বিশ্বজুড়ে চলছে ভ্যালেন্টাইন সপ্তাহ। ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারি। এরমধ্যে ১০ ফেব্রুয়ারি দিনটিকে বেছে নেওয়া হয়েছে ‘টেডি ডে’ হিসেবে। প্রিয়জনের মন ভোলাতে এই সফ্ট টয়ের জুড়ি মেলা ভার। কিন্তু এই টেডি বিয়ারের ইতিহাস জানেন?
এই ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে আছে আমেরিকার ২৬তম প্রেসিডেন্ট থিওডোর রুজভেল্টের নাম। যিনি ‘টেডি’ নামেই বেশি পরিচিত ছিলেন। মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সফ্ট টয়েজ বা ভল্লুকের কী সম্পর্ক?
ঘটনার সূত্রপাত ১৯০২ সালের নভেম্বর মাসে, যখন মিসিসিপির জঙ্গলে ভল্লুক শিকার করতে বেরিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট থিওডোর রুজভেল্ট। সারাদিন কেটে গেলেও তিনি সে দিন ভাল শিকার পাননি। ততক্ষণে অন্য শিকারিরা সকলেই অন্তত একটি করে ভল্লুক শিকার করে ফেলেছিলেন।
এই অবস্থায় দিনের প্রায় শেষে প্রেসিডেন্টকে খুশি করতে তাঁর সঙ্গীরা ধরে আনেন এক কালো রঙের ছোট্ট ভল্লুক ছানাকে। তাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে প্রেসিডেন্টকে বলা হল, গুলি করতে। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ভল্লুকটিকে গুলি করতে অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, এটা অত্যন্ত অমানবিক একটা কাজ। এই কাজ তিনি করতে পারবেন না। ভল্লুকটিকে দেখে তাঁর মায়াই লাগছে বরং।
সেই সময়ে শিকার নিয়ে গোটা বিশ্বে কোন কড়া আইন ছিল না। সামাজিক ভাবেও শিকার ছিল এক বীরত্ব প্রদর্শনেরই খেলা। প্রেসিডেন্ট থিওডোর রুজভেল্টের এই মানবিক দৃষ্টিভঙ্গী গোটা সমাজকে নাড়া দেয়। পরদিনই সেই সময়ের সংবাদমাধ্যমগুলোতে উঠে আসে এই মানবিকতার কাহিনি।
‘ড্রইং দ্য লাইন ইন মিসিসিপি’ নামের একটি কার্টুনে এই গল্প তুলে ধরেন ওয়াশিংটনের তারকা কার্টুনিস্ট বেরিম্যান। সেই কার্টুন দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে আমেরিকার খেলনা কোম্পানি ‘আইডিয়াল নভেলটি অ্যান্ড টয় কোম্পানি’'র মালিক মরিস মিকটম এবং তার স্ত্রী প্রথম তৈরি করেন খেলনা ভল্লুক। আর তার নাম দেওয়া হয় টেডি’স বিয়ার, অর্থাৎ টেডির বিয়ার। পরে যা টেডি বিয়ার নামেই পরিচিতি লাভ করে।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অনেক বদল হয়েছে টেডি বিয়ারের, বদল হয়েছে আকারে এবং রঙে। তবুও একশ' বছরের বেশি সময় ধরে মানুষের মনে নিজের জায়গা ধরে রেখেছে টেডি বিয়ার।
বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ