মাউন্ট ফুজি, জাপানের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ। বরফ ছাড়াই শৃঙ্কটি মাস শেষ করতে চলেছে। ১৩০ বছরের ইতিহাসে প্রথমবার এমন পরিস্থিতি দেখা গেল।
খবর অনুসারে, সাধারণত অক্টোবরের শুরুতেই বরফ জমতে শুরু করে। কিন্তু এবার অক্টোবরের শেষেও বরফ পড়েনি। গত বছর ৫ অক্টোবর বরফপাত শুরু হলেও, এবার উষ্ণ আবহাওয়ার কারণে এ দৃশ্য দেখা যায়নি বলে এএফপি জানিয়েছে।
জাপানে এই বছর গ্রীষ্ম ছিল ইতিহাসের উষ্ণতম, যেখানে জুন থেকে আগস্টের গড় তাপমাত্রা ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে ১.৭৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। বিবিসির তথ্যমতে, সাবট্রপিকাল জেট স্ট্রিমের পরিবর্তিত অবস্থানের কারণে দক্ষিণের উষ্ণ বাতাস জাপানের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় সেপ্টেম্বরও ছিল অপেক্ষাকৃত উষ্ণ। প্রায় ১,৫০০ অঞ্চলে গ্রীষ্মকালীন উচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড করা হয়, যেখানে তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যায়। অক্টোবর কিছুটা শীতল হলেও, তাপমাত্রা এখনো গড়ের চেয়ে বেশি, ফলে নভেম্বরের প্রান্তে দাঁড়িয়ে বরফহীন মাউন্ট ফুজি নতুন রেকর্ড গড়েছে।
কোফু লোকাল মেটিওরোলজিক্যাল অফিসের ইউতাকা কাতসুতার মতে, আগের সর্বশেষ বরফপাতের রেকর্ডটি ছিল ২৬ অক্টোবর, যা ১৯৫৫ এবং ২০১৬ সালে দেখা গিয়েছিল। যদিও একক ঘটনায় জলবায়ু পরিবর্তন সরাসরি প্রমাণিত হয় না, তবে মাউন্ট ফুজির বরফবিহীনতা বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রতিক্রিয়া হতে পারে।
টোকিওর দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত ৩,৭৭৬ মিটার (১২,৩৮৮ ফুট) উচ্চতার এই শৃঙ্গ প্রাচীন জাপানি চিত্রকলায় বিশেষভাবে স্থান পেয়েছে এবং তার সামঞ্জস্যপূর্ণ আকৃতির জন্য প্রসিদ্ধ। গ্রীষ্মকালে, জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রায় ২,২০,০০০ পর্যটক ফুজি পর্বতে চড়েন। তবে এ বছর অতিরিক্ত পর্যটনের চাপ সামলাতে সরকার কর্তৃক প্রবেশ ফি ও দৈনিক সীমাবদ্ধতা আরোপ করায়, পর্যটক সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কমে গেছে।
মাউন্ট ফুজির বরফশূন্য চূড়া কেবল আবহাওয়ার বৈচিত্র্য নয়, বরং জলবায়ু পরিবর্তনের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবেরই একটি আলামত বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সূত্র : এনডিটিভি
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল