ভারতের ডন দাউদ ইব্রাহিমের নাম শুনলে যেখানে সকলে ভয়ে কাঁপেন। তবে সাহস দেখিয়েছেন এক প্রৌঢ়। তিনি দাউদের সম্পত্তি কেনার জন্য লড়াই চালিয়ে গেছেন। ২৩ বছর লড়াই চালিয়ে অবশেষে সেই সম্পত্তি নিজের নামে নিয়েছেন তিনি।
মুম্বাইয়ের নাগপাড়া এলাকায় ‘আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন’ দাউদ ইব্রাহিমের একটি দোকান রয়েছে। দাউদের ওই দোকানটি বাজেয়াপ্ত করে আয়কর দফতর। ২০০১ সালে সেটি নিলামে তোলা হয়। দাম ওঠে ২ লক্ষ রুপি। সেই টাকা দিয়ে দোকানটি কিনে নেন হেমন্ত জৈন নামে এক ব্যক্তি। তার বয়স তখন ৩৪। কেউ যখন দাউদের এই সম্পত্তির দিকে হাত বাড়াতে সাহস করেননি, তা কেনার সাহস দেখিয়েছিলেন হেমন্ত। তার কথায়, ‘‘সংবাদপত্রে নিলামের খবরটা দেখেছিলাম। দাউদের দোকান কেনার জন্য কোনও গ্রাহক পাওয়া যাচ্ছিল না। তখন সেটিকে কেনার সিদ্ধান্ত নিই।’’
কিন্তু দাউদের সম্পত্তি কিনেও স্বস্তি পাননি হেমন্ত। দাউদের সম্পত্তি কেনার পর তাকে নিয়ে যখন চার দিকে চর্চা চলছে, বেশ গর্বিত বোধ করছিলেন হেমন্ত। আনন্দও হচ্ছিল তার। কিন্তু সেই আনন্দ যে ক্ষণস্থায়ী হবে ভাবতে পারেননি। হেমন্তের বলেন, ‘‘দোকানটি কেনার পর আমাকে প্রশাসনের পক্ষে জানানো হয়, দোকানটি তিনি নিতে পারবেন না। দোকানের মালিকানা হস্তান্তর করা যাবে না। এই সম্পত্তির মালিকানা হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।’’ কিন্তু সে রকম কোনও নিষেধাজ্ঞা ছিল না বলে দাবি করেছেন হেমন্ত। আয়কর দফতর হঠাৎ তাকে জানায় দোকানের আসল নথি হারিয়ে গিয়েছে। আরও বিপাকে পড়েন হেমন্ত। প্রধানমন্ত্রীর দফতরে বার বার চিঠি লিখেও কোনও উত্তর পাননি বলে দাবি হেমন্তের।
শুরু হয় আইনি লড়াই। টানা ২৩ বছর ধরে এই সম্পত্তি পেতে লড়াই চালিয়ে যান হেমন্ত। তাকে বলা হয়, দোকান পেতে হলে বর্তমান বাজারদর হিসাবে ২৩ লক্ষ টাকা দিতে হবে। কিন্তু হেমন্ত সাফ জানিয়ে দেন, নিলামে কিনেছেন এই দেকান। বর্তমান বাজারদর হিসাবে টাকা দেওয়ার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। হার মানেননি হেমন্ত। অবশেষে আইনের সাহায্যেই দোকানের হস্তান্তর হয়।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল