এক টয়লেট নির্মান করতে লেগে গেল চারটি বছর! শুনে অনেকে মনে করবেন নিশ্চয়ই শ্বেতপাথরে খোদাই করে হীরা-জহরত বসানো টয়লেটই হবে। বিষয়টা তা নয়। বিয়ের পর থেকেই পার্বতী দেবী তার স্বামীসহ শ্বশুর বাড়ির অন্য সদস্যদের বলে আসছিলেন বাড়ির ভেতরে টয়লেট নির্মাণে। অবশেষে চার বছর পর তার সেই স্বপ্ন পূরণ হয়। বাড়িতে নির্মিত হয় টয়লেট।
শুনতে অবাক লাগলেও ভারতের বিহার ও উত্তরপ্রদেশের গ্রামগুলোতে এটাই বাস্তবতা। দারিদ্র্যপীড়িত গ্রামগুলোতে নেই কোনো টয়লেটের ব্যবস্থা। পাশের ঝোপ-ঝাড় অথবা বনে প্রাকৃতিক প্রয়োজন সারতে হয়। পুরুষরা দিনে প্রয়োজন সারলেও নারীদের যেতে হয় রাতে। এই সুযোগে লম্পটরা অনেক নারীকে ধর্ষণ করে থাকে। অনেকের ভাগ্যে জোটে ধর্ষণের পর মৃত্যু।
বিহারের রাজধানী পাটনা থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এমনই একটি গ্রামে বাস করেন পার্বতী। বিয়ের পর থেকেই তিনি কখনও বাইরে প্রাকৃতিক প্রয়োজন সারতে যাননি। সঙ্গে সঙ্গে পরিবারের সকলকে চাপ দিয়েছেন টয়লেট নির্মাণে।
দীর্ঘদিন পর নিজ প্রচেষ্টা সফলের পর পার্বতী বলেন, ‘আমি আমার স্বামী ও শ্বশুরকে বুঝাতে সক্ষম হয়েছি। আশা করি অন্য নারীরা আমাকে দেখে উৎসাহী হবেন।’
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের বাদাউন জেলায় দুই জ্ঞাতি বোন রাতে প্রাকৃতিক প্রয়োজনে বাইরে বের হলে তাদের তুলে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। তাদের ধর্ষণ করে হত্যার পর মৃতদেহ গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে।
ভারতের সর্বশেষ শুমারি অনুযায়ী, ঝাড়খণ্ডের ৯২ শতাংশ গ্রামীণ বাড়িতে টয়লেট নেই। বিহারে এ হার ৮২ শতাংশ ও উত্তরপ্রদেশে ৭৮ শতাংশ। এ রাজ্যগুলোর গ্রামীণ সমাজের বাড়িগুলোতে টয়লেট না থাকায় বেশিরভাগ যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটে থাকে। সূত্র: এনডিটিভি।