্ত কেউ কালিমা লিপ্ত করতে পারে নাই আওয়ামী লীগ ছাড়া। যে দলের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া জনগণের পাশ থেকে সরে যায় নাই, কারাবরণ করেছে হাসিনার সাথে বশ্যতা স্বীকার করে নাই। আর তারেক রহমান দূরে থাকলেও দেশের প্রতিটি নেতাকর্মীর সাথে যোগাযোগ রেখেছেন।
তিনি বলেন, আমি বলে আসছি বিএনপি ক্ষমতায় আসে নাই, তবে বিএনপি ক্ষমতায় আসার দল। সুতরাং ভবিষ্যতে ক্ষমতায় যাওয়া দলের মানুষের যে গ্রহণযোগ্যতা প্রয়োজন সেরকম ব্যবহার জনগণের সাথে করতে হবে। জনগণ কিছু চায় না, চায় শুধু শান্তি, চায় ভালো করে কথা বলা এবং সমস্যা শোনা। কিন্তু আপনারা যদি মনে করেন আমরা বড় দল প্রভু হয়ে গেছি, তাহলে জনগণ আপনার কাছে আসবে না, আপনাকে ভালবাসবে না। জনগণকে দিয়ে তোমরা, জনগণকে দিয়ে আমি। জনগণ পাশে থাকলে আপনারা এবং আমরা স্বার্থকতা পাব। যারা বিএনপির সদস্য হবেন, তারা হবেন বিএনপির খাঁটি সোনার কর্মী। যারা দীর্ঘ ১৬ বছর যুদ্ধ করেছে। ৫ মিনিটের জন্য যদি কেউ আওয়ামী লীগ হয়ে থাকে, তাদের জন্য বিএনপি হারাম হয়ে গেছে।
আওয়ামী লীগের উপর প্রতিশোধ নেওয়ার নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, আমাকে অনেকেই ফোন দিয়ে বলে, ভাই পুলিশ আওয়ামী লীগকে ধরে না। আমি বলি থানা ধরে না তুমি কি করো? ১৬ বছরের শিক্ষা আমরাও কিছুটা পাইছি, ১৬ বছরের অপমান-নির্যাতন, লাঞ্চনা সব ভুলে গেছো। এক গালে চর খেয়ে অপর গাল পেতে দিতে হবে-তা নয়, বরং মুসলমান যদি হও এক গালে চর খেলে দুই গালে চর দিতে হবে। অতএব, আপনারা আওয়ামী লীগ ধরে পিটিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দিবেন।
টুকু বলেন, হাসিনা তার হুকুমে ১৬ বছরে আমাদের যত নির্যাতন করছে, আমাদের পরিবার ছাড়া করেছে, গৃহছাড়া করেছে। কিন্তু আল্লাহর বিচার দেখেন, কত কঠোর। এটা মনে রাখতে হবে, ভুলে গেলে চলবে না, অমুক আমার মামাতো ভাই, চাচাতো ভাই। কোনো ক্ষমা নাই।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ হলো অভদ্র ও চামারের দল। একজন ভদ্র পরিবারের গৃহবধূ সাবেক এমপি রুমানা মাহমুদকে বাঁশ দিয়ে পিটিয়েছে, লাঞ্চিত করেছে, হাজার হাজার নেতাকর্মীদের নির্যাতন করেছেন।
তিনি বলেন, ৫ তারিখের পর বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে আওয়ামী লীগের আত্মীয়তা বেড়ে গেছে। তাই মনে রাখবেন শয়তানের সাথে কম্প্রোমাইজ করা যাবে। কিন্তু আওয়ামী লীগের সাথে কোনো কম্প্রোমাইজ করা যাবে না।
কামারখন্দ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মো. বদিউজ্জামান ফেরদৌসের সভাপতিত্বে এবং সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. রেজাতে রাব্বী উথানের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য রুমানা মাহমুদ, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাইদুর রহমান বাচ্চু, স্বেচ্ছাসেবক দল সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল কায়েস, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান ও উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত