আরজিকরকাণ্ডে চিকিৎসক ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় বিচার চেয়ে বিনোদন জগতের তারকারা যখন রাজপথে, সেই সময় ক্রিকেটার সৌরভপত্নী ডোনা গঙ্গোপাধ্যায় মুখ ফসকে বলেছিলেন— ‘রেপটেপ তো সব জায়গাতেই হয়…’! ব্যস! এরপর আর পায় কে— সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয় নেটিজেনদের মাঝে সমালোচনা।
এভাবে অবিবেচকের মতো রাখা তার মন্তব্য ঘিরে একপ্রকার উত্তাল হয়ে ওঠে সোশ্যাল মিডিয়ার একটি অংশ। যদিও তিনি পরে নিজের বক্তব্যে সপক্ষে নানা যুক্তি দিয়েছেন। তবে তাতে মন গলেনি কারোরই।
আর এসবের মাঝেই গতকাল শনিবার রাতে দেখা গেল ডোনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে আসছে আজব সব পোস্ট। কেউ বা কারা হ্যাক করে নেয় ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়ের ফেসবুক প্রোফাইল। এরপর সেখান থেকে সব আজব পোস্ট আসতে থাকে। এমনকি সৌরভপত্নীর আত্মার শান্তিও কামনা করা হয়।নেটিজেনদের একজন লিখেছেন— ‘পবিত্র আত্মার শান্তি কামনা করি ডোনা’, আবার আরেকজন লিখেছেন—‘শান্তিতে ঘুমাও বোন ডোনা’। একটি পোস্টে লেখা কোনো এক দুর্ঘটনায় নাকি ‘প্রাণ হারিয়েছেন’ এই নৃত্যশিল্পী। তবে এই সবকটি পোস্টই ছিল বিজাতীয় ভাষায়। হিন্দি বা ইংরাজি নয়। এরপর জানা গেল— হ্যাক হয়ে গেছে ডোনার ফেসবুক প্রোফাইল।
শুধু এখানে পোস্টের শেষ নয়, রাতের দিকে অর্ধনগ্ন নারীর ছবিও পোস্ট করা হতে থাকে ডোনার ফেসবুক প্রোফাইলে। এমনকি পরিচিত বেশ কয়েকজনের পর্নোগ্রাফিও পাঠানো হয়েছে বলেও জানা গেছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সাইবার বিভাগের এডিজি ও আইজিপি হরিকিশোর কুসুমাকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের আপ্ত সহায়ক তানিয়া ভট্টাচার্য। তবে খানিক সময়ের মধ্যে সেটি পুনরুদ্ধার করে নেওয়া গেছে হ্যাকারদের থেকে বলেই মনে করা হচ্ছে।
কারণ, ইতোমধ্যে সব বিতর্কিত পোস্ট মুছে ফেলা হয়েছে। বলে রাখা ভালো— কয়েকদিন আগেও হ্যাকড হয়েছিল সৌরভপত্নীর প্রোফাইল।
বর্ধমানের সংস্কৃতি লোকমঞ্চে বিধায়ক খোকন দাসের উদ্যোগে নৃত্য উৎসবের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে ডোনা বলেছিলেন— ‘রেপটেপ সব জায়গায়তেই হয়; কিন্তু বাংলার মতো এত প্রতিবাদ কোথায় হচ্ছে? বাংলার সব মানুষেরা যেভাবে একত্রিত হয়ে প্রতিবাদ করছে, এটি একটি বিরাট ব্যাপার।’ তবে এরপর বিতর্ক উঠলে চারদিকে ডোনা প্রতিবাদ করেন।
সেই সময় নিজের ফেসবুক স্টোরিতে তিনি লেখেন— ‘আমি ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়, প্রথমত একজন নারী, তারপর এক কন্যাসন্তানের মা। আমি পাগল নই যে রেপকে সমর্থন করব। বরং আমি নিজের মতো করে প্রতিবাদ জানিয়েছি। আমি বলেছি— আমি নাচের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পেরে খুশি। যদি নারী সাংবাদিকরা আমার কথার ভুল অর্থ বের করেন, তাহলে আমরা কী করে একটা আদর্শ সমাজ গড়ব, যেখানে নারীরা মাথা উঁচু করে বাঁচবে— খুব দুঃখের!!’
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ